মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যদি পারমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা ব্যর্থ হয়, তা হলে ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপ করতে পারে আমেরিকা! এ বার ইরানকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এমনটাই জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার রাতে ট্রাম্প বলেন, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছোনোর জন্য হাতে ‘খুব বেশি সময় নেই’। যদি আলোচনা থেকে কোনও সমাধানসূত্র না মেলে, সে ক্ষেত্রে ইরানের উপর সামরিক চাপও বাড়াতে পারে আমেরিকা। এর কোনও বিকল্প আছে কি না জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘না! প্রয়োজনে অবশ্যই সামরিক পদক্ষেপ করবে আমেরিকা। সেই হামলায় আমেরিকার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেতৃত্ব দেবে ইজ়রায়েলও।’’
পেন্টাগন প্রধানের বুধবারের মন্তব্যের পরেই একই ধাঁচে জবাব দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পেন্টাগন প্রধান বলেছিলেন, সম্প্রতি ভারত মহাসাগরে মার্কিন-ব্রিটিশ ঘাঁটিতে বোমারু বিমান মোতায়েনের নেপথ্যে ইরানকে কোনও বার্তা দেওয়ার উদ্দেশ্য রয়েছে কি না, তা নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব ইরানের। প্রসঙ্গত, ইরানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার আবহে গত মার্চ মাসে ভারত মহাসাগরের দিয়েগো গার্সিয়া দ্বীপের একটি মার্কিন-ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটিতে ছয়টি বি-২ বোমারু বিমান পাঠানো হয়েছিল। এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ বলেন, “এটি সকলের কাছেই একটি বার্তা পাঠায়। তা ছাড়া, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তো আগেই স্পষ্ট বলেছেন, ইরানের পারমাণু বোমা থাকা উচিত নয়। আমাদের আশা, প্রেসিডেন্ট শান্তিপূর্ণ পথেই এর মীমাংসা করবেন।”
২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। অথচ ২০১৮-য় সেই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসেন ট্রাম্প। এর পর গত বছরের শেষে রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইরান। তাদের কাছে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে বিশ্বের তাবড় শক্তিধর দেশগুলি। ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি নিরাপত্তা পরিষদে খোলা চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেয়, প্রয়োজনে ইরানের পরমাণু অস্ত্রধর দেশ হয়ে ওঠা আটকাতে তারা সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত। চিন্তা বাড়ে আমেরিকারও। যদিও তেহরানের তরফে বার বারই জোর দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে এ সব যুক্তিতে চিঁড়ে ভেজেনি। সেই আবহে এ বার ইরানকে ফের হুঁশিয়ারি দিলেন ট্রাম্প।