Know Why 1972 was the longest year in history dgtl
Leap Second
Leap Second: অদ্ভুত এক কারণে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বছর ১৯৭২, কেন জানেন?
লিপ ইয়ার হওয়ার পাশাপাশি আরও একটি কারণে এটিই হল এখনও পর্যন্ত দীর্ঘতম বছর।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০২১ ১৩:৩৭
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১২৩
দীর্ঘতম বছর কোনটি? পরীক্ষার খাতায় যদি এমন প্রশ্ন আসে তার উত্তর কী হবে? একটু ভেবে দেখুন তো।
০২২৩
নিশ্চয় ভাবছেন লিপ ইয়ারের কথা। লিপ ইয়ার তো নির্দিষ্ট কোনও একটি বছরে আসেনি। প্রতি চার বছর অন্তরই লিপ ইয়ার আসে। তা হলে দীর্ঘতম বছরের উত্তর নিশ্চয়ই লিপ ইয়ার যুক্ত কোনও বছর হবে না।
০৩২৩
উত্তর হল ১৯৭২ সাল। লিপ ইয়ার হওয়ার পাশাপাশি আরও একটি কারণে এটিই হল এখনও পর্যন্ত দীর্ঘতম বছর। বছরের গড় সময়ের তুলনায় দু’সেকেন্ড বড় ছিল এই সাল।
০৪২৩
১৯৭২ সালে দু’সেকেন্ড অতিরিক্ত সময় থাকার কারণ হল লিপ সেকেন্ড। কী ভাবে দীর্ঘতম বছর হল ১৯৭২ সাল?
০৫২৩
নিজের অক্ষের চারপাশে ঘুরতে পৃথিবীর সময় লাগে মোটামুটি ২৪ ঘণ্টা এবং সূর্যের চারপাশে ঘুরতে মোটামুটি ৩৬৫ দিন। পৃথিবীর এই ঘোরার উপর নির্ভর করেই দিনরাত, জোয়ার-ভাটা এবং ঋতু পরিবর্তনের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক বিষয়গুলি ঘটে থাকে।
০৬২৩
ছোট থেকেই ভূগোল বইয়ে এগুলিই পড়ে আসছি আমরা। কিন্তু পৃথিবীর গতি সব সময়ই একই থাকে না। পৃথিবীর এই গতি নির্ভর করে অনেকগুলি প্রাকৃতিক বিষয়ের উপর।
০৭২৩
কখনও পৃথিবীর গতি সামান্য বেড়ে যায় আবার কখনও সামান্য কমেও যায়। জোয়ার-ভাটা, অগ্ন্যুৎপাত এই সমস্ত প্রাকৃতিক ঘটনাবলীই এর জন্য দায়ী।
০৮২৩
পৃথিবী নিজের অক্ষের চারপাশে একপাক দিতে যে ২৪ ঘণ্টা সময় নিয়ে থাকে তার উপর ভিত্তি করেই আন্তর্জাতিক সময় নির্ধারণ করা হয়। ২৪ ঘণ্টায় ৮৬ হাজার চারশো সেকেন্ড রয়েছে।
০৯২৩
দেখা গিয়েছে, পৃথিবীর গতি ধীরে বা দ্রুত হয়ে গিয়ে অনেক সময়ই দু’সেকেন্ডের পার্থক্য হয়ে যায়।
১০২৩
এই দু’সেকেন্ডের পার্থক্যের যদি সঠিক বিন্যাস না করা যায় তা হলে আমাদের স্বাস্থ্যের হয়তো কিছু যায় আসে না কিন্তু দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় অনেক প্রভাব পড়বে। এমন পরিস্থিতিও হয়তো আসতে পারে যখন রাত ১২টায় হয়তো আপনার ঘড়ি সময় দেখাবে দুপুর তিনটে।
১১২৩
পৃথিবীর গতির সঙ্গে আমাদের ব্যবহার করা ঘড়ির সময়ের সামঞ্জস্য আনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই কিছু সময় অন্তর বিশ্বের সমস্ত ঘড়ির সময়ের বদল করাটাও জরুরি।
১২২৩
বিশ্ব জুড়ে ঘড়ির সময় নির্ধারণের মাপকাঠি হিসাবে দু’ধরনের ঘড়ি ব্যবহার করা হয়। একটি হল অ্যাটমিক ঘড়ি এবং অন্যটি হল কোঅর্ডিনেটেট ইউনিভার্সাল টাইম বা ইউটিসি। ইউটিসি-কে গ্রিনিচ গড় সময়ের উত্তরসূরি বলা হয়।
১৩২৩
এ বার ওই বাড়তি দু’সেকেন্ডকে পৃথিবীর আহ্নিক গতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে বিজ্ঞানীরা জেনেবুঝেই নির্দিষ্ট সময় অন্তর বছরের কোনও একটি দিনের এক মিনিটে ৬০ সেকেন্ডের সঙ্গে আরও এক সেকেন্ড সময় যোগ করে দিয়েছেন। ফলে সে ক্ষেত্রে ওই নির্দিষ্ট মিনিটে ৬০-এর বদলে ৬১টি সেকেন্ড থাকবে।
১৪২৩
বছরের এই বাড়তি এক সেকেন্ডকে বলা হয় লিপ সেকেন্ড। কোন বছর লিপ সেকেন্ড ঘড়িতে যোগ করা হবে তা নির্ধারণ করে আন্তর্জাতিক আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেমস সার্ভিস।
১৫২৩
১৯৭২ সাল থেকে লিপ সেকেন্ড যোগ করা শুরু হয়। ৩০ জুন এবং ৩১ ডিসেম্বর— এই দুই দিনেই মূলত লিপ সেপেন্ড যোগ করা হয়।
১৬২৩
সহজ করে বোঝাতে গেলে এই সময় এক সেকেন্ডের জন্য ঘড়িকে থামিয়ে দেওয়া হয়। যে বছর এই লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয় তার অনেক আগে থেকেই ঘোষণা করে দেওয়া হয়।
১৭২৩
১৯৭২ সালই একমাত্র বছর যে বার ৩০ জুন এবং ৩১ ডিসেম্বর দু’বার লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল। ফলে অন্যান্য বছরের তুলনায় দু’সেকেন্ড বেশি ছিল ১৯৭২ সালে।
১৮২৩
১৯৭২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এখনও মোট ২৭ বার লিপ সেকেন্ড যোগ হয়েছে। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত ৩১ ডিসেম্বরে লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল।
১৯২৩
১৯৮০ সালে কোনও লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়নি। তার পর ১৯৮১ থেকে ১৯৮৩ পর্যন্ত ৩০ জুন যোগ করা হয়। ১৯৮৪ সালে ফের কোনও লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়নি।
২০২৩
এ রকম ভাবে ১৯৮৫, ১৯৮৭, ১৯৮৯, ১৯৯০, ১৯৯২, ১৯৯৩, ১৯৯৪, ১৯৯৫, ১৯৯৭, ১৯৯৮-এ একটি করে লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়েছিল। তার পর ২০০৫, ২০০৮, ২০১২, ২০১৫, ২০১৬-এ যোগ করা হয়েছিল।
২১২৩
২০১৬-র পর থেকে এখনও পর্যন্ত আর কোনও লিপ সেকেন্ড যোগ করা হয়নি। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেমস সার্ভিস যদি লিপ সেকেন্ড যোগ করার প্রয়োজন মনে করে তা হলে আগে থেকেই তা ঘোষণা করে জানাবে তারা।
২২২৩
অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থাই লিপ সেকেন্ড বাদ দেওয়ার প্রস্তাব এনেছে। কারণ মিনিটে এক সেকেন্ড যোগ হওয়ার ফলে বহু কম্পিউটার সেই অতিরিক্ত সময় নিয়ন্ত্রণে আনতে পারে না। ফলে সমস্যায় পড়তে হয় বহু সফটওয়্যারকে।
২৩২৩
২০১৫ সালের ৩০ জুন যেমন লিপ সেকেন্ড যোগ করার ফলে শেয়ার বাজার একেবারে ভেঙে পড়েছিল। ওই বছর ব্যাপক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, অ্যামাজনও। যদিও এখনও লিপ সেকেন্ডের বিকল্প কোনও উপায়ে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি।