খালিসির চরিত্রে এমিলিয়া ক্লার্ক
জনপ্রিয় মার্কিন ধারাবাহিক ‘গেম অব থ্রোনস’ (জিওটি) প্রায় শেষের দিকে। যাঁরা দেখেন তাঁরা জানেন, সিরিজ়টির প্রায় প্রত্যেকটি পর্বেই থাকে একটা অপ্রত্যাশিত মোচড়। যা চিত্রনাট্য তো বটেই, অনেক সময়েই চেনা চরিত্রগুলোকেও অচেনা করে তোলে এক নিমেষে। আর এটাই হল ধারাবাহিকটির প্রধান ইউএসপি। তবে তাই বলে কখন কোন চরিত্রের রং বদলে যাবে, সে ভয়ে পছন্দের চরিত্রের নামে সন্তানের নাম রাখা কি বন্ধ করে দেবে মানুষ? তা আবার হয় নাকি! কিন্তু বিপত্তি সেখানেই।
অধিকাংশ জিওটি ভক্তদের কাছে অন্যতম পছন্দের ড্যানেরিস টার্গেরিয়ান বা খালিসির চরিত্রটি। পরিসংখ্যান বলছে, মার্কিন মুলুকে শুধু গত এক বছরে ‘খালিসি’র নামে নামকরণ হয়েছে ৫৬০টি শিশুকন্যার। তাঁর ভাল নাম ‘ড্যানেরিস’ নামের শিশুর সংখ্যা জুড়লে যা দাঁড়াবে সাড়ে তিন হাজারে! তবে এতদিন এই চরিত্রটিকে নারীশক্তির প্রতীক হিসেবে দেখা হলেও এক ধাক্কায় পুরো দৃষ্টিভঙ্গিই পাল্টে দিয়েছে এই রবিবারের পর্বটি। কারণ, পর্বটির পরে অনেকের চোখেই ‘গণহত্যাকারী’ হয়ে উঠেছে খালিসি। ফলে ড্যানেরিস বা খালিসি নামে মেয়ের নাম রেখে ফাঁপরে পড়েছেন সেই সব জিওটি ভক্ত বাবা-মায়েরা। পর্বটি সম্প্রচার হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের উদ্দেশে ছড়িয়ে পড়েছে কটাক্ষের বন্যা। যেমন টুইটারে একজন ওই নামের শিশুদের উদ্দেশে লিখেছেন, ‘তোমাদের মা-বাবাদের তোমাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।’ অনেকের আবার উপদেশ, ‘এখনও সময়ে আছে, সন্তানের নামটা বদলে নিন!’
যদিও সে সব উপহাসকে বিশেষ আমল দিতে নারাজ সেই সব মা-বাবাদের অধিকাংশ। নিউ ইয়র্কের আঠারো মাস বয়সি খালিসি গিয়ারির বাবা নোলান গিয়ারি যেমন হালকা মেজাজেই বিষয়টির জবাব দিলেন। হাসতে হাসতে বললেন, ‘‘আমি যখন মেয়ের নাম রাখি, তখন আমার কাছে খালিসি ছিল নারী ক্ষমতায়নের প্রতীক। যে এত জনকে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। তবে পরে যে সে এ ভাবে অত্যাচার চালাবে, তা কী করে জানব। যদিও আমার মেয়েও অনেক সময়েই আমাদের উপর রীতিমতো অত্যাচার চালায়! তাই ঠিকই আছে...!’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
গত বছরের মার্চে মা হন বছর আঠাসের সুজ়ি ফ্রায়ট। জিওটি-র বড় ভক্ত সুজ়ি সাত পাঁচ না ভেবেই প্রিয় চরিত্রের নামে মেয়ের নাম রাখেন খালিসি জেড ভ্যানলুভেন। তাঁর কথায়, ‘‘ড্যানেরিস ‘খালিসি’ উপাধিটি পাওয়ার পর থেকেই আমার কাছে আরও প্রিয় হয়ে ওঠে। রানি হয়ে যে পরিমাণ ভালবাসা এবং সম্মান অর্জন করেছে চরিত্রটি, তা আমার মন কেড়ে নিয়েছিল। সুন্দরী হওয়ার পাশাপাশি খালিসি একজন অত্যন্ত বুদ্ধিমতী মহিলা।’’ এমনকি রবিবারের পর্বটির পরেও খালিসির প্রতি ভালবাসা কমেনি সুজ়ির। তবে ছোট্ট খালিসি জেড যদি বড় হয়ে এই নামটি নিয়ে প্রশ্ন তোলে, তা হলে কী বলবেন সুজ়ি? তাঁর সটান জবাব, ‘‘খালিসি এক জন শক্তিশালী মহিলা। আপনজনদের তাচ্ছিল্যের জবাব দিতে যে নিজের মতো করে পরিস্থিতির সঙ্গে যুঝতে শিখেছে। যুদ্ধ করে সিংহাসনের একজন দাবিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে নিজেকে।’’ যদিও আরিয়া (স্টার্ক)-র নামেও মেয়ের নাম রাখলেও মন্দ হত না বলে মন্তব্য সুজ়ির।
তাঁর ক্ষেত্রে সে সুযোগ ফস্কালেও আমেরিকায় শুধু গত বছরেই ২,৫৪৫ জন শিশুর নাম ‘আরিয়া’ রাখা হয়েছে বলে পরিসংখ্যান জানাচ্ছে। ইয়ারা চরিত্রটির নামে নাম রাখা হয়েছে ৪৩৪ শিশুর। তবে এই প্রতিযোগিতায় আরিয়ার থেকে অনেকটাই পিছিয়ে তার দিদি সানসা। ওই নামে মাত্র ২৯টি শিশুর নামকরণ হয়েছে। তবে নামকরণের ক্ষেত্রে নতুন মা-বাবাদের পছন্দের তালিকায় ‘জিওটি’র মহিলা চরিত্রগুলোর জনপ্রিয়তার ধারে কাছেও পৌঁছয়নি পুরুষ চরিত্রগুলি। টাইরিয়ন নামে মাত্র ৫৮টি শিশুর নাম রাখা হয়। জোরাহ্ নামটি দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩০ জনকে। থিয়ন নামটি দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৪টি ছেলেকে।
তবে মজার ব্যাপার, জেমি নামটি এমনিতে মার্কিন মুলুকে বেশ জনপ্রিয়। তবে ২০০১ সালে যেখানে ১,৩৩৯টি শিশুকে এই নামটি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে জিওটি-তে জেমি ল্যানিস্টারের চরিত্রটি আসার পর ওই নামে নাম রাখা হয় মাত্র ৫৪৭টি শিশুর!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy