দেশপ্রিয় পার্ক। দেখা হচ্ছে, নবমীর দিন। ঠিক বিকেল পাঁচটায়। থুড়ি রাত সাড়ে দশটায়।
মেসেজটা পাঠিয়ে মুচকি হাসলেন সৃঞ্জয়। লন্ডনের বহুজাতিক সংস্থায় কাজ করেন তিনি। শেষ কবে পুজোর কলকাতার আমেজ গায়ে মেখেছেন— মনেও পড়ে না। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে, গড়িয়াহাটে পুজোর ভিড় ঠেলে ছেলেবেলার বন্ধু রোহনের সঙ্গে ঝাল ফুচকা খেতে। কিংবা দেশপ্রিয় পার্কে বসে আড্ডা! বড় মিস করেন পুজোর শহরটাকে। তবে এ বার দেশপ্রিয় পার্কের আড্ডাটা হচ্ছেই তা এক রকম নিশ্চিত সৃঞ্জয়। বহু বছর পরে রোহনের সঙ্গে জমিয়ে গপ্পো হবে। নবমীতে।
না, পুজোয় কলকাতা ফিরছেন না সৃঞ্জয়। লন্ডনের ইলিং টাউন হলে বসেই দেশপ্রিয় পার্কে রোহনের সঙ্গে গপ্পো জুড়়বেন তিনি। সঙ্গী হতেই পারে ভার্চুয়াল ফুচকা! শুধু সময়টা একটু হিসেব করে নিতে হবে দু’জনকে। এ বার ‘গ্লোবাল কানেক্ট’–এর হাত ধরে এ ভাবেই দূরত্ব ঘুচতে চলেছে কলকাতা আর লন্ডনের। বিদেশে থেকেও ঘরের পুজোর আনন্দ চেটেপুটে নিতে কোমর বাঁধছেন প্রবাসীরা।
কী এই ‘গ্লোবাল কানেক্ট’?
লন্ডন শারদোৎসব পুজোর তরফে অনির্বাণ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ বছর দেশপ্রিয় পার্ক এবং চেতলা অগ্রণী সংঘের পুজো সরাসরি দেখানো হবে তাঁদের পুজো প্রাঙ্গনে। শুধু দেখাই নয়, কলকাতার সঙ্গে লন্ডন যাতে রীতিমতো আড্ডা দিতে পারে— তার বন্দোবস্তও করেছেন তাঁরা। সৌজন্যে প্রযুক্তি। লন্ডন শারদোৎসব ছাড়াও এই প্রয়াসে হাত মিলিয়েছে বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন মিডল্যান্ডস এবং ওয়েলস পুজো কমিটি। আগে কলকাতার পুজো ভিডিও করে এনে দেখানো হতো। কিন্তু সরাসরি সম্প্রচারের মজাটা ছিল না তাতে।
লন্ডনের পুজো প্রাঙ্গনে থাকবে বিশাল পর্দা। সেখানে দেখানো হবে কলকাতার পুজো। একই রকম পর্দা থাকবে কলকাতার পুজো প্রাঙ্গনেও। সেখানে দেখা যাবে লন্ডনের নামি পুজোগুলি। দেশপ্রিয় পার্ক পুজো কমিটির তরফে সুদীপ্ত কুমার জানালেন, পুজো প্রাঙ্গনে থাকছে একটি বড় পর্দা। তাতে দেখানো হবে লন্ডনের বড় বড় পুজোর পাশাপাশি দিল্লি এবং মুম্বইয়েরও বেশ কয়েকটি পুজো। কলকাতা থেকে কেউ লন্ডনের পুজোয় কারও সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তাঁকে ক্যামেরার সামনে এনে মাইক ধরিয়ে দেওয়া হবে। প্রবাসের যে পুজোর সঙ্গে তখন কথা হবে, সেটির ছবি বড় হয়ে সামনে চলে আসবে। বাকিগুলি ছোট হয়ে পর্দার ধারে সরে যাবে। এ ভাবেই সরাসরি আড্ডা দেওয়া যাবে কলকাতা থেকে লন্ডনে। বিকেল পাঁচটা থেকে ঘণ্টা আটেক চলবে আড্ডার এই আসর।
চেতলা অগ্রণী ক্লাবের তরফে সন্দীপ মুখোপাধ্যায় জানালেন, স্কাইপে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ তাঁদের পুজোতেও থাকছে। লন্ডন ছাড়াও প্যারিস, সিঙ্গাপুর, দোহা-সহ বিশ্বের মোট ২০টি শহরের পুজোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তাঁরা। চেতলায় মণ্ডপের মোট তিনটি জায়গায় লাগানো থাকবে ক্যামেরা। তার মাধ্যমে পুজোর নানা খুঁটিনাটি দেখতে পাবে প্রবাসের পুজোগুলি। একই ভাবে চেতলায় বসেও দেখা যাবে ওই ২০টি শহরের পুজো। পঞ্চমীর দিন থেকেই চেতলায় শুরু হয়ে যাবে ‘গ্লোবাল কানেক্ট’-এর আড্ডা। লন্ডন শারদোৎসবের তরফে অনির্বাণ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “চেতলায় বসে দাদুও তাঁর লন্ডনের নাতির সঙ্গে গল্প করতে পারবেন”।
মানচিত্রের দূরত্ব টপকে পুজোর প্রাঙ্গনে এ ভাবেই আড্ডা দেবে কলকাতা আর লন্ডনের বাঙালি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy