বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, যুদ্ধ বন্ধ হোক। ছবি: সংগৃহীত।
কারও হাতে ইজ়রায়েলের পতাকা, কারও পরনে সাদার উপরে নীল তারা। স্লোগানে স্লোগানে গর্জে উঠল তেল আভিভের রাস্তা। পথে নামল কমপক্ষে দেড় লক্ষ মানুষ। অনেকেরই দাবি, এত বড় মিছিল, এর আগে হয়নি। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, যুদ্ধ বন্ধ হোক। গাজ়ায় হামাসের ডেরা থেকে ইজ়রায়েলি বন্দিদের উদ্ধার করা হোক। নতুন করে নির্বাচন হোক দেশে, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার তাঁরা চান না।
গোটা পৃথিবীতেই প্রায় কোণঠাসা ইজ়রায়েল। আমেরিকা-ইউরোপের সর্বত্র লাগাতার ইজ়রায়েল-বিরোধী মিছিল চলছে। প্যালেস্টাইনের মুক্তির দাবিতে গর্জে উঠছেন বিক্ষোভকারীরা। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু অবশ্য নিজের অবস্থানে অনড়। তিনি জানিয়েছেন, প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাসকে নিশ্চিহ্ন না-করা-পর্যন্ত গাজ়ার যুদ্ধ চলবে।
ঘরেও শান্তিতে নেই নেতানিয়াহু। প্রতি সপ্তাহান্তে রাজধানীর রাস্তায় মিছিল নামছে। দেশবাসীর একাংশ যুদ্ধ থামাতে চান, নতুন করে নির্বাচন চান। ভোট হলে যে তাঁর হারের সম্ভাবনাই বেশি, সে কথা জানেন নেতানিয়াহু। তার পরে তাঁকে যুদ্ধাপরাধের জন্য কাঠগড়ায় উঠতে হবে, তা-ও জানা। উল্টো দিকে, চাপের মুখে যুদ্ধ বন্ধ করলে, নেতানিয়াহুকে কট্টরপন্থী দলগুলোর সমর্থন হারাতে হবে। সে ক্ষেত্রেও তাঁর সরকার ভেঙে পড়বে।
এ দিন তেল আভিভের মিছিলে দেখা যায় বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড। কোনওটায় লেখা ‘ক্রাইম মিনিস্টার’, কোনওটায় লেখা ‘যুদ্ধ বন্ধ করো’। ৬৬ বছর বয়সি শাই এরেল যোগ দিয়েছিলেন বিক্ষোভে। বললেন, ‘‘আমার নাতি-নাতনির ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি চিন্তায়। এই ভয়ানক সরকারের হাত থেকে মুক্তি না পেলে ওদের কোনও ভবিষ্যৎ নেই। কেনেসেট (ইজ়রায়েলের আইনসভা) ইঁদুরে ভরে গিয়েছে... ওদের কাউকে কিন্ডারগার্টেনের নিরাপত্তার দায়িত্বও দেওয়া যায় না।’
ইজ়রায়েলের সরকার-বিরোধী সংগঠন হফশি জানিয়েছে, তাদের অনুমান এ দিনের বিক্ষোভ মিছিলে দেড় লক্ষ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। গাজ়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে এত বড় মিছিল হয়নি। তেল আভিভের ডেমোক্রেসি স্কোয়ারে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের অনেকে গায়ে লাল রঙ ঢেলে রাস্তায় শুয়ে রয়েছেন। দেশে নেতানিয়াহুর শাসনকালে ‘গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটেছে’, এমনটাই বোঝাতে চেয়েছেন তাঁরা। বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ইজ়রায়েলের নিরাপত্তা সংস্থা শিন বেট-এর প্রাক্তন প্রধান ইউভাল ডিসকিন। তিনি বলেন, ‘‘নেতানিয়াহু এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে জঘন্য প্রধানমন্ত্রী।’’
সাধারণ মানুষ বর্তমান দক্ষিণপন্থী জোট সরকারেই হতাশ। তাঁরা দেশের নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতমার বেন গাভির-সহ অন্যান্য অতিকট্টরপন্থী নেতাদের উপরে ক্ষুব্ধ। তাঁদের অভিযোগ, এরাই গাজ়ার যুদ্ধ টেনে বাড়িয়ে চলেছে, হামাসের ডেরায় বন্দি থাকা ইজ়রায়েলিদের কথা ভাবছে না, দেশের নিরাপত্তা নিয়ে ভাবছে না। ইয়োরাম নাম ৫০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি (পুরো নাম জানাতে চাননি) জানিয়েছেন, তিনি প্রতি সপ্তাহে বিক্ষোভ-মিছিলে যোগ দিচ্ছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি সত্যিই প্রার্থনা করছি, এই সরকার পড়ে যাক। যদি ২০২৬ সালের নির্বাচনের জন্য আমরা অপেক্ষা করি, তা হলে এটুকু বলতে পারি, সে সময়ে গণতন্ত্র মেনে স্বচ্ছ ভোট হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy