কিম জং উন। —ফাইল চিত্র
গত বছরটা ছিল বন্ধুত্বের। দু’দেশের ঠান্ডা-যুদ্ধ মিটিয়ে প্রথম উত্তর কোরিয়ার মাটিতে পা রেখেছিলেন কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘কোরিয়ান ডিমিলিটারাইজ়ড জ়োন’-এ দাঁড়িয়ে হাত মিলিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার স্বৈরাচারী শাসক কিম জং উন। তার পরেও বছরভর চলেছে দু’জনের কুশল বিনিময়। কিম চিঠি লিখেছেন ট্রাম্পকে। জবাবে তিনিও লিখে পাঠিয়েছেন দু’কথা। ট্রাম্প বলেছেন কিমের চিঠিটি ‘অসাধারণ’। কিমও জানান, ট্রাম্পের চিঠিটিও নাকি ‘দারুণ’ ছিল। কিন্তু নতুন বছরের
প্রথম দিন নববর্ষের শুভেচ্ছা এল না। বরং বছর শেষে মঙ্গলবার হুঙ্কার ছাড়লেন কিম— ‘‘কোরীয় উপদ্বীপে কোনও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ হবে না।’’
গত কাল উত্তর কোরিয়ার সপ্তম ‘সেন্ট্রাল কমিটি অব দ্য ওয়ার্কারস পার্টি অব কোরিয়া’ বিশেষ বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে কিম ঘোষণা করেন— ‘‘আমেরিকা যদি তাদের শত্রুমনোভাবাপন্ন আচরণ থেকে সরে না আসে, তা হলে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাবে উত্তর কোরিয়া। শুধু তা-ই নয়, এ বার উত্তর কোরিয়ার তৈরি এক নতুন কৌশলগত শক্তিশালী অস্ত্রের সাক্ষী হবে বিশ্ব।’’
আজ নতুন বছরে বিশেষ
বক্তৃতাও দেননি কিম। এর মধ্যেও অন্য ‘গন্ধ’ খুঁজে পাচ্ছেন কূটনীতিকরা। তাঁদের কথায়, বক্তৃতা না দিয়ে কিম আসলে ঠারেঠোরে বোঝাতে চেয়েছেন, গত দু’বছর আমেরিকার সঙ্গে কূটনীতির পথে হেঁটে ভুল করেছেন তাঁরা। ২০১৩ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তৃতা দিয়ে আসছেন কিম। আগে তাঁর ঠাকুরদার আমলে এই
প্রচলন ছিল। সেটিকেই ফিরিয়ে এনেছিলেন কিম। কিন্তু এ বছর তার ব্যতিক্রম ঘটল।
কিমের দেশের অভিযোগ, তারা আমেরিকার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিলেও ট্রাম্পের দেশ সহযোগিতার পথে হাঁটছে না। উত্তর কোরিয়ার উপর থেকে এখনও নিষেধাজ্ঞা তোলেনি আমেরিকা। পাশাপাশি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গেও সামরিক মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে তারা। এই অন্তিম কারণটিতে আরও চটেছেন কিম। তাঁর কথায়, ‘‘আমরাই শুধু প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে যাব, এটা তো হতে পারে না।’’ আরও বলেন, ‘‘নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাব আমরা।’’
জবাব দিয়েছে ওয়াশিংটন। গত কাল রাতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘উনি নতুন করে হুঙ্কার
ছাড়লেও, আমি বিশ্বাস করি, কিম এক কথার মানুষ। পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা বন্ধ রাখার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিম নিশ্চয়ই তা রাখবেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘উনি আমার মতো, আমি ওঁকে পছন্দ করি, আমাদের আবার বন্ধুত্ব হয়ে যাবে। পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে চুক্তিতে সই করেছিলেন কিম। ...উনি এক কথার মানুষ, আমরা সমাধানের পথ খুঁজে বার করবই।’’ মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো বলেন, ‘‘আশা করছি, হিংসার পথ ছেড়ে শান্তির রাস্তা বেছে নেবে ওরা।’’
কোরীয় উপদ্বীপের দৈনিকগুলো জানাচ্ছে, বৈঠকের শেষে কিম-প্রশাসন জানিয়েছে, আমেরিকা ‘গ্যাংস্টার’-এর মতো তাদের উপরে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। নিজেদের দেশের নিরাপত্তা শিকেয় তুলে ওদের কথায় চলতে পারে না উত্তর কোরিয়া। তারা জানিয়েছে,, দেশের নিরাপত্তার কথা মাথায়
রেখে শক্তিশালী অস্ত্র তৈরির কাজ চালিয়ে যাবে উত্তর কোরিয়া। যত
দিন না ট্রাম্প-প্রশাসন বন্ধুর মতো আচরণ করছে, যথাযথ শান্তি-প্রক্রিয়ার পথে হাঁটছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy