জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে নতুন দল তৈরি হতে চলেছে বাংলাদেশে। জাতীয় নাগরিক কমিটি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি দলের নাম ঘোষণা হওয়ার কথা। কিন্তু তার আগে দলের কাঠামো নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। কে কোন পদে থাকবেন, কার পদের গুরুত্ব কতটা, তা নিয়ে এখনও পুরোপুরি সমঝোতায় আসতে পারেননি নেতারা। সূত্রের খবর, সমঝোতাসূত্র বার করার উদ্দেশ্যেই শীর্ষপদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হচ্ছে। একের পর এক নতুন পদ তৈরি করা হচ্ছে। প্রথমে চার থেকে বাড়িয়ে শীর্ষপদের সংখ্যা ছ’টি করা হয়। কিন্তু সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলে দাবি।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার জানিয়েছে, জুলাই আন্দোলনের পথিকৃৎদের নিয়ে নতুন যে দলটি তৈরি হবে, তাতে ১০ থেকে ১২টি শীর্ষপদ থাকতে পারে। এই সংক্রান্ত বৈঠকে অনেকেই ১০টি বা ১২টি গুরুত্বপূর্ণ পদ সম্বলিত দলের প্রস্তাব দিয়েছেন। এখনও এ বিষয়ে একমত হতে পারেননি নেতারা। আলোচনা চলছে।
আরও পড়ুন:
প্রথমে স্থির হয়েছিল, বাংলাদেশের এই নতুন দলে চারটি শীর্ষপদ থাকবে— আহ্বায়ক, সদস্যসচিব, মুখপাত্র এবং মুখ্য সংগঠক। শনিবার জানা যায়, আরও দু’টি শীর্ষপদ যোগ করা হচ্ছে দলে। সেগুলি হল জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্যসচিব। এ ছাড়াও আরও দু’টি মুখপাত্রের পদ সৃষ্টি করা হতে পারে। জাতীয় নাগরিক কমিটির সূত্র উল্লেখ করে ডেইলি স্টার জানিয়েছে, জুলাইয়ের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলেন যাঁরা, নতুন দলে তাঁদের কেউ যাতে কম গুরুত্ব না-পান, তা নিশ্চিত করতেই দলের শীর্ষপদ বৃদ্ধি করা হচ্ছে। গত বুধবার এ বিষয়ে দলের সদস্যদের বৈঠক হয়েছিল। সেখানেই শীর্ষপদের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রস্তাব পাশ হয়।
নতুন দলের চারটি শীর্ষপদে কারা থাকছেন, আগেই তা ঘোষিত হয়েছিল। দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এই পদে দায়িত্ব নেওয়ার আগে উপদেষ্টার পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেবেন। এ ছাড়া, নতুন দলের সাধারণ সচিব পদে থাকবেন জাতীয় নাগরিক কমিটি সদস্যসচিব আখতার হোসেন। মুখ্য সংগঠক এবং মুখপাত্র পদের জন্য মনোনীত হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক, সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লা। বাকি পদে কারা থাকবেন, পদের সংখ্যা ছয়ের চেয়েও বেশি হবে কি না, এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
বাংলাদেশের এই নতুন দলের নেপথ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস রয়েছেন বলে দাবি করছেন অনেকে। খালেদা জিয়ার দল বিএনপি কয়েক মাস আগে দাবি করেছিল, ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এবং গোয়েন্দা সংস্থার মদতে নতুন দল তৈরি হতে চলেছে। নতুন দলের কথা ঘোষিত। তবে ইউনূসের মদতে তা হচ্ছে কি না, এখনও স্পষ্ট হয়নি।