Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

ধ্বংসের পাহাড়ে মার্জারদের বন্ধু

খুব ছোট থেকেই বেড়ালদের বড় ভালবাসেন মহম্মদ। একটু বড় হতে ইলেকট্রিকের কাজ শিখেছিলেন। যা পেতেন, তাই দিয়ে মাংসের দোকান থেকে ছাঁট মাংস এনে পাড়ার বেড়ালদের দিতেন।

আদর: পোষ্য কাঁধে মহম্মদ আলা আল-জলিল। ছবি: এএফপি

আদর: পোষ্য কাঁধে মহম্মদ আলা আল-জলিল। ছবি: এএফপি

সংবাদ সংস্থা
আলেপ্পো শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৯ ০১:২৪
Share: Save:

যুদ্ধ, বোমা, বিমান হানা— কোনও কিছুই সিরিয়ার মহম্মদ আলা আল-জলিলকে আলেপ্পো থেকে সরাতে পারেনি। ম্যাও ম্যাও করে ওরা অসহায় ভাবে ডাকতেই থাকবে, আর মহম্মদ পালিয়ে যাবেন, তা কি হয়? ধ্বংসস্তূপ থেকে পরিত্যক্ত বেড়ালদের উদ্ধার করে নিয়ে আসাই এখন তাঁর অন্যতম প্রধান কাজ।

খুব ছোট থেকেই বেড়ালদের বড় ভালবাসেন মহম্মদ। একটু বড় হতে ইলেকট্রিকের কাজ শিখেছিলেন। যা পেতেন, তাই দিয়ে মাংসের দোকান থেকে ছাঁট মাংস এনে পাড়ার বেড়ালদের দিতেন। সিরিয়ায় তখন যুদ্ধ শুরু হয়নি। ২০১১ সালে যখন যুদ্ধ বাধল, সেই তখন থেকে মহম্মদ অ্যাম্বুল্যান্স চালকের কাজ নিয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তো পালন করছেনই। সেই সঙ্গে চলছে মার্জারদের পরিচর্যা। বস্তুত যুদ্ধে মহম্মদের দায়িত্ব আরও বেড়ে গিয়েছে। পাড়ার বেড়ালরা তো ছিলই। শহর ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় বাকি বেড়ালদেরও দেখার আর তেমন লোক নেই। উপরন্তু বহু পরিবার কোনও মতে প্রাণ হাতে নিয়ে এলাকা ছেড়েছে। অনাথ হয়ে গিয়েছে তাদের পোষ্যরা। মহম্মদ এদের সকলের দেখভাল করা শুরু করলেন। বন্ধুবান্ধবদের থেকে ধার নিয়ে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে চাঁদা তুলে তৈরি করলেন বেড়ালদের একটা আস্তানা। ২০১৬-য় যখন রাসায়নিক হামলা হল, ক্লোরিন বোমা পড়ল সেই আস্তানার উপরেও। ১৭০টা বেড়াল— অধিকাংশই মরে গেল, কেউ কেউ ছিটকে গেল এ-ধার ও-ধার। খোঁজ আর মিলল না। মহম্মদকেও এ বার সরতে হল অন্যত্র। আলেপ্পোরই অন্য এক জেলা, কেফার নাহা-য়।

তবে ধ্বংস তো সেখানেও আছে, আছে পরিত্যক্ত বেড়ালদের নতুন বাহিনী। দু’বছর পর মহম্মদ আবারও গড়ে তুলেছেন নতুন মার্জার-আশ্রয়। প্রিয় বেড়াল আরনেস্তো-র নামেই সে বাড়ির নাম। আছেন এক পশু চিকিৎসকও। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে আসা চাঁদাই ৪৪ বছরের মহম্মদকে সাহায্য করছে। সবাই এখন তাঁকে ‘আলেপ্পোর বেড়াল-বন্ধু’ বলে ডাকে।

অন্য বিষয়গুলি:

Aleppo Cats
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE