মাসুদ আজহার। — ফাইল চিত্র
ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার মূলচক্রী মাসুদ আজহারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হল পাকিস্তানে। বৃহস্পতিবার এই নির্দেশ দিয়েছে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আদালত (অ্যান্টি টেররিজম কোর্ট)। সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত দেওয়া নিয়ে একটি মামলায় গুজরানওয়ালার ওই আদালত বৃহস্পতিবার জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান ছাড়াও সংগঠনের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।
গুজরানওয়ালার আদালতে মামলাটি করেছিল পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের কাউন্টার টেররিজম ডিপার্টমেন্ট (সিটিডি)। এক পাক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘সিটিডি বিচারককে জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত এবং জিহাদি বই বিক্রিতে জড়িত জইশ প্রধান।’’ আদালতে মাসুদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার আবেদন করেন সিটিডির এক কর্তাও। তার ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ওই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক নাতাশা নাসিম সুপ্রা।
২০১৯ সালে পুলওয়ামা হামলার পর প্রবল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে পাকিস্তান। তার পর শুরু হয় জইশের বিরুদ্ধে পঞ্জাব পুলিশের অভিযান। সিটিডি সূত্রে জানা গিয়েছে, লাহৌর থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরে গুজরানওয়ালার ‘সেফ হাউস’ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ৬ জইশ নেতাকে। তাদের কাছে মেলে বিপুল অঙ্কের অর্থ। সিডিটি জানিয়েছে, সন্দেহভাজনরা সংগঠনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ধৃতদের বিরুদ্ধে আদালতে পেশ হয় চার্জশিট।
আরও পড়ুন: পাশে নেই নিজের মন্ত্রীরাও, মেয়াদের আগেই সরানো হতে পারে ট্রাম্পকে
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট ভোটে বাইডেনের জয় অনুমোদন কংগ্রেসের, মানলেন ট্রাম্পও
কিন্তু মাসুদের অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ছে। একটি সূত্রের মতে, বাহাওয়ালপুরে নিজের শহরেই এখন আস্তানা গেড়েছে জইশ প্রধান। কিন্তু গত ১২ ডিসেম্বর ‘সানডে গার্ডিয়ান’ পত্রিকার একটি রিপোর্ট ভিন্ন কথা বলছে। তাদের দাবি, পঞ্জাব প্রদেশরই মিয়াওয়ালির জেলে পাক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর তত্ত্বাবধানে বহাল তবিয়তে রয়েছে মাসুদ।
মাসুদের অবস্থান নিয়ে ‘গোপনীয়তা’ কেন? চলতি বছরের ২১ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি বৈঠক রয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর। সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত দেওয়া হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণ করা ওই সংস্থার কাজ। বিশেষজ্ঞদের একাংশের ব্যাখ্যা, এফএটিএফ-এর বৈঠক শেষ হলেই ফের ‘স্বমহিমা’য় ফিরবে মাসুদ। কারণ ইতিমধ্যেই এফএটিএফ আগেই পাকিস্তানকে ‘ধূসর তালিকা’ ভুক্ত করেছে এবং সতর্কও করে দিয়েছে ইসলামাবাদকে। সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত দেওয়া বন্ধ করতে একাধিক লক্ষ্যও বেঁধে দিয়েছে ওই আন্তর্জাতিক মঞ্চটি। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদের ‘কড়া’ পদক্ষেপ করা অনেকটা ‘লোকদেখানো’ বলে মনে করছেন ভারত-পাকিস্তান কূটনীতি বিশেষজ্ঞরা।
ভারতে একাধিক জঙ্গি হামলার পিছনে হাত রয়েছে মাসুদের। ২০০১ সালে সংসদে হামলা, ২০০৮ সালে মুম্বই হামলা, ২০১৬-য় পঠানকোট হামলা এবং ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের ঠিক আগেই পুলওয়ামা নাশকতার মাস্টারমাইন্ড মাসুদ। তাকে আন্তর্জাতিক জঙ্গি আখ্যা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy