Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

করোনা-রোধী ও নিরাপদ, দ্বিতীয় পর্যায়ে সফল অক্সফোর্ডের টিকা

তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগও চলছে। এই পর্বে সফল হলেই সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পাবে অক্সফোর্ডের এই টিকা।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০২০ ২১:২২
Share: Save:

করোনা প্রতিরোধী। নিরাপদ ও সহনশীল। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন। অক্সফোর্ডের করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলে এমন দাবি ঘিরেই বাড়ছে করোনা-যুদ্ধে জয়ের আশা। অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের দাবি, তাঁদের তৈরি টিকা চ্যাডস্ক-১ এনকোভ-১৯ নিরাপদ এবং করোনার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সক্ষম। চ্যাডক্স-১ এর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষামূলক প্রয়োগও চলছে। এই পর্বে সফল হলেই সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য অনুমোদন পাবে অক্সফোর্ডের এই টিকা।

গত কয়েক দিন ধরেই জল্পনা চলছিল, অক্সফোর্ডের তৈরি টিকার ফল নিয়ে। বিজ্ঞানী-গবেষকেরাও অপেক্ষায় ছিলেন। প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফল আশানুরূপ— এমন গুঞ্জন ছড়িয়েছিল এবং চিকিৎসাবিজ্ঞান মহলে আশাও বাড়ছিল। অবশেষে সোমবার ব্রিটিশ পত্রিকা ‘দ্য ল্যানসেট’-এ তার ফলাফল প্রকাশিত হতেই সেই আশা আরও বেড়ে গিয়েছে। অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের দাবি, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফলাফলে স্পষ্ট, এই টিকা শুধুমাত্র করোনার রুখে দিতে পারবে তাই নয়, এটি সম্পূর্ণ নিরাপদ।

ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের গবেষণাপত্রে অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীরা লিখেছেন, ‘‘চ্যাডক্স-১ এনকোভ-১৯ তেমন বড় কোনও পাশ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনি। তৈরি করেছে অ্যান্টিবডি এবং টি-সেলস। অ্যান্টিবডির কাজ হল, কোনও ভাইরাসের সংক্রমণ হলে তার বিরুদ্ধে লড়াই করা। আর টি-সেলস অনেকটা ‘মেমরি চিপ’-এর মতো। অর্থাৎ টিকা প্রয়োগ করলে ওই ভাইরাসের সমস্ত বৈশিষ্ট্য টি-সেলস শরীরে ধরে রাখে। ভবিষ্যতে কখনও ফের সেই ভাইরাসের সংস্পর্শে এলে ওই টি-সেলস ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং তার বিরুদ্ধে লড়াই করে ভাইরাসকে প্রতিহত করে। টিকার মাধ্যমে তৈরি অ্যান্টিবডি শরীরে দীর্ঘ দিন না থাকলেও টি-সেলস অনেক বছর ধরে শরীরে থেকে যায়।

গবেষণাপত্রের নেতৃত্বে থাকা বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু পোলার্ড লিখেছেন, ‘‘আমরা আশা করি যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে, তা ওই ভাইরাসকে মনে রাখবে, যাতে এই টিকা সাধারণ মানুষকে বহু দিন সুরক্ষা দেয়।’’ অ্যান্ড্রু পোলার্ড জানিয়েছেন, এই পরীক্ষামূলক প্রয়োগে সবচেয়ে ভাল প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে ১০ জন স্বেচ্ছাসেবকের একটি দলের মধ্যে, যাঁদের দু’টি ডোজ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তাই দু’টি ডোজই কৌশলগত ভাবে বেশি কার্যকরী বলে মনে করেন অ্যান্ড্রু পোলার্ড।

অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই টিকা তৈরির কাজ হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানী দলের নেতৃত্বে থাকা সারা গিলবার্ট। তিনি বলেছিলেন, কার্যত ছ’বছরের কাজকে ছ’মাসে শেষ করার জন্য রাত-দিন এক করে ফেলেছেন তাঁরা। এই প্রতিষেধকের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল একসঙ্গে হয়েছে। তার ফলেও যে উল্লেখযোগ্য সাড়া মিলেছে, সে কথাও জানিয়েছিলেন তিনি। ‘দ্য ল্যানসেট’ পত্রিকায় প্রকাশিত ফলাফলেও তাঁর সেই কথারই পুনরাবৃত্তি।

অন্য দিকে চ্যাডক্স-১ এর তৃতীয় পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালও শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্রিটেন ছাড়াও আমেরিকা, ব্রাজিল মিলিয়ে ৪৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবকের উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হয়েছে এই প্রতিষেধক। সেই প্রক্রিয়াও শেষের পথে। তৃতীয় ধাপের এই পরীক্ষার ফল পাওয়ার পর তা বিশ্লেষণ করেই সাধারণ মানুষের উপর প্রয়োগের চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। বিজ্ঞানীদের অনুমান, আগামী দু’-তিন মাসের মধ্যেই সব পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া শেষ করে সাধারণ মানুষের উপর প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে অক্সফোর্ডের এই টিকা।

এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল প্রকাশের পর ‘দ্য ল্যানসেট’-এর প্রধান সম্পাদক রিচার্ড হর্টন অক্সফোর্ডের বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে লিখেছেন, এই ফল অত্যন্ত আশাপ্রদ। তিনিও লিখেছেন, এই টিকা নিরাপদ, সহনশীল ও ইমিউনিটি বাড়াতে সক্ষম।

আরও পড়ুন: সপ্তাহে ২ দিন রাজ্যে সম্পূর্ণ লকডাউন, এ সপ্তাহে বৃহস্পতি এবং শনিবার

আরও পড়ুন: কোভিডাক্রান্ত শিক্ষাব্যবস্থাকে ডাকওয়ার্থ-লুইস খুঁজতে হবে এ দেশে

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy