Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Xi Jinping

‘এই হয়তো শেষ লেখা’, আক্ষেপ শি-বিরোধীর

এ মাসেই প্রকাশিত হয়েছিল শুয়ের নিবন্ধ: ‘ভাইরাল অ্যালার্ম: হোয়েন ফিউরি ওভারকামস ফিয়ার।’ নিবন্ধে শু খোলাখুলি আক্রমণ করেছিলেন সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও কণ্ঠরোধের বিরুদ্ধে।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

সংবাদ সংস্থা
বেজিং, শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:২৫
Share: Save:

করোনাভাইরাস সঙ্কট নিয়ে প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের ভূমিকার সমালোচনা করে একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন চিনা অধ্যাপক শু ঝানগ্রান। সেটি ছাপাও হয়েছিল। তার পর থেকেই গৃহবন্দি তিনি। চিনা সোশ্যাল মিডিয়া থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বস্তুত শুয়ের বন্ধুরা জানাচ্ছেন, এখন ইন্টারনেট পরিষেবাও পাচ্ছেন না অধ্যাপক।

এ মাসেই প্রকাশিত হয়েছিল শুয়ের নিবন্ধ: ‘ভাইরাল অ্যালার্ম: হোয়েন ফিউরি ওভারকামস ফিয়ার।’ নিবন্ধে শু খোলাখুলি আক্রমণ করেছিলেন সরকারি নিয়ন্ত্রণ ও কণ্ঠরোধের বিরুদ্ধে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি মারা যান হুইসলব্লোয়ার চিকিৎসক লি ওয়েনলিয়াং। তিনিই প্রথম সহকর্মীদের ভাইরাস িনয়ে সতর্ক করতে চেয়েছিলেন। নিরাপত্তা বিভাগ তাঁর পদক্ষেপ নিয়ন্ত্রণ করে বলে অভিযোগ। শাস্তিও পেতে হয় তাঁকে। তার পর থেকেই সরকারি নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে জনমত জোরালো হয়েছে।

দেশের বাইরে টোকিয়ো বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ইতিহাসবিদ হং ঝেনকুয়াই বলেছেন, ‘‘পার্টির শাসন এবং নিয়ন্ত্রণের নেতিবাচক দিকগুলি স্পষ্ট করে দিয়েছে লিয়ের মৃত্যু। মানুষের মনে এর সাংঘাতিক প্রভাব পড়েছে।’’ তবুও দেশের বিশিষ্ট জন এবং আন্দোলনকারীদের একাংশের দাবি, এই সঙ্কটে সরকারের বিরুদ্ধে আপত্তি উঠলেও ভাবার কোনও কারণ নেই যে চিনা কমিউনিস্ট পার্টিতে মূলগত কোনও পরিবর্তন ঘটবে।’’

অধ্যাপক শু যখন নিবন্ধটি লিখেছিলেন, তিনিও জানিয়েছিলেন, শাস্তি পাওয়ার জন্য মনে মনে প্রস্তুত তিনি। ইতিমধ্যেই তাঁকে শিক্ষকতা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক বছর আগেও কিছু সমালোচনা লেখায় করায় তাঁর স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয় বলে দাবি। সাম্প্রতিক নিবন্ধের শেষে শু লিখেছিলেন, ‘‘সহজেই বুঝতে পারছি যে ফের শাস্তি পেতে হবে। হয়তো বা এটাই শেষ লেখা!’’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শুয়ের এক বন্ধু রবিবার জানান, চিনা নববর্ষের ছুটি কাটিয়ে বেজিংয়ে ফিরে আসার পরেই পুলিশ শু-কে গৃহবন্দি করেছে। বন্ধুর কথায়, ‘‘ওরা বলেছে, বাইরে থেকে এসেছে বলে শু-কে কোয়ারেন্টাইন করে রাখা হচ্ছে।’’ প্রথম দিকে শুয়ের বাড়ির বাইরে দু’জন রক্ষীকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল। গত সপ্তাহের শেষে কড়াকড়ি কমানো হলেও শুয়ের ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। উইচ্যাট, ওয়েইবো ইত্যাদি চিনা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে এই অধ্যাপককে। আর এক বন্ধু কোনও মতে এসএমএসে যোগাযোগ করতে পেরেছেন শুয়ের সঙ্গে। তিনিও নাম জানাতে ভয় পাচ্ছেন। বলেছেন, ‘‘ও এখনও নজরদারিতে আছে বলেই আমার আশঙ্কা। আমার প্রশ্নের সরাসরি উত্তরও দেয়নি। শুধু বুঝিয়েছে, উদ্বেগের কিছু নেই।’’

ইতিহাসবিদ হং ঝেনকুয়াইয়ের কথায়, ‘‘বাকস্বাধীনতার কোনও জায়গা নেই চিনে। ব্যক্তিকে নিয়ন্ত্রণের নানা উপায় রয়েছে। কখনও বেঁচে থাকাটাও অসম্ভব করে দেওয়া হবে, শিক্ষাবিদেরা চাকরি খোয়াবেন, লেখকেরা লিখতে পারবেন না, কেউ আপনাকে চাকরি দেওয়ার সাহসও দেখাবে না। সমাজের মূলস্রোত থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে আপনাকে। বন্ধু থাকবে না। ব্যক্তিস্বাধীনতা তো ভুলেই যান। এই জন্যই চিন ছেড়ে চলে গিয়েছেন অনেক বিশিষ্ট জন।’’ শি চিনফিংয়ের আমল থেকে সেই প্রবণতা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Xi Jinping Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy