রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৪তম সাধারণ সভার মঞ্চে নরেন্দ্র মোদী। ছবি: এএফপি
পাকিস্তানের নাম করলেন না। কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জের ৭৪তম সাধারণ সভার মঞ্চ থেকে ইসলামাবাদের দিকেই তোপ দাগলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আন্তর্জাতিক শান্তি এবং উন্নয়নে ভারত তথা তাঁর সরকারের গত পাঁচ বছরের ভূমিকার কথা ব্যাখ্যা করে জানালেন, “আমরা যখন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলি, তখন তার মধ্যে গোটা বিশ্বকে সতর্ক করার জন্য আমাদের আক্রোশ এবং দায়বদ্ধতা থাকে। আমি বিশ্বাস করি, কোনও একটি দেশ নয়, গোটা বিশ্বমানবতার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এই মুহূর্তে সন্ত্রাসবাদ।”
এ দিন কুড়ি মিনিটের বক্তৃতাকে দু’টি ভাগে ভাগ করে নিয়েছিলেন মোদী। একটি উন্নয়ন, অন্যটি সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সুর চড়ানো। এক দিকে বলেছেন দূষণ রোধ থেকে ডিজিটাল ভারত গড়ার কথা। অন্য দিকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরব হয়ে প্রবল হাততালির মধ্যে বলেন, ‘‘আমাদের দেশ যুদ্ধ নয়, বুদ্ধ দিয়েছে বিশ্বকে।’’
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে আগেই জানা গিয়েছিল, পাকিস্তানের নাম করে তাকে বাড়তি গুরুত্ব না-দেওয়ার কৌশলই এ দিন নেওয়া হবে। কারণ মোদীর বক্তৃতার আধ ঘণ্টার মধ্যেই বক্তব্য রাখবেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তাঁর বক্তৃতার প্রতিটি পরতে যে ভারত-বিদ্বেষ থাকবে, তা জানাই ছিল। তাই এই বিদ্বেষের লড়াইয়ে না-গিয়ে আন্তর্জাতিক সর্বোচ্চ এই মঞ্চে নতুন ভারতের স্বপ্নকেই বিপণন করলেন মোদী।
#WATCH live from US: PM Narendra Modi addresses the 74th United Nations General Assembly in New York. #UNGA https://t.co/rGQwCt70nB
— ANI (@ANI) September 27, 2019
এ দিন বুদ্ধের পাশাপাশি বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বিবেকানন্দ গোটা বিশ্বকে বলেছিলেন শান্তি এবং সম্প্রীতির পথে এগোতে। বিচ্ছিন্নতা, বিরোধিতার পথে নয়। আজও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর উদ্দেশে আমাদের বার্তা এটাই।” তাঁর কথায়, ‘‘সন্ত্রাসবাদ কোনও একটি দেশের পক্ষে বিপজ্জনক নয়, এই বিপদ সমগ্র মানবজাতির এবং আমাদের মধ্যে এই বিষয়ে ঐক্যের অভাব রাষ্ট্রপুঞ্জ প্রতিষ্ঠার নেপথ্য কারণগুলির মূলেই আঘাত হানে। এই পরিস্থিতিতে খণ্ডিত পৃথিবী কোনও দেশের পক্ষেই লাভজনক হতে পারে না। মানবজাতির স্বার্থে আমি বিশ্বাস করি, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবার রুখে দাঁড়ানো একান্ত জরুরি।’’
পাঁচ বছর পর রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় যোগ দিতে এলেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাভাবিক ভাবেই এই মঞ্চটিকে কাজে লাগিয়ে তাঁর সরকারের কাজের খতিয়ান তুলে ধরেছেন। আয়ুষ্মান ভারত থেকে দরিদ্রদের জন্য বাড়ি এবং রাস্তা— সব প্রকল্পের উল্লেখ করেছেন। তাঁর কথায়, কোনও উন্নয়নশীল দেশ যখন এই প্রকল্পগুলি সফল ভাবে রূপায়িত করতে পারে, তখন তা গোটা বিশ্বকেই সদর্থক বার্তা দেয়। একই সঙ্গে পরিবেশ আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘‘বিশ্ব উষ্ণায়নে ভারতের ভূমিকা খুবই কম, কিন্তু তার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা এগিয়ে।’’ তুলেছেন প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে আন্দোলন, সৌর জোট গড়ায় নেতৃত্বদানের মতো বিষয়গুলিও।
আজ সাত দিনের সফর সেরে দেশে ফেরার আগে ভুটান এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী। গত সাত দিনে তিনি এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বৈঠক করেছেন প্রায় ৬০টি দেশের নেতার সঙ্গে। এ ছাড়াও বিভিন্ন বহুপাক্ষিক মঞ্চে যোগ দিয়েছে ভারত। বিদেশ মন্ত্রকের বক্তব্য, পাক-বিরোধিতার সঙ্কীর্ণ সীমানা থেকে বেরিয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে নতুন করে বিভিন্ন শক্তিশালী এবং প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে নিজেদের বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত অক্ষকে ঝালিয়ে নেওয়াটাই ছিল প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্য। আজ বক্তৃতাতে তা তিনি স্পষ্টও করেছেন। গত সাত দিন ধরে ভারতীয় নেতৃত্বও সেই পথেই চলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy