ভারতে রুশ দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, ভ্লাদিমির অঞ্চলের আইনসভার সদস্য পাভেলের মৃত্যুর খবর তাদের কাছে পৌঁছেছে। ছবি: সংগৃহীত।
সসেজ ব্যবসায়ী তথা রাশিয়ার আইনসভার সদস্য হলেও তাঁর আরও একটি পরিচয় হল, তিনি ভ্লাদিমির পুতিনের সমালোচকও। ওড়িশায় ঘুরতে এসে সেই পাভেল অ্যান্টভের মৃত্যুতে ঘনীভূত হয়েছে রহস্য। পুতিনেরই দলের সদস্য পাভেলের রক্তমাখা দেহ মেলে ওড়িশার রায়গড়ের একটি বিলাসবহুল হোটেলের বাইরে। ঠিক দু’দিন আগেই আর এক রুশ পর্যটক তথা পাভেলের সঙ্গীর মৃত্যু হয়েছিল ওই হোটেলেই। ঘটনাক্রমে এর আগে রাশিয়ায় পুতিনের আরও দুই সমালোচকেরও মৃত্যু হয়েছিল এ ভাবেই। তাই পুলিশি তদন্তে একে আত্মহত্যা বলে দাবি করা হলেও পাভেলের মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও কাহিনি রয়েছে কি না, সেই নিয়েই তৈরি হয়েছে জল্পনা।
ভারতে রুশ দূতাবাসের তরফে জানানো হয়েছে, ভ্লাদিমির অঞ্চলের আইনসভার সদস্য পাভেলের মৃত্যুর খবর তাদের কাছে পৌঁছেছে। ওড়িশা প্রশাসনের পাশাপাশি পাভেলের পরিজনের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখেছে দূতাবাস। তবে এখনও পর্যন্ত এই মর্মান্তিক ঘটনায় কোনও অপরাধমূলক সংযোগের খবর মেলেনি।
রাশিয়ার কনসাল জেনারেল অ্যালেক্সেই ইডামকির দাবি, রায়গড়ের ওই হোটেলের চার তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন পাভেল। তাঁর ভারতীয় গাইড জিতেন্দ্র সিংহ ঘটনার খবর শুনেই হাসপাতালে যান। সেখানে জানতে পারেন ভ্লাদিমির রিজিয়নের আইনসভার এই প্রতিনিধিকে মৃত বলে ঘোষণা করেছেন চিকিৎসক।
রায়গড়ের পুলিশ সুপার বিবেকানন্দ শর্মা জানিয়েছেন, ওই হোটেলে ২১ ডিসেম্বর এসেছিলেন পাভেল। সঙ্গে ছিলেন আরও তিন জন। পরের দিন সকালে তাঁদের এক জনের (ভ্লাদিমির বিদেনভ) মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্তে দেখা যায়, হৃদ্রোগে মৃত্যু হয়েছে। বিদেনভের মৃত্যুর পর থেকেই পাভেল হতাশ ছিলেন বলে দাবি ওই পুলিশকর্তার। ঠিক দু’দিন পরে মৃত্যু হয় পাভেলেরও। তাঁদের সঙ্গী অপর দু’জনের কাছে তদন্তে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে পুলিশ। ওড়িশা পুলিশের ডিজি সুনীল কুমার বনসল অবশ্য সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আর তার পরেই পুলিশি তদন্ত নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
এক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের প্রবল সমালোচনা করেছিলেন পাভেল। একে সন্ত্রাস বলেও উল্লেখ করেছিলেন। তবে আচমকাই নিজের মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চান। রুশ প্রেসিডেন্টের সমালোচনার সঙ্গে পাভেলের মৃত্যুর কোনও সংযোগ রয়েছে কি না, তা নিয়েই বাড়ছে ধন্দ। এর আগেও পুতিন সমালোচকদের পরিণতি হয়েছিল পাভেলের মতোই। তাই নিছক আত্মহত্যা নাকি চক্রান্ত করেই খুন করা হয়েছে পাভেলকে, সেই নিয়েই ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য।
পাভেলের মৃত্যুতে সরগরম সমাজমাধ্যম। অনেকের বক্তব্য, পুতিনের এই সমালোচক আচমকাই হোটেলের জানলা থেকে কেন পড়ে গেলেন তা বোঝার জন্য বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই। আবার আর এক জন লিখেছেন, “দুই বন্ধু একসঙ্গে হোটেলে উঠেছিলেন। আলাদা আলাদা ভাবে হলেও মৃত্যু হল দু’জনেরই। নিছক ঘটনাক্রম হিসাবে একে কল্পনা করাটাই কষ্টকর!” অনেকেই সোভিয়েট রাশিয়ার আমলে রুশ গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি-র গোপন অভিযানের ঘটনাও মনে করিয়ে দিয়েছেন।
এ দিকে বারাণসীর এক অতিথিশালায় গত রবিবার উদ্ধার হল ইউক্রেনের এক পর্যটকের ঝুলন্ত দেহ। ২৯ নভেম্বর থেকে সেখানে ছিলেন তিনি। স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে বহু আত্মীয়কে হারিয়েছিলেন কোস্টিয়াটিন বেলিয়াইভ নামে ওই ব্যক্তি। সে কারণে হতাশ ছিলেন। কাশীতে মৃত্যুর পরে মোক্ষলাভের কথাও বলতেন বেলিয়াইভ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy