মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন।
মার্কিন নির্বাচনে চিনা জুজুকে প্রধান বিষয় করতে চায় ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের সেই প্রচারে গুরুত্ব পেয়ে যাচ্ছে লাদাখে ভারত-চিন সংঘাতের বিষয়টিও। যদিও ভারতের বিদেশ মন্ত্রক পারস্পরিক মত বিনিময়ের রাস্তা খোলা রাখতে নরম সুরই নিয়ে চলেছে, মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন শুক্রবার সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে লাদাখের সমস্যা মিটবে বলে তিনি মনে করেন না। কারণ, ‘শান্তি স্থাপনের সদিচ্ছা’ চিনের নেই। তাঁর কথায়, “গায়ের জোরে ভারতের ভূখণ্ড দখল করে রাখাই তাদের উদ্দেশ্য।”
টোকিয়োয় কোয়াড বৈঠকের পরে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা সেরে মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো আবার শুক্রবারই সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লাদাখে এলএসি-তে ৬০ হাজার চিনা সেনা মোতায়েন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পম্পেয়োর কথায়, “দখলদারি বজায় রাখতেই চিনের এই পদক্ষেপ। গোটা বিশ্ব ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে। অনেক ছাড় এত দিন পেয়েছে চিন। ট্রাম্প প্রশাসন চিনকে আর ছাড় দিতে রাজি নয়।”
কয়েক মাস ধরেই চিনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তাঁর মন্ত্রী ও উপদেষ্টারা। কিন্তু ভারতের বিদেশ মন্ত্রক এখনই চিনের বিরুদ্ধে এতটা আক্রমণাত্মক হচ্ছে না। লাদাখের সমস্যা দ্বিপাক্ষিক স্তরে মেটাতে সামারিক ও কূটনৈতিক পর্যায়ে নানা ধাপে আলোচনা শুরু হয়েছে। আক্রমণাত্মক কৌশল নিলে এই প্রক্রিয়া ধাক্কা খাবে মনে করেই সংযমী জয়শঙ্করের মন্ত্রক। চিনের বিরুদ্ধে বিশ্বের চারটি গুরুত্বপূর্ণ দেশকে এক অবস্থানে আনতেই টোকিয়োয় কোয়াড সম্মেলন ডাকা হয়েছিল মূলত আমেরিকার উদ্যোগে। কিন্তু সেই সম্মেলনে পম্পেয়ো যতটা চালিয়ে ব্যাট করেন, অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও ভারতের বিদেশমন্ত্রীদের বক্তৃতা ছিল যথেষ্ট সংযমী। অস্ট্রেলিয়াও মার্কিন সুরে গলা না-মেলানোয় অনেকে বিস্ময় প্রকাশ করেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে রফতানি বাণিজ্যের ভারসাম্য এতটাই চিনের পক্ষে হেলে, ‘যুদ্ধং দেহি’ মনোভাবে অস্ট্রেলিয়া বিপাকে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তুলনায় জাপান খানিকটা কঠোর অবস্থান নিলেও কোয়াড সম্মেলনের পরে কোনও যৌথ বিবৃতি না-আসায় বোঝা গিয়েছে, চার দেশ একসুর হতে পারেনি। পরে তারা যে আলাদা আলাদা বিবৃতি দেয়, তাতে সেটা আরও স্পষ্ট হয়েছে।
কিন্তু মার্কিন মন্ত্রী-উপদেষ্টারা তাঁদের সুর ধরে রাখতে মরিয়া। বিদেশসচিব পম্পেয়ো টোকিয়োয় বলেন, “আজ বিশ্ব যদি লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ড দখল দেখে চুপ করে থাকে, চিনের কাছে কাল ভূখণ্ড হারাতে হবে অনেককে। সব দেশকে তাই ভারতের পাশে দাঁড়াতে হবে।” পম্পেয়োর কথায়, করোনার উৎপত্তি ও প্রসারে চিনের ভূমিকা নিয়ে তদন্ত চাওয়া মাত্রই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে
আগ্রাসী হয়েছে চিন। কোয়াড-এ বিশ্বের চারটি গণতান্ত্রিক দেশ এক হয়ে চিনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সে বার্তা সব দেশেরই অনুধাবন করা উচিত।
একই সুর মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও’ব্রায়েনের গলাতেও। তিনি বলেন, “অন্যের ভূখণ্ডে দখলদারিকে কমিউনিস্ট চিন নীতি হিসেবে নিয়েছে। উদাহরণ লাদাখে হিমালয়ের কোলে ভারতের সঙ্গে এলএসি। সেখানে তারা যে দখলদারি কায়েম করেছে, তা সরে আসার জন্য নয়। আলোচনা করে তাদের সরানো যাবে না।” ভারতের বিদেশ মন্ত্রক অবশ্য চিনের সঙ্গে সমস্যা মেটাতে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রক্রিয়ার উপরেই ভরসা রাখছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy