আবদুল গাফফার চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
প্রয়াত হলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল গাফফার চৌধুরী। বৃহস্পতিবার লন্ডনের বার্নেট হাসপাতালে ভারতীয় সময় সকাল ৬টার পর শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন ৮৭ বছরের গাফফার। চিকিৎসাধীন ছিলেন বার্নেট হাসপাতালেই।
গাফফারের পরিচয় অবশ্য শুধুমাত্র সাংবাদিকতার জগতেই নয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও অবদান রয়েছে তাঁর। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পত্রিকা ‘সাপ্তাহিক জয় বাংলা’র প্রথম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন তিনি। পাশাপাশি, ভাষা আন্দোলনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে তাঁর। ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি’ গানটি লিখেছিলেন গাফফার। বাঙালির কাছে একুশে ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রভাতফেরির ‘সিগনেচার টিউন’ হয়ে রয়েছে ওই গানটি।
১৯৩৪ সালের ১২ ডিসেম্বর বরিশালের উলানিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন গাফফার। ১৯৫৮ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ পাশ করেন। ওই বছরই সাংবাদিকতায় যোগ দেন। এর পর কর্মজীবনে একের পর এক মাইলস্টোন ছুঁয়েছেন গাফফার। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রকাশ করেন ‘দৈনিক জনপদ’ নামে পত্রিকা। তবে ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ছেড়ে তিনি পাড়ি জমান ব্রিটেনে।
দেশে না থাকলেও গাফফারের সঙ্গে বাংলাদেশের আত্মিক যোগ ছিল। লন্ডনে থাকলেও দেশের বহু পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করতেন। স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, অ্যাকাডেমি পদক, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার-সহ একাধিক সম্মাননা রয়েছে গাফফারের ঝুলিতে।
প্রয়াত গাফফারের চার কন্যাসন্তান এবং এক পুত্রসন্তান। ঘটনাচক্রে, গত ১৪ এপ্রিল প্রয়াত হন গাফফারের ছোট মেয়ে বিনীতা। ক্যান্সারে ভুগছিলেন তিনি। সেই সময় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন গাফফারও। ছোট মেয়ের মৃত্যুসংবাদ শুনে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। সেই শোক আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি। গাফফারের মৃত্যুতে শোকের আবহ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ জুড়ে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy