ফাইল চিত্র।
‘বাড়ি যান!’
পদ ছাড়ার দাবি জানিয়ে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘের বিরুদ্ধে এখন এই স্লোগানকেই হাতিয়ার করেছেন বিক্ষোভকারীরা। উড়ে আসছে হুমকিও। এ বার তাঁদের দিকে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন বিক্রমসিঙ্ঘেও! তাঁর জিজ্ঞাসা, ‘‘আমার বাড়িটাই তো আর রাখেননি, তা হলে যাব কোথায়?’’
ক্যান্ডি শহরে এসে সম্প্রতি বিক্রমসিঙ্ঘে জানান, প্রেসিডেন্ট পদ ছেড়ে ‘বাড়ি ফিরে যাওয়ার’ দাবি না-মানলে আরও বড়সড় প্রতিবাদে নামার হুমকি দিয়ে আতঙ্ক বাড়াচ্ছেন বিক্ষুব্ধদের একাংশ। এই প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘কিন্তু এটা করে কী লাভ? আমার আর্জি, দয়া করে এটা করবেন না। কারণ আমার যাওয়ার কোনও জায়গা নেই।’’ সঙ্গে প্রেসিডেন্টের আরও সংযোজন, ‘‘যাঁর বাড়িটাই আর নেই, তাঁকে তো বাড়ি যেতে বলে কোনও লাভ নেই।’’ এর পর বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে কটাক্ষের সুর ফুটে ওঠে বিক্রমসিঙ্ঘের কণ্ঠে। তিনি বলেন, ‘‘আগে বরং আমার বাড়িটি ফের গড়ে দেওয়া হোক। তার পর না হয় আমাকে বাড়ি পাঠানোর দাবি জানানো যাবে।’’ প্রসঙ্গত, দেশ জুড়ে চলা চরম আর্থিক সঙ্কটের প্রতিবাদে গত ৯ জুলাই বিক্রমসিঙ্ঘের বাড়ি জ্বালিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা।
বিক্রমসিঙ্ঘের মতে বিক্ষোভকারীদের সামনে এখন দু’টোই রাস্তা খোলা— হয় তাঁরা তাঁর বাড়িটি ফের গড়ে দিক, নয়তো দেশ গড়ার কাজে হাত লাগাক। তাঁর দাবি, তিনি প্রেসিডেন্ট পদে আসার পর থেকে দেশ জুড়ে চলা অশান্তি-বিক্ষোভ-প্রতিবাদের জেরে আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার (আইএমএফ)-এর সঙ্গে একটি সম্ভাব্য চুক্তি অহেতুক পিছিয়ে গিয়েছে। এই চুক্তি দেশকে আর্থিক দুরবস্থা থেকে বার করে আনার ক্ষেত্রে অনেকটাই কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে বলে জানান তিনি। বিক্রমসিঙ্ঘ বলেন, ‘‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে খাদ্য এবং জ্বালানির অভাবকে কেন্দ্র করে দেশ জুড়ে চলা বিক্ষোভ পরিস্থিতির কারণেই ওই চুক্তি নিয়ে দর কষাকষি স্থগিত হয়ে গিয়েছে।’’ সঙ্গে তিনি এও জানান যে আইএমএফ-এর সঙ্গে এই চুক্তি স্বাক্ষর না-হওয়া পর্যন্ত অন্য দেশগুলিও শ্রীলঙ্কার দিকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর বিষয়ে পিছিয়ে গিয়েছে।
বিক্রমসিঙ্ঘের দাবি, বিক্ষোভ পরিস্থিতি সৃষ্টি না-করে রাজনৈতিক দলগুলির বরং উচিত দেশের সমস্যাগুলির স্থায়ী সমাধান সূত্র খুঁজে বার করায় মনোনিবেশ করা। তাঁর মতে, যে আর্থিক সঙ্কটের মুখে দেশ এখন দাঁড়িয়ে তার জন্য একমাত্র প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের দিকে আঙুল তুলে লাভের লাভ কিছু হওয়ার নেই।
প্রবল বিক্ষোভের মুখে দেশ ছাড়া হওয়া প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষের দেশে ফেরা নিয়েও রবিবার মুখ খুলেছেন বিক্রমসিঙ্ঘে। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব বুঝে নিতে তাঁর সঙ্গে রাজাপক্ষের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল সূত্রের খবর। বিক্রমসিঙ্ঘের মতে, এখন রাজাপক্ষের দেশে ফেরা রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। ফলে এই সময়টা তাঁর ফেরার জন্য একেবারেই সঠিক নয়। এই প্রসঙ্গে এক আমেরিকান সংবাদপত্রে প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে বিক্রমসিঙ্ঘ বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় না সময়টা তাঁর (রাজাপক্ষের) ফেরার জন্য উপযুক্ত। তা ছাড়া তাঁর ফেরার কোনও ইঙ্গিত আমি অন্তত পাইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy