তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের মধ্যস্থতায় ঠিক হয়েছে, সোমবার এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এবং তাঁর দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু সেই বৈঠকের আগে শনিবার বাড়ি ফেরার সময়ে মাথার চুল কামিয়ে ফেলা চাকরিপ্রার্থী রাসমণি পাত্র বললেন, ‘‘সোমবার আমরা কোনও প্রতিশ্রুতি শুনে ফিরতে চাই না। ওই দিনই আমাদের নিয়োগ দিতে হবে।’’
শনিবার ছিল মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এসএলএসটি চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থানের ১০০০তম দিন। প্রতিবাদস্বরূপ চাকরিপ্রার্থী রাসমণি নিজের মাথার চুল কামিয়ে ফেলেছিলেন। তার পর থেকে বিকেল পর্যন্ত সরগরম থেকেছে গান্ধীমূর্তির পাদদেশ চত্বর। মিছিল করে তাঁদের সংহতি জানাতে গিয়েছে বামেরা। কিন্তু যে রাসমণির মাথা কামানো দেখে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় সকালে বলেছিলেন, ‘নাটক’, বিকেলে সেই মঞ্চেই পৌঁছে গিয়েছিলেন কুণাল। তার পর তিনিই ব্রাত্যের সঙ্গে কথা বলে সোমবারের বৈঠকের বন্দোবস্ত করেন।
আরও পড়ুন:
রাত পৌনে ১০টা নাগাদ রাসমণিকে যখন ফোনে ধরা গেল তখন তিনি রয়েছেন কোলাঘাট স্টেশনে। ফিরছেন পূর্ব মেদিনীপুরের ভোগপুরের বাড়িতে। কলকাতা থেকে ফেরার সময়েই তাঁর কাছে খবর গিয়েছে, সাড়ে ছ’বছরের ছেলের ধুম জ্বর। তাঁর কথায়, ‘‘২০১৬ সালে যখন আমি পরীক্ষা দিয়েছিলাম, তখন ছিলাম সন্তানসম্ভবা। এখন ছেলের বয়স সাড়ে ছ’বছর। ১০০০টা দিন কাটছে রাস্তায়। এ বার একটা বিহিত হোক।’’
মাথার চুল কামিয়ে ফেললেন কেন? পূর্ব মেদিনীপুরের ওই চাকরিপ্রার্থী বললেন, ‘‘মহিলাদের মাথার চুল কামালে যেমন দেখতে লাগে, আমায় এখন যেমন দেখতে লাগছে, আসলে এটাই আমার মতো অসংখ্য যোগ্যপ্রার্থীর জীবন। আমরা ১০০০ দিন ধরে রাস্তায়। আমাদের কেমন কাটছে সেটাই ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছিলাম।’’ রাসমণির স্বামী ওকালতি করেন। তিনি জানিয়েছেন, স্বামী তাঁকে সারা ক্ষণ সমর্থন দিয়ে গিয়েছেন, যাচ্ছেনও।
সকালে রান্নাবান্না করে রোজ ভোগপুর থেকে কলকাতায় ধর্নামঞ্চে আসেন রাসমণি। সন্ধ্যার পর ফিরে যান। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের থাকার কথা স্কুলে, ক্লাসরুমে। তার বদলে আমরা পড়ে আছি রাস্তায়। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, উৎসব— সব কাটছে রাস্তাতেই। সোমবারের বৈঠক থেকে আমরা নিয়োগপত্র নিয়ে ফিরতে চাই। আর কিচ্ছু না।’’