Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Mahsa Amini

বাহিনীর গুলি উপেক্ষা করেই উত্তাল ইরান

বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলি আজ দাবি করেছে, গত কাল থেকেই রাজধানী তেহরান, কেরমান, মাহাবাদ, কেরমানশাহের মতো শহরে প্রতিবাদীরা ফের রাস্তায় নেমেছেন।

মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ। শনিবার লন্ডনের রাস্তায়। রয়টার্স

মাহশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদ। শনিবার লন্ডনের রাস্তায়। রয়টার্স

সংবাদ সংস্থা
তেহরান শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২২ ০৭:৪১
Share: Save:

সরকার-বিরোধী প্রতিবাদে ফের উত্তপ্ত ইরান। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে এখনও পর্যন্ত শতাধিক বিক্ষোভকারী প্রাণ হারালেও প্রতিবাদের আগুন নেভার নাম নিচ্ছে না। গত কয়েক দিন বিক্ষোভের আঁচ সামান্য কম থাকলেও গত কাল থেকে দেশের নানা প্রান্তে ফের প্রতিবাদে নেমেছে তরুণ প্রজন্ম। পুলিশি হেফাজতে কুর্দিশ তরুণী মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই দেশের মহিলারা কার্যত প্রাণ হাতে নিয়ে রাস্তায় নেমেছিলেন। মাহশার মৃত্যু দিয়ে যে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু হয়েছিল, সেই প্রতিবাদই এখন দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের মৃত্যু পর্যন্ত চাইছে।

‘ডেথ টু দ্য ডিক্টেটর’— এ ভাবেই খামেনেইয়ের প্রাণদণ্ডের দাবিতে স্লোগান উঠেছে ইরান জুড়ে। কয়েক মাস আগেও যা কার্যত কল্পনার বাইরে ছিল ইরানের মতো কট্টরপন্থী ও অতিরক্ষণশীল মুসলিম-প্রধান দেশে। পুলিশি অত্যাচারে বাইশের তরুণী মাহশার মৃত্যুতে ক্ষোভে ফুঁসছে দেশের তরুণ প্রজন্ম, বিশেষত নারীরা। দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্বিচার গুলিও তাঁদের থামাতে পারছে না।

বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলি আজ দাবি করেছে, গত কাল থেকেই রাজধানী তেহরান, কেরমান, মাহাবাদ, কেরমানশাহের মতো শহরে প্রতিবাদীরা ফের রাস্তায় নেমেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেই সব বিক্ষোভের বহু ছবি ও ভিডয়ো এখন ভাইরাল। সেই সব ভিডিয়োর একটিতে দেখা গিয়েছে, কুর্দিস্তান ইউনিভার্সিটি অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর ছাত্রাবাসের ডর্মেটরিতে ঢুকে গুলি চালাচ্ছে ইরানের সেনা। ওই ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা স্পষ্ট নয়। তেহরানের কাছে চিতগারে গত কাল রাত থেকে শয়ে শয়ে মহিলারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ছাত্রাবাসে গুলি চালানোর ঘটনার প্রতিবাদে আজ আরও জোরদার আন্দোলন শুরু হয়েছে কেরমান, তেহরানে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি, গত বৃহস্পতিবার চার প্রদেশে অন্তত আট জন বিক্ষোভকারীকে গুলি করে মেরেছে নিরাপত্তা বাহিনী। অন্য একটি মানবাধিকার সংগঠন জানাচ্ছে, গত দেড় মাসে ১৬০ জনেরও বেশি তরুণ-তরুণী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রাণ দিয়েছেন। নিহতদের একটা বড় অংশ শিশু। এঁদের মধ্যে বেশির ভাগেরই গুলি লেগেছিল ঘাড়ে, গলায় বা মাথায়। মানবাধিকার সংগঠনগুলির দাবি, খুন করার জন্যই বিক্ষোভকারীদের পায়ে গুলি না চালিয়ে শরীরের উপরের অংশে গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। সরকারের অবশ্য দাবি, গত কয়েক সপ্তাহে বিক্ষোভ সামলাতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছেন নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত ২০ জন সদস্য।

অবশ্য প্রতিষ্ঠানের বিরোধিতা করে এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুধু ইরানেই আর সীমাবদ্ধ নেই। আজই লন্ডনের রাস্তায় মাহশার মৃত্যুর প্রতিবাদে শামিল হতে দেখা গিয়েছে অসংখ্য মানুষকে।

গোটা ঘটনার পিছনে আমেরিকান গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র দিকে আঙুল তুলেছে ইব্রাহিম রাইসি সরকার। তাদের দাবি, সরকার ফেলার জন্য দেশ জুড়ে চলা এই সব বিক্ষোভে মদত দিচ্ছে আমেরিকান প্রশাসন। ইরানের গোয়েন্দা দফতরের তরফে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে সরাসরি সিআইএ-র নাম করে জানানো হয়েছে, ব্রিটেন, সৌদি আরব ও ইজ়রায়েলে আমেরিকান গুপ্তচরেরা এখন অতি সক্রিয় হয়ে ইরানের তরুণ প্রজন্মকে ইন্ধন জোগাচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Mahsa Amini Iran
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy