হাল্কা মেজাজে: গল্পে ব্যস্ত রাষ্ট্রনেতারা। মঙ্গলবার সন্ধেবেলা বাকিংহাম প্রাসাদে। এপি
বিশ্বের তাবড় নেতারা গোল হয়ে দাঁড়িয়ে। কারও হাতে পানীয়ের গ্লাস। কারও মুখে ফিসফাস, কারও মৃদু হাসি। ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের সূচনার পরে বাকিংহাম প্রাসাদে কাল সন্ধ্যায় রানি দ্বিতীয় এলিজ়াবেথের আমন্ত্রণে এক অনুষ্ঠানে একসঙ্গে দেখা গিয়েছিল ওই নেতাদের। ব্রিটেনের বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন থেকে শুরু করে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ইমানুয়েল মাকরঁ, নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটে— কে নেই সেখানে। যোগ দিয়েছিলেন রাজকুমারী অ্যানও।
কিন্তু তাঁদের আলোচনার কেন্দ্রে ছিলেন কে? সেটাই সব চেয়ে বড় জল্পনার বিষয়। কারণ হাল্কা চালে তাঁরা যা বলছেন, তা যে রেকর্ড হচ্ছে, কোনও নেতাই সেটা জানতেন না। তাঁদের আলাপচারিতার সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই উঠছে নানা প্রশ্ন। সংবাদমাধ্যম থেকে কূটনৈতিক মহলে অনেকেরই ধারণা, জনসন-ট্রুডো-মাকরঁদের ব্যঙ্গের নিশানা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আর সেটা জানাজানি হতেই বেজায় খেপে যান ট্রাম্প। বুধবার স্বকীয় ভঙ্গিতে ট্রুডোকে ‘দু-মুখো’ বলে রীতিমতো আক্রমণ করে ন্যাটোর বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। তার আগে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ওই ভিডিয়োটা তিনি দেখেছেন কি না? উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘‘উনি একটা দু-মুখো লোক।’’ এই সূত্রে তিনি বুঝিয়ে দেন, কানাডা ন্যাটোর জন্য যথেষ্ট করছে না। আমেরিকা বহু দিন ধরেই এ ব্যাপারে সরব। ওই ভিডিয়ো সূত্রে তিনি সেই ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন। পরে আবার মাইক্রোফোনে ধরা পড়ে, ট্রাম্প সাংবাদিকদের ব্যঙ্গ করে বলছেন, ‘‘দেখেছেন, উনি (ট্রাম্প নিজে) কী রকম সাংবাদিক বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন!’’ পরে অবশ্য জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকে ট্রাম্প বলেন, ‘‘সত্যি বলতে কী, ট্রুডো খুবই ভাল মানুষ।’’
বিশ্বনেতাদের ওই ভিডিয়ো ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, জনসন জিজ্ঞেস করছেন মাকরঁকে: ‘‘সে জন্যই আপনার দেরি হল?’’ ট্রুডো আবার মাঝখান থেকে বলে উঠলেন, ‘‘৪০ মিনিটের সাংবাদিক বৈঠক, তাই জন্যই ওঁর দেরি হয়েছে।’’ তার পরে ফের তিনি বলছেন, ‘‘হ্যাঁ, হ্যাঁ। ওই ঘোষণা করলেন তো...।’’ তখন মাকরঁ আবার বেশ উৎফুল্ল হয়ে কিছু বলে ওঠেন। কিন্তু তিনি ছিলেন ক্যামেরার দিকে মুখ ফিরিয়ে। এবং এতটাই নিচু স্বরে কথা বলেছেন যে রেকর্ডে ধরা পড়েনি। এর মধ্যে ট্রুডো ফের বলেন, ‘‘ওঁর দলবলের মুখ তো বন্ধই হচ্ছিল না!’’
সব মিলিয়ে কাকে নিয়ে কথা হচ্ছে, সরাসরি বোঝা যায়নি বটে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট সকলে জানেন, ট্রাম্পই এত লম্বা সময় ধরে সাংবাদিক বৈঠক করেন। মঙ্গলবারই তিনি ৫০ মিনিট ধরে কথা বলেছেন, যার অনেক কিছুই আগে থেকে ঠিক করা ছিল না। ট্রাম্প আগের বারের ন্যাটো বৈঠকেও একই কাণ্ড করেছিলেন। ন্যাটোর নিয়মনীতিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংবাদমাধ্যমের ডজন ডজন প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
এঁদের মধ্যে রাজকুমারী অ্যান আবার জড়িয়েছেন আর এক বিতর্কে। গত কাল ট্রাম্প যখন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়াকে নিয়ে রানির মুখোমুখি হয়েছেন, তখন অ্যানের দিকে রানি ইশারা করে ট্রাম্পকে স্বাগত জানাতে বলেন। যা দেখে অ্যান কাঁধ ঝাঁকিয়ে বুঝিয়ে দেন, তিনি ওই ব্যাপারে এতটুকু আগ্রহী নন! সেই ভিডিয়োও ছড়িয়ে পড়েছে সংবাদমাধ্যমে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy