Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Nepal Parliament

ভারতীয় এলাকা জুড়ে নতুন মানচিত্র পাশ হয়ে গেল নেপাল পার্লামেন্টে

নয়া রাজনৈতিক মানচিত্রে অনুমোদন দেওয়া সংবিধান সংশোধনী বিলটি পাশের জন্য প্রয়োজন ছিল দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন।

নেপাল হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস।—ফাইল চিত্র।

নেপাল হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস।—ফাইল চিত্র।

সংবাদসংস্থা
কাঠমান্ডু শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২০ ১৭:৩৬
Share: Save:

উত্তরাখণ্ডের তিন ভারতীয় এলাকার ‘দখল নিল’ নেপাল! শনিবার সে দেশের হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভের (প্রতিনিধি সভা) নিম্নকক্ষে পাশ হয়েছে নয়া মানচিত্র অনুমোদনের সংবিধান সংশোধনী বিল। নয়াদিল্লির আপত্তি উড়িয়ে তাতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ভারতীয় এলাকা লিম্পিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে।

পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ নেপাল প্রতিনিধিসভার সদস্যসংখ্যা ২৭৫। নয়া রাজনৈতিক মানচিত্রে অনুমোদন দেওয়া সংবিধান সংশোধনী বিলটি পাশের জন্য প্রয়োজন ছিল দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন। শাসকদল নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির পাশাপাশি প্রধান বিরোধী দল নেপালি কংগ্রেস এমনকি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় নেপালি দলগুলিও বিল সমর্থন করেছে। বিলের পক্ষে পড়েছে ২৫৮টি ভোট। প্রতিনিধিসভার মুখপাত্র রোজনাথ পাণ্ডে বলেছেন, ‘‘বিতর্কের পর ভোটাভুটির মাধ্যমে স‌ংবিধান সংশোধনী বিলটি পাশ হয়েছে।”

শুক্রবার বিহারের সীতামঢ়ীতে নেপাল পুলিশের গুলিতে ভারতীয় কৃষকের মৃত্যুর ঘটনায় সীমান্তে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির সরকারের এমন পদক্ষেপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তিক্ততা সৃষ্টি করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক এদিন কাঠমান্ডুর এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছে। মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘কৃত্রিমভাবে এলাকা বাড়িয়ে নেওয়ার এমন দাবি ভারতের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়।’’ তাঁর অভিযোগ, নেপালের এই আচরণ ‘একতরফা’ এবং ‘ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের পরিপন্থী’।

আরও পড়ুন: নিছকই বিচ্ছিন্ন ঘটনা, বোড়াল শ্মশানের ভিডিয়ো প্রসঙ্গে মন্তব্য রাজ্যের

নেপাল পার্লামেন্টে ভোটাভুটির আগে এদিন তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মানচিত্র বিতর্ক নিয়ে মুখ খুলেছিলেন ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল এম এম নরবণে। তিনি বলেন, ‘‘ভারত এবং নেপালের সম্পর্ক অতীতেও ঘনিষ্ট ছিল। ভবিষ্যতেও থাকবে। কারণ আমাদের ভৌগলিক, ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় যোগসূত্র রয়েছে।’’

পঞ্চাশের দশক থেকে ভারত এবং নেপাল সরকার পরস্পরের সেনাপ্রধানকে নিজের দেশের ‘সাম্মানিক সেনাপ্রধান’ পদে নিযুক্ত করে। গত বছর নেপালের সেনাপ্রধান পূর্ণচন্দ্র থাপাকে ভারতীয় ফৌজের ‘সাম্মনিক জেনারেল’ পদ প্রদান করা হয়েছিল। বর্তমান প্রেক্ষাপটে সেই প্রক্রিয়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়ল বলে কূটনৈতিক মহলের ধারণা।

চিন অধিকৃত তিব্বত লাগোয়া পিথোরাগড় জেলার ওই তিনটি অঞ্চল সামরিক দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বহু বছর ধরেই লিপুলেখ গিরিপথ কৈলাস ও মানস সরোবরের তীর্থযাত্রীরা ব্যবহার করেন। গত মাসে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ নবনির্মীত ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ তাওয়াঘাট-লিপুলেখ সড়কের উদ্বোধন করেছিলেন। বস্তুত, এর পরেই নেপালের তরফে ‘তৎপরতা’ শুরু হয়। ৩১ মে সেদেশের আইনমন্ত্রী শিবমায়া তুম্বাহাম্পি হাউস অফ রিপ্রেজেনটেটিভে মানচিত্র-বদল বিলের খসড়া পেশ করেন। কয়েকদিন আগে হাউসের সদস্য সরিতা গিরি নয়া বিলের বিরুদ্ধে একটি সংশোধনী প্রস্তাব জমা দিয়েছিলেন। তাতে একতরফা ভাবে মানচিত্র বদলের পরিবর্তে উত্তরাখণ্ড সীমান্তের ওই তিনটি ‘বিতর্কিত’ অঞ্চল নিয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

আরও পড়ুন: মহুয়াকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূলের নিশানায় ‘ললিপপ’ ধনখড়​

কিন্তু স্পিকার অগ্নিপ্রসাদ সাপকোটা সংবিধানের ১১২ ধারা অনুযায়ী নিজের বিশেষ অধিকার প্রয়োগ করে প্রস্তাবটি খারিজ করে দেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয় নেত্রী সরিতার বাড়িতেও চিন-ঘনিষ্ঠ নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কর্মীরা হামলা চালায়। পরিস্থিতির আঁচ পেয়ে সরিতার দল জনতা সমাজবাদী পার্টির নেতৃত্বও তাঁকে না-এগোনোর নির্দেশ দেন। গত ৯ জুন প্রতিনিধিসভা সবর্সম্মতিক্রমে বিলটি বিতর্ক ও ভোটাভুটির জন্য গ্রহণের প্রস্তাব অনুমোদন করে।

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Territory New Map Nepal Parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy