Advertisement
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪
US

‘লুকিয়ে পড়বেন না মিঃ প্রেসিডেন্ট’! সুযোগ পেয়েই ট্রাম্পকে খোঁচা চিনের

হংকংয়ের উপর চিনা নিয়ন্ত্রণ কায়েম হওয়ার পথে বরাবর বাধা দিয়েছে আমেরিকা।

ট্রাম্পকে খোঁচা চিনের। —ফাইল চিত্র।

ট্রাম্পকে খোঁচা চিনের। —ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২০ ১৯:৫৬
Share: Save:

জর্জ ফ্লয়েড হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে গোটা আমেরিকা। সুযোগ বুঝে মাঠে নেমে পড়েছে চিন। তাদের কথায়, মার্কিন সমাজে বর্ণবৈষম্য এবং পুলিশি নৃশংসতা জাঁকিয়ে বসেছে। এমন পরিস্থিতিতে‌ অন্য দেশগুলিতে ঝামেলা না পাকিয়ে নিজেদের সমস্যাগুলো কী ভাবে মেটানো যায়, সে দিকে মন দেওয়া উচিত মার্কিন রাজনীতিকদের।

চেক জালিয়াতির অভিযোগে গত সপ্তাহে মিনিয়াপলিসে জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গকে নৃশংস ভাবে খুন করে সেখানকার পুলিশ। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বলে বার বার আর্জি জানাতে থাকলেও, হাঁটু দিয়ে তাঁর গলা চেপে বসে থাকেন এক পুলিশকর্মী। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে সেই ভিডিয়ো সামনে আসতেই বিক্ষোভের শুরু হয় দেশ জুড়ে। গত কয়েক দিনে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তা হিংসাত্মক আকারও ধারণ করেছে।

শুক্রবার পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে হোয়াইট হাউসের কাছাকাছি এলাকায় বিক্ষোভ চলাকালীন নিরাপত্তার খাতিরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আন্ডারগ্রাউন্ড বাঙ্কারে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেই খবর সামনে আসতেই আসরে নেমে পড়েছে চিন। হংকংয়ের উপর চিনা নিয়ন্ত্রণ কায়েম হওয়ার পথে বরাবর বাধা দিয়েছে আমেরিকা। সম্প্রতি চিনা পার্লামেন্ট হংকংকে নিরাপত্তা বিলের আওতায় আনার প্রস্তাবে সমর্থন জানালে, তার বিরুদ্ধেও সরব হয় ওয়াশিংটন। তাই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তীব্র কটাক্ষ করেছে তারা।

আরও পড়ুন: আমেরিকা জ্বলছে, শুক্রবার রাতে বাঙ্কারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ট্রাম্পকে!​

সোমবার বেজিংয়ে সাংবাদিক বৈঠক চলাকালীন চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিজিয়ান ঝাও বলেন, ‘‘মার্কিন সমাজে বর্ণবৈষম্য এবং পুলিশি নৃশংসতা কতটা গভীর ভাবে জাঁকিয়ে বসেছে, জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুই তা দেখিয়ে দিল।’’ বর্ণবৈষম্য দূর করে কী ভাবে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা যায়, তা নিয়ে মার্কিন সরকারকে ভাবনা চিন্তা করতে হবে বলেও পরামর্শ দেন তিনি।

শুধু তাই নয়, রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার উপপ্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কির একটি মন্তব্যও রিটুইট করেন ঝাও, যাতে বলা হয়, ‘‘হংকংয়ে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাইছে চিন। কিন্তু তাতে বাধা দিচ্ছে আমেরিকা। অথচ নিজেদের দেশে গায়ের জোরে বিক্ষোভ দমন করছে তারা।’’

শুধুমাত্র লিজিয়ান ঝাওই নন, জর্জ ফ্লয়েডের শেষ বাক্য উদ্ধৃত করে গত কাল টুইটারে ‘‘আমি শ্বাস নিতে পারছি না’’ বলে লেখেন চিনা বিদেশমন্ত্রকের আর এক মুখপাত্র হুয়া চুনিংও। সেই সঙ্গে মার্কিন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র মর্গ্যান ওর্টাগাসের হংকং নিয়ে লেখা একটি টুইটও তুলে ধরেন তিনি, যেখানে চিনা আগ্রাসনের বিরুদ্ধে হংকংয়ের বিক্ষোভকারীদের স্বাধীনতার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন মর্গ্যান।

এ ব্যাপারে পিছিয়ে নেই চিনা রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস এবং তাদের সম্পাদক হু শিজিনও। মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি একসময় হংকংয়ের বিক্ষোভের প্রশংসা করেছিলেন। তাঁকে উল্লেখ করে হু শিজিন লেখেন, ‘‘মার্কিন হাউস স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি হংকংয়ের হিংসাত্মক বিক্ষোভে দেখে বলেছিলে অসাধারণ দৃশ্য। আশা করি এ বার বাড়ির জানলা থেকে একই ধরনের দৃশ্য উপভোগ করছেন মার্কিন রাজনীতিকরা।’’

আরও পড়ুন: সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল, বিতর্কের মধ্যেই বার্তা চিনা বিদেশমন্ত্রকের​

এমন পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিসের পিছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ডের মুখ লুকনো উচিত নয় বলেও মন্তব্য করেন হু শিজিন। তাঁর কথায়, ‘‘মিস্টার প্রেসিডেন্ট, সিক্রেট সার্ভিসের পিছনে লুকোবেন না। তার চেয়ে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলুন। সমঝোতায় আসার চেষ্টা করুন। ঠিক যেমন ভাবে হংকংয়ের দাঙ্গাবাজদের সঙ্গে চিনকে আলোচনায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন আপনি।’’ তবে ট্রাম্পকে কটাক্ষ করলেও জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে যাঁরা হিংসাত্মক বিক্ষোভের পথ বেছে নিয়েছেন, তাঁদের চিন সরকার তাঁদের একেবারেই সমর্থন করে না বলেও জানিয়ে দেন তিনি।

তবে শুধু চিন বা রাশিয়াই নয়, জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুর ঘটনায় মার্কিন সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছে ইরানও। ‘‘কেউ কেউ ভাবেন কৃষ্ণাঙ্গদের জীবনের কোনও মূল্য নেই’’, এমন টুইট করতে দেখা যায় সে দেশের বিদেশমন্ত্রী মহম্মদ জাভেদ জরিফকে। বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বের একজোট হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।

অন্য বিষয়গুলি:

US George Floyd Donald Trump China Russia Iran
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy