চার দিনের সফরে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে গিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব আন্তোনিয়ো গুতেরেস। শুক্রবার সে দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কক্সবাজারে যান তিনি। সেখানে গিয়ে তিনি বেশ কয়েকটি রোহিঙ্গা শিবির ঘুরে দেখেন।
দুপুর ১২টা ৪৮ মিনিটে ইউনূস এবং গুতেরেসকে নিয়ে একটি বিমান কক্সবাজারে অবতরণ করে। দু’জনকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা এবং ত্রাণ দফতরের উপদেষ্টা ফারুক ই আজ়ম। কক্সবাজারে নেমে সেখানকার বিমানবন্দরে একটি সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করেন ইউনূস। তার পর রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবকে নিয়ে রওনা দেন খুরুশকুল শরণার্থী শিবিরে।
ঘোষিত সূচি মোতাবেক সন্ধ্যার দিকে প্রায় এক লক্ষ রোহিঙ্গার সঙ্গে গণ ইফতারে যোগ দেবেন ইউনূস এবং গুতেরেস। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথাও বলবেন তাঁরা। তার পর দু’জনেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন। শনিবার ঢাকায় একাধিক কর্মসূচি রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিবের।
প্রসঙ্গত, মায়ানমার থেকে প্রাণ বাঁচাতে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে রাষ্ট্রপুঞ্জ বাংলাদেশের পাশেই থাকবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত মাসে ইউনূসকে চিঠি দিয়েছিলেন গুতেরেস। পর্তুগালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী গুতেরেস ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপুঞ্জের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তার আগে ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ছিলেন। তাই রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট এবং সে সংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে আগে থেকেই তিনি অবগত। এ বারের বাংলাদেশ সফরে তিনি ঢাকাকে শরণার্থী সমস্যার মোকাবিলায় বড় সাহায্যের কথা ঘোষণা করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এর আগে তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন ২০১৮ সালে।
ফেব্রুয়ারিতে ইউনূসকে লেখা চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, মায়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা এবং সেখানকার রাজনৈতিক সঙ্কটের স্থায়ী সমাধানের জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এবং মায়ানমারে নিযুক্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের কর্মীদেরও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মায়ানমারে সাম্প্রতিক গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সমস্যাটিকে রাষ্ট্রপুঞ্জ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বিবেচনা করছে বলেও ইউনূসকে চিঠিতে জানিয়েছিলেন গুতেরেস।