(বাঁ দিকে) নিহত আবু সাঈদ এবং মুহাম্মদ ইউনূস (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে বৃহস্পতিবার শপথ নেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূস। শুধু তিনি একা নন, উপদেষ্টা কমিটির অন্য সদস্যেরাও শপথ নিয়েছেন। শুক্রবার উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক সারেন ইউনূস। সেই বৈঠক শেষেই তিনি জানান, শনিবার আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে তিনি রংপুর যাবেন। সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে সম্প্রতি উত্তাল হয়েছিল বাংলাদেশ। পথে নেমেছিলেন পড়ুয়ারা। সেই আন্দোলনে সামনের সারিতে ছিলেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র আবু। গত ১৬ জুলাই রংপুরে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন পুলিশের রাবার বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিলেন তিনি। দু’হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে প়ড়েছিলেন আবু। বন্দুক উঁচিয়ে পুলিশ সতর্ক করলেও তিনি দমে যাননি। এগিয়ে গিয়েছেন। পুলিশের বন্দুক থেকে ছুটে আসা রাবার বুলেট তাঁকে বিদ্ধ করে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো যায়নি আবুকে।
মৃত্যুর ঠিক আগে পুলিশর লাঠি-বন্দুকের সামনে দু’হাত ছড়িয়ে অকুতোভয় সাঈদের সেই ভিডিয়ো দ্রুত ভাইরাল হয়েছিল সমাজমাধ্যমে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, পরবর্তী সময়ে ছাত্র আন্দোলন জোরদার করে তোলার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নিয়েছিল পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক টান করে থাকা সাঈদের সেই প্রতিবাদের ছবি। তিনি ছিলেন আন্দোলনকারী মঞ্চ ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর অন্যতম ‘সমন্বয়ক’ও।
আবুর মৃত্যু নাড়া দিয়েছিল গোটা বিশ্বকে। অনেকের দাবি, আবুর মৃত্যুর পর ছাত্র আন্দোলনের ঝাঁজ আরও বৃদ্ধি পায়। শেষে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দেয়। সেই রায়ে আদালত জানায়, মাত্র সাত শতাংশ সংরক্ষণ থাকবে। কিন্তু তার পরেও আন্দোলন থামেনি। নতুন দাবিতে পড়ুয়ারা আন্দোলন চালিয়ে যান। আন্দোলন চলাকালীন মৃত্যু হয় অনেকের। মৃত পড়ুয়াদের ঘটনার তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তির দাবি ওঠে। তবে শেষ পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যান। সেই দাবি, শেখ হাসিনার সরকারের পতন।
লাগাতার আন্দোলনের জেরে গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ছাড়েন হাসিনা। বর্তমানে তিনি ভারতে আছেন। হাসিনা দেশ ছাড়ার পর থেকেই বাংলাদেশে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের দাবি, অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করতে হবে। সেনা শাসন মানবেন না তাঁরা। ইউনূসের নেতৃত্বে সরকারের দাবি জোরদার হয়। শেষ পর্যন্ত সেই দাবি মেনে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথা ঘোষণা করা হয়। শুক্রবার বাংলাদেশের অতিথি ভবন ‘যমুনা’য় বৈঠক করেন ইউনূস। তার পরই রংপুরে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy