Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Nawaz Sharif

কার্গিল যুদ্ধে সায় ছিল না নওয়াজ শরিফের! কেন সেই সময় পদ খোয়াতে হয়, জানালেন সে কথা

বছর ঘুরলেই সে দেশে সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছে নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-ও। তার আগে তাঁর এই মন্তব্য ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করার ইঙ্গিত কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

An image of Former Prime Minister of Pakistan

পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। —ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:৫৬
Share: Save:

১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধে তাঁর সায় ছিল না। আর পাকিস্তানের তৎকালীন সেনাপ্রধান পারভেজ মুশারফের কার্গিল পরিকল্পনায় সায় না দেওয়ার জন্যই নাকি তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল। সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে তেমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। বছর ঘুরলেই সে দেশে সাধারণ নির্বাচন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চলেছে নওয়াজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ) বা পিএমএল (এন)-ও। তার আগে নওয়াজের এই মন্তব্য ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করার ইঙ্গিত কি না, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে।

গত শনিবার একটি সাক্ষাৎকারে নওয়াজকে প্রশ্ন করা হয়, কেন তাঁকে বার বার ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে। প্রশ্নের উত্তরে ১৯৯৯ সালের ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নওয়াজ বলেন, "আমি কার্গিল পরিকল্পনার কথা শুনে তার বিরোধিতা করি। বলি এটা সম্ভব হবে না। পরে আমার কথাই সত্যি বলে প্রমাণিত হয়। কিন্তু আমাকে ক্ষমতা হারাতে হয়।

দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির উপরে জোর দেন নওয়াজ। আলাদা করে উল্লেখ করেন ভারতের কথা। স্মরণ করিয়ে দেন যে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে কেবল তাঁর আমলেই ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রী (অটল বিহারী বাজপেয়ী এবং নরেন্দ্র মোদী) পাকিস্তান সফরে গিয়েছিলেন। পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, অধুনা জেলবন্দি ইমরান খানকে 'অনভিজ্ঞ' বলে কটাক্ষ করে নওয়াজের দাবি যে, তাঁর দল (পিএমএলএন) শাসনভার গ্রহণ না করলে অর্থনীতি খাদের কিনারায় পৌঁছে যেত।

১৯৯৯-এর মে মাসে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে মুশকো, দ্রাস, কাকসার এবং বাতালিক সেক্টর, কার্গিল সেক্টরে ঢুকে পড়েছিল পাক হানাদাররা। তাদের সরিয়ে দিতে অভিযানে নামে ভারতীয় সেনা। সেই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন বিজয়’। ১৯৯৯ সালের মে থেকে জুলাই কার্গিল যুদ্ধ শহিদ হয়েছিলেন প্রায় ৫০০ জন ভারতীয় জওয়ান। অথচ সেই বছরের শুরুতেই দুই দেশের সম্পর্ক ভিন্ন এক মাত্রায় পৌঁছেছিল। ১৯৯৯ সালের মে থেকে জুলাই কার্গিল যুদ্ধ শহিদ হয়েছিলেন প্রায় ৫০০ জন ভারতীয় জওয়ান। অথচ সেই বছরের শুরুতেই দুই দেশের সম্পর্ক ভিন্ন এক মাত্রায় পৌঁছেছিল। সে সময়েই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন নওয়াজ।

১৯৯৯ সালের মে থেকে জুলাই জম্মু এবং কাশ্মীরের দ্রাস-কার্গিল সেক্টরে চলে লড়াই। পাকিস্তানের দিক থেকে নাগাড়ে অনুপ্রবেশ চলতে থাকে কার্গিলে। পাকিস্তান প্রথমে দাবি করে যে, জঙ্গিরাই এ সব করছে। পরে যদিও নিজের আত্মজীবনী ‘ইন দ্য লাইফ অব ফায়ার’-এ মুশারফ স্বীকার করেছিলেন, অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে ছিল পাক সেনাও। মনে করা হয়, মুশারফ ভেবেছিলেন দুই পরমাণু শক্তিধর দেশ যুদ্ধ করছে দেখে হস্তক্ষেপ করবে আমেরিকা-সহ আন্তর্জাতিক মহল। তাতে লাভের ধন আসবে পাকিস্তানেরই ঘরে। কাশ্মীরের ভূখণ্ড চলে আসবে তাদের দখলে।

কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলকে কিছু করতে হয়নি। তার আগেই পাক সেনাবাহিনীকে শায়েস্তা করে ভারতীয় সেনাবাহিনী। ১৯৯৯ সালের ২৬ জুলাই বিজয় ঘোষণা করে ভারত। বহু বছর পর নওয়াজের প্রাক্তন সহকারী দাবি করেছিলেন, তাঁর আমলে ভারতের সঙ্গে যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠছিল, তা ভেস্তে দিতেই কার্গিলে যুদ্ধ বাধিয়েছিলেন মুশারফ। ওই বছরই অক্টোবরে নওয়াজকে ক্ষমতাচ্যুত করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পদে বসেন মুশারফ। এ বার এই প্রসঙ্গে মুখ খুললেন স্বয়ং নওয়াজ।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy