নীরব মোদী। ফাইল চিত্র
দীর্ঘ টানাপড়েনের পর অবশেষে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (পিএনবি) প্রতারণা কাণ্ডে অভিযুক্ত ধনকুবের নীরব মোদীকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে আশার আলো দেখতে পেল নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার ওই সংক্রান্ত একটি মামলায় শুনানির পর ব্রিটেনের ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত জানিয়েছে, পিএনবি থেকে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকা প্রতারণা করতে চেয়েছিলেন নীরব। এ ব্যাপারে ভারতের দেওয়া প্রমাণে আদালত সন্তুষ্ট। ব্রিটেনের আদালত জানিয়েছে, নীরবকে ভারতের হাতে প্রত্যর্পণ করা যেতে পারে।
ভারতের পেশ করা প্রমাণ দেখে জেলা বিচারক স্যামুয়েল গুজি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে তেমন কোনও প্রমাণ নেই যে প্রত্যর্পণ করা হলে নীরব মোদী বিচার পাবেন না।’’ তিনি আরও জানান, প্রচুর টাকা ঋণ নেওয়ার জন্য নীরব মোদী এবং ব্যাঙ্কের আধিকারিক-সহ অন্যরা যে ষড়যন্ত্র করেছিলেন, তা স্পষ্ট। তাঁর কথায়, ‘‘পিএনবিকে দেওয়া চিঠিতে নীরব নিজেই ঋণের বিষয়টির কথা স্বীকার করেছিলেন। বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার সংস্থা তদন্ত করছে। বিশ্বাস করি না নীরব বৈধ ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন। বৈধ কোনও লেনদেনও খুঁজে পাইনি। আমার বিশ্বাস, একটা অসৎ প্রক্রিয়া চলছিল।’’ এর সঙ্গে বিচারকের তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘অনেক বিষয় ভারতে বিচারাধীন। অর্থিক দুর্নীতির যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে নীরবের বিরুদ্ধে।’’ বিচারক এ-ও জানান, নীরব-মামলায় তিনি নয়াদিল্লির তরফে মোট ১৬ ‘ভলিউম’ তথ্যপ্রমাণ পেয়েছেন।
বুধবার ওই শুনানিতে দক্ষিণ-পশ্চিম লন্ডনের সংশোধনাগার ওয়ান্ডসওয়ার্থ থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগ দেন নীরব-ও। বিচারকের ওই পর্যবেক্ষণ স্বাক্ষরের জন্য পাঠানো হবে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি পটেলের কাছে। তবে লক্ষ্যপূরণ করতে এখনও বহুদূর যেতে হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ এর পরেও নীরবের সামনে উচ্চ আদালতে পাল্টা আবেদন করার সুযোগ থাকবে। ঋণখেলাপি মামলায় ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ লন্ডনে গ্রেফতার হন নীরব। এর আগে ওই আদালতেই ৩ বার জামিন নাকচ হয়েছে তাঁর। প্রতি ক্ষেত্রেই আদালত মনে করেছে, নীরব পালিয়ে যেতে পারেন।
বুধবার আদালতে নীরবের আইনজীবীরা মামলাটিকে ‘ব্যবসায়িক বিতর্ক’ বলে চালাতে চেয়েছিলেন। এমনকি নীরবের পরিবারে আত্মহত্যার ইতিহাস টেনে এনে তাঁর মানসিক অবস্থার কথা তুলে ধরেও সওয়াল করেন আইনজীবীরা। এ-ও বলা হয়, অতিমারি পরিস্থিতিতে নীরবের মানসিক অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। শুনানিতে মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেল যেখানে নীরবকে রাখার কথা, সেখানকার পরিস্থিতির কথাও উঠে এসেছে। সেই জেলের ভিডিয়ো রেকর্ডিংও ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পেশ করে ভারত।
ভারতে নীরবের বিরুদ্ধে পৃথক দু’টি মামলার তদন্ত করছে সিবিআই ও ইডি। বিচারক বলেছেন, ‘‘নীরব মোদী, নিহাল মোদী, মিহির ভাণ্ডারি, শেট্টি ও যোশী—এঁদের মধ্যে একটা যোগাযোগ ছিল। এঁরা সবাই মিলে পিএনবি প্রতারণায় যুক্ত ছিলেন বলে মনে হচ্ছে।’’ ফলে নীরবকে ভারতে প্রত্যর্পণ করা হতে পারে জানিয়েছে আদালত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy