ইমরান খান ও আরিফ আলভি ফাইল ছবি
টানটান উত্তেজনা। প্রতি মুহূর্তের নাটকীয় মোড়। যে রাজনৈতিক অস্থিরতা গত বেশ কয়েক দিন ধরে শিরোনামে রেখেছে পাকিস্তান তথা ইমরান খানকে, তার আপাত-সমাপ্তি ঘটল নাটকীয় ভাবেই। ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা-ভোটটাই হল না পাকিস্তানের ন্যশনাল অ্যাসেম্বলিতে। অনাস্থাপ্রস্তাব নিয়ে অ্যাসেম্বলিতে যখন আলোচনা চলছে, সেই সময় পাক প্রধানমন্ত্রী চলে গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে। প্রস্তাব দেন, অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিতে। যাতে নতুন করে ভোট হয় দেশে। কিছু ক্ষণের মধ্যেই অ্যাসেম্বলি ভেঙে দেওয়ার ঘোষণা করেন আরিফ। ইমরানই আপাতত দেশের তদারকি প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন। সরকারের তরফ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন হবে পাকিস্তানে।
অনাস্থা-ভোট হলে হার যে নিশ্চিত, বুঝে গিয়েছিলেন আগেই। জল্পনা চলছিল, সেই হারের আগে তিনি নিজে থেকেই ইস্তফা দিয়ে দেন কি না। কিন্তু ইমরান খান তা করেননি। উল্টে, বিরোধীদের নিশ্চিত জয়ের অঙ্ক মোক্ষম চালে থমকে দিলেন এক্কেবারে শেষ মুহূর্তে। বোঝা গেল, বিরোধীদের গদি দখলের যাত্রাভঙ্গ করতে গত কয়েক দিন ধরেই নিজের বোলিং স্ট্র্যাটেজি গুছিয়ে নিচ্ছিলেন প্রাক্তন পেশ বোলার। জোরে বোলার হলেও ইমরানের মধ্যে স্পিনারের ধূর্ততাও রয়েছে। এটা প্রমাণ হল রাজনীতির খেলাতেও।
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে এসে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন ইমরান। সেখানে দেশবাসীকে ভোটের জন্য তৈরি হতে বলেন। আরও বলেন, ‘‘ঘবড়ানা নেহি হ্যায়। ঈশ্বর উপর থেকে পাকিস্তানের উপর নজর রেখে চলেছেন।’’ তাঁর দাবি, ঈশ্বর দেখছেন কী ভাবে তাঁর সরকার ফেলতে বিরোধীরা পাকিস্তানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। এর পর ইমরানকে বলতে শোনা যায়, দেশবাসীই স্থির করুন, তাঁরা কাকে ক্ষমতায় দেখতে চান।
পাকিস্তানি সময় বেলা সাড়ে ১১টা (ভারতীয় সময় দুপুর ১২টা) থেকে ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থাপ্রস্তাবের উপর আলোচনা, বিতর্ক এবং তার পর ভোটাভুটি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ইমরানই সেখানে অনুপস্থিত। তিনি তখন চলে গিয়েছেন প্রেসিডেন্টের কাছে। আর ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে ডেপুটি স্পিকার ইমরানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব অসাংবিধানিক বলে বাতিল করার ঘোষণা করে দেন। পাক সংবিধানের ৫ নম্বর অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বস্ত থাকা প্রত্যেক নাগরিকের অবশ্যকর্তব্য।”
তবে দিনভর যা ঘটেছে তার থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছে পাক সেনা। বাহিনীর জনসংযোগ আধিকারিক জানিয়েছেন, দেশের রাজনীতিতে যা ঘটছে তাতে সেনার ভূমিকা নেই।
তবে ঘটনার জল গডি়য়েছে সুপ্রিম কোর্টের দরজায়। পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাবল ভুট্টো জারদারি বলেছিলেন, বিরোধীরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন। পাক শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতিও ঘটনাক্রম উদ্বিগ্ন। তিনিও আদালতের অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়ে নিজের বাড়িতে একটি বৈঠক করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy