নরেন্দ্র মোদী।
পাকিস্তান-সহ সার্ক দেশগুলিকে সঙ্গে নিয়ে ‘করোনা-কূটনীতি’ শুরু করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ টুইট করে তিনি বলেন, ‘‘সার্কভুক্ত রাষ্ট্রগুলির নেতৃত্বকে আহ্বান জানাচ্ছি, করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য শক্তিশালী কৌশল রচনা করতে। কী ভাবে আমাদের নাগরিকদের সুস্থ রাখা যায়, তা নিয়ে আমরা ভিডিয়ো কনফারেন্স-এর মাধ্যমে আলোচনা করতে পারি। একত্রে গোটা বিশ্বের সামনে এক উদাহরণ তৈরি করতে পারি আমরা। একই সঙ্গে সুস্থতর পৃথিবী গড়তে অবদান রাখতে পারি।’’
প্রধানমন্ত্রী এই টুইট করার পরই একে একে সার্কভুক্ত দেশগুলির পক্ষ থেকে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সাড়া আসতে থাকে। বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভুটান, আফগানিস্তান, মলদ্বীপের নেতারা টুইট করেন। বাংলাদেশের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী মহম্মদ শাহরিয়র আলম বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রস্তাবটিকে স্বাগত জানাচ্ছেন। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং নেপাল, ভুটান, মলদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার নেতাদের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার জন্য প্রস্তুত।’’ নেপালের প্রধানমন্ত্রী কে পি ওলি বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তা স্বাগত জানাই। আমার সরকার সার্ক-এর সদস্যরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত।’’ ভুটানের প্রধানমন্ত্রীও মোদীর উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘একেই বলে নেতৃত্ব। এই অঞ্চলের সদস্য হিসেবে আমাদের একসঙ্গে এগিয়ে আসা উচিত। ছোট ছোট অর্থনীতির দেশগুলিতে আঘাত লাগে বেশি। আমাদের অবশ্যই সহযোগিতা করা উচিত। আমি নিশ্চিত আপনার (নরেন্দ্র মোদীর) নেতৃত্বে দ্রুত ফল পাওয়া যাবে। ভিডিয়ো কনফারেন্স-এর জন্য অপেক্ষা করছি।’’ একই ভাবে মোদীর টুইটকে স্বাগত জানান আফগান প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র সাদিক সিদ্দিকি, এবং মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মহম্মদ সলিহ।
অধিকাংশ সার্কভূক্ত রাষ্ট্র মোদীর প্রস্তাবকে স্বাগত জানালেও রাত পর্যন্ত পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বিষয়টি নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য শোনা যায়নি। কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, মোদী চাইলেই পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে এই জোট তৈরি করতে পারতেন। ঠিক যে ভাবে তিনি গত বছরের মে মাসে তাঁর দ্বিতীয় দফার শপথ গ্রহণের সময় সার্কভুক্ত রাষ্ট্রদের না-ডেকে, তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন বিমস্টেক গোষ্ঠীর সদস্য রাষ্ট্রদের, যেখানে পাকিস্তান নেই। কিন্তু তা না-করে, তিনি এখানে পাকিস্তানকেও এই উদ্যোগে শামিল করতে চাইলেন কেন, তা নিয়ে বিভিন্ন শিবিরে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।
আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসের প্রশ্নে পাকিস্তানের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ চলেছে ভারতের। কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করে নেওয়ার পরে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত-বিরোধিতাকে উচ্চগ্রামে নিয়ে গিয়েছেন। পাকিস্তানের সঙ্গে দীর্ঘদিনের টানাপড়েনের কারণে ৪ বছর বন্ধ রয়েছে সার্ক সম্মেলন। আজ কার্যত সার্ককে ফের জাগিয়ে তুলে সচেতন ভাবেই করোনাভাইরাস মোকাবিলার মঞ্চে পাকিস্তানকেও রাখল সাউথ ব্লক। সূত্রের মতে, আন্তর্জাতিক স্তরে ভারত এই বার্তাই দিতে চাইল যে, সমূহ সঙ্কটের সময়ে নিজেদের দ্বিপাক্ষিক বৈরিতার ঊর্ধ্বে উঠে উদারতা দেখাতে নয়াদিল্লি পিছপা নয়। বল এ বার পাকিস্তানের কোর্টে। ইসলামাবাদ সূত্রের খবর, বিষয়টিকে ইতিবাচক ভাবেই দেখা হচ্ছে। পাক বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র আইশা ফারুকি আগেই জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন তাঁরা। প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতিও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে তাঁরা রাজি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy