ব্রাসেলসের রাস্তায় তখন টিকা-বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে ইউরোপীয় কমিশনের দফতরের বাইরে পুলিশি পাহারা। রয়টার্স
ফের কোভিডের ভরকেন্দ্র ইউরোপ। রাশিয়া, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, বেলজিয়ামের পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপ। নতুন করে করোনা-বিধি জারি করছে বেশির ভাগ দেশের সরকার। যাঁরা টিকা নেননি এখনও, তাঁদের জন্য ‘লকডাউন’ জারির কথা ভাবছে প্রশাসন। অর্থাৎ টিকা নেওয়া না থাকলে গৃহবন্দি থাকতে হবে। নতুন করে নিয়মের বেড়ায় বাঁধা পড়ার খবর শুনেই ক্ষুব্ধ ইউরোপীয়দের একাংশ। নয়া সরকারি নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ব্রাসেলসের রাস্তায় নেমেছেন হাজার হাজার মানুষ।
কমপক্ষে ৩৫ হাজার লোক ভিড় করেছিলেন সেন্ট্রাল ব্রাসেলসে। বেশির ভাগের মুখেই মাস্ক ছিল না। দূরত্ব-বিধির তো প্রশ্নই নেই। দিনভর বিক্ষোভ দেখানোর পরে তাঁদের অনেকেই বাড়ির দিকে রওনা হয়ে গিয়েছিলেন। এ সময়ে আচমকাই হিংসার চেহারা নেয় বিক্ষোভ। পুলিশ জানিয়েছে, কয়েকশো বিক্ষোভকারী পুলিশকে নিশানা করে পাথর ছুড়তে শুরু করেন। গাড়ি ভাঙচুর করেন। আবর্জনা ফেলার জায়গাগুলিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে। কিছু জায়গায় জলকামান দাগা হয়। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘আমাদের অনেকে জখম হয়েছেন। ঠিক কত জন, তা বলা সম্ভব নয়।’’ বিক্ষোভকারীদের অনেককে আটক করা হয়েছে। আটকের সংখ্যাও সঠিক জানাতে পারেননি ওই আধিকারিক।
ইউরোপের বেশির ভাগ দেশেই ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অস্ট্রিয়া, বেলজিয়ামের মতো কিছু দেশ পিছিয়ে রয়েছে। টিকার অভাব নয়, দেশবাসীর একাংশের অনিচ্ছার জন্য টিকাকরণ থমকে রয়েছে এ সব অঞ্চলে। সরকার এত দিন কোভিড টিকা নেওয়া আবশ্যিক ঘোষণা করেনি। কিন্তু বর্তমান অবস্থায় টিকা নেওয়ায় জোর দিচ্ছে প্রশাসন। এ দিনের বিক্ষোভের কারণ ছিল এটাই। বিক্ষোভকারীদের অন্যতম অভিযোগ, টিকাকরণ বাধ্যতামূলক করতে পারে না সরকার। ‘স্বাধীনতা চাই’ স্লোগান তোলেন তাঁরা। ফ্যাসিবাদ-বিরোধী গান ‘বেলা চাও’ গাইতে শোনা যায় অনেককে। বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল বিশাল ব্যানার। তাতে লেখা— ‘সকলের একসঙ্গে স্বাধীনতা চাই’। তাঁরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদর দফতরের সামনে মিছিল করে একত্রিত হন। কট্টরপন্থী রাজনৈতিক দল থেকে এলজিবিটি কমিউনিটি, সকলেই পতাকা হাতে যোগ দেন।
গত কয়েক সপ্তাহে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্গত বহু দেশে ভ্যাকসিন-বিরোধী মিছিল হয়েছে। শনিবার নেদারল্যান্ডসের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ চলেছিল। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) সম্প্রতি জানিয়েছে, এই মহাদেশ এখন কোভিডের হটস্পট হয়ে রয়েছে। তার মধ্যে এ ধরনের বিক্ষোভ আরও সংক্রমণ বাড়াবে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। ইউক্রেন, রাশিয়া, চেক প্রজাতন্ত্র, স্লোভাকিয়ার মতো দেশেও হাসপাতালে শয্যা ফাঁকা নেই। চিকিৎসা ব্যবস্থা বেহাল। রাষ্ট্রপুঞ্জের আশঙ্কা, এই শীতে আরও কয়েক লক্ষ প্রাণহানি ঘটবে ইউরোপে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy