প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বে হিন্দু জনসংখ্যার দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ইন্দোনেশিয়া। সে দেশের বালি দ্বীপে অনাবাসী ভারতীয়দের সভায় আজ এক দিকে অযোধ্যার রাম মন্দির এবং অন্য দিকে সে দেশের রামায়ণ চর্চাকে সংযুক্ত করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্য দিকে, গুজরাত ভোটের এক পক্ষকাল আগে সে রাজ্যের বোহরা মুসলমান সম্প্রদায়ের প্রতি ইতিবাচক বার্তা দিতেও দেখা গেল তাঁকে।
ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়রা যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সেতু হয়ে উঠতে পারেন সে কথা উল্লেখ করে মোদী তাঁর দীর্ঘ বক্তৃতার শেষ পর্যায়ে এসে বলেন, “আমি দেখছি এখানে বোহরা সমাজের অনেক প্রতিনিধি রয়েছেন। আমার সৌভাগ্য যে এই সমাজের সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুব ঘনিষ্ঠ। অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, বিশ্বের যে কোন প্রান্তে যাই, আর কারও সঙ্গে দেখা হোক বা না হোক, বোহরা পরিবারের সঙ্গে অবশ্যই দেখা হয়।”
রাজনৈতিক শিবির বলছে, এই সপ্রশংস উল্লেখ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ঐতিহ্যগত ভাবে সাদা কুর্তা পাজামার সঙ্গে সাদা-সোনালি ফেজ টুপি ব্যবহার করেন বোহরারা। শিয়া সম্প্রদায়ের একটি উপগোষ্ঠী এই বোহরাদের সঙ্গে গত কয়েক বছরে বারবার নরেন্দ্র মোদীর ছবি দেখা গিয়েছে। রাজনৈতিক শিবিরের মতে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কাছে পৌঁছনোর বিশেষ চেষ্টা এত দিন করত না মোদী সরকার। কিন্তু ইদানিং তিন তালাক আইন পাশ করানোর মতো পদক্ষেপ ছাড়াও হায়দরাবাদে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকে মোদী দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন মুসলিমদের কাছে পৌঁছনোর জন্য। উজালা যোজনা, শৌচাগার নির্মাণের মতো সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল যাতে সংখ্যালঘুরাও পান সে দিকে নজর দিতে তিনি নির্দেশ দেন।
এর দু’টো কারণ আছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকেরা। প্রথমত, অবশ্যই পশ্চিম-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহিষ্ণুতার একটি মুখ তুলে ধরার চেষ্টা। দ্বিতীয়ত মুসলিমদের একটি ছোট অংশের ভোট নিজেদের ঘরে টেনে আনতে পারলে ভোটের লড়াইয়ে লাভ হবে বিজেপির। চলতি বছরেই উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনে দেখা গিয়েছে মুসলিম অধ্যুষিত আসনগুলিতেও বিজেপি জিতেছে। চুলচেরা হিসেবে দেখা যাচ্ছে সেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্দিষ্ট ভোটের বাইরেও মুসলিম ভোট পেয়েছে বিজেপি। আর তার ফলে অল্প ব্যবধানে জিতে গিয়েছেন বিজেপি প্রার্থী। এই বোহরা সম্প্রদায় বাণিজ্যের জন্য পরিচিত, নরমপন্থী এবং তাঁদের মধ্যে অনাবাসী এবং প্রবাসীরসংখ্যা বিপুল।
বোহরা মুসলমানদের প্রশংসার পাশপাশি আজ হিন্দুত্বের বার্তা বারবার শোনা গিয়েছে মোদীর বক্তৃতায়। কখনও তিনি বলেছেন, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত শুনে সব ইন্দোনেশিয়াবাসী খুশিতে আপ্লুত হয়েছেন। কখনও সে দেশের রামায়ণ চর্চার প্রশংসা করেছেন। পাশাপাশি ওড়িশার বালি যাত্রার উল্লেখ করে প্রাচীন ঐতিহ্যের সংযোগ স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের কাছে তাঁর দাবি, ২০১৪-এ তিনি ক্ষমতাসীন হওয়ার পরের ভারত এবং তার আগের ভারতের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাৎ। এখনকার ভারত ‘গতি’ এবং ‘বড়ত্বে’ বিশ্বাসী। ‘বড়ত্বে’র উদাহরণ দিতে গিয়ে নরেন্দ্র মোদী বল্লভভাই পটেলের মূর্তি এবং দেশের বিভিন্ন স্টেডিয়ামের উল্লেখ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy