নেপাল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভা। ছবি: এএফপি।
ভারতের আপত্তি উড়িয়ে দেশের নতুন মানচিত্রে সিলমোহর লাগানোর উদ্দেশ্যে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি সভায় বুধবার সংবিধান সংশোধন বিল পাশ করাল নেপাল সরকার। দিল্লির দাবি, ভারতের প্রায় ৪০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকাকে নতুন মানচিত্রে নিজেদের বলে দাবি করেছে নেপাল। এ দিনও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক নেপাল সরকারের পদক্ষেপের সমালোচনা করে বলেছে, কাঠমান্ডুর দাবির কোনও ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। আবার কংগ্রেস এ বিষয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারের দিকে আঙুল তুলে বলেছে, জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্নে আবার তারা ব্যর্থ হল।
নেপালের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে দেশের দ্বিতীয় সংবিধান সংশোধনী বিলটি পাশ হতে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন থাকলেও সর্বসম্মতিতে পাশ হয়েছে সেটি। প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির বামপন্থী সরকারের আনা বিলকে সমর্থন করেছেন নেপালি কংগ্রেস, আরজেপি-এন এবং আরপিপি-র মতো বিরোধী দলের সব সদস্য। ২৭৫ সদস্যের প্রতিনিধি সভায় ২৫৮ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন শনিবারের ভোটাভুটিতে। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ২৫৮টি-ই। এর পরে বিলটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ জাতীয় পরিষদে যাবে। সেখানেও ফলাফল একই হবে বলে মনে করা হচ্ছে। নতুন মানচিত্রে লিম্পিয়াধুরা, লিপুলেখ গিরিপথ এবং কালাপানি অঞ্চলকে নেপালের অংশ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এই অঞ্চল দিয়ে চিন সীমান্ত পর্যন্ত সম্প্রতি পাকা সড়ক তৈরি করেছে ভারত, সমরকৌশলগত ভাবে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের দাবি, চিনের প্ররোচনাতেই ওলি সরকার এই পদক্ষেপ করছে। তবে সীমান্ত সমস্যা মেটানোর জন্য কাঠমান্ডু আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলেও দিল্লি তাতে সাড়া দেয়নি। কাঠমান্ডু তাতে ক্ষুব্ধ।
গত কাল নেপাল নিয়ে মুখ না-খুললেও আজ কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দিল্লি। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “ভারতীয় ভূখণ্ডকে অন্তর্ভুক্ত করে নেপাল তার পরিবর্তিত মানচিত্র সংসদের নিম্নকক্ষে পাশ করিয়েছে।” তাঁর কথায়, “নেপালের দাবির পিছনে কোনও ঐতিহাসিক তথ্যপ্রমাণ নেই। ফলে এই মানচিত্র গ্রহণযোগ্য নয়। নেপালের সঙ্গে সীমান্ত সমঝোতাও এই ঘটনায় বিঘ্নিত হবে।”
আরও পড়ুন: এইচ-১বি ভিসা বন্ধের পথে ট্রাম্প?
আরও পড়ুন: ‘আরও বাড়বে সংক্রমণ, এটা অপরিকল্পিত লকডাউনেরই ফল’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
নেপালের সঙ্গে এত দিনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক এ দিনের ঘটনায় ধাক্কা খাবে বলে মনে করে কংগ্রেস। তবে এ জন্য তারা মোদী সরকারের কূটনীতিকেই দায়ী করছে। দলের মুখপাত্র রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা শনিবার বলেন, “টিভি-তে যুদ্ধের জিগির তোলা আর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা প্রদর্শন এক বিষয় নয়। জাতীয় স্বার্থ রক্ষার প্রশ্ন এলেই বিজেপি নেতৃত্ব উটপাখির মতো বালিতে মাথা গুঁজে দায়িত্ব এড়াতে চান।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy