কিম জং উনের সৎ ভাই কিম জং নম। ছবি: এপি।
মালয়েশিয়ায় রহস্যজনক ভাবে মৃত্যু হয়েছিল উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনের সৎভাই কিম জং নমের। তিনি আসলে মার্কিন গুপ্তচর ছিলেন বলে এ বার দাবি করল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’ সংবাদপত্র।
সোমবার কিম জং নমকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তারা। তাতে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির মন্তব্য তুলে ধরে বলা হয়, কিম জং নমের সঙ্গে মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র মধ্যে যোগাযোগ ছিল। তবে সে সংক্রান্ত নথিপত্রে বিস্তর ধোঁয়াশাও রয়েছে বলে জানায় তারা।
‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর দাবি, কিম নমের সঙ্গে সিআইএ-র সংযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই বেশি কিছু নথিপত্র হাতে পেয়েছে তারা। তাতে বেশ কিছু জায়গায় ধোঁয়াশা থাকলেও, মার্কিন গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে কিম নমের যোগাযোগের কথা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ওই সমস্ত নথি থেকে জানা গিয়েছে, চিনের দক্ষিণ উপকূলের স্বশাসিত ম্যাকাওয়ে থাকতেন কিম নম। সেখান থেকেই সিআইএ-র সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি। সিআইএ আধিকারিকদের সঙ্গে একাধিক বার বৈঠকও হয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন: আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার জ়ারদারি
তবে এই প্রথম নয়, কিম নম সিআইএ-র চর ছিলেন বলে সম্প্রতি ‘দ্য গ্রেট সাকসেসর’ বইয়ে দাবি করেন সাংবাদিক অ্যানা ফিফিল্ডও। তাতে তিনি জানান, সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ায় নিজের হ্যান্ডলারদের সঙ্গে দেখা করতে যেতেন কিম নম। শেষ বার যখন সিঙ্গাপুর গিয়েছিলেন কিম নম, সেখানে হোটেলের লিফ্টের সিসিটিভি ফুটেজে এশীয় এক সিআইএ-র কর্মীর সঙ্গে তাঁকে দেখা গিয়েছে বলেও জানান তিনি। অ্যানা ফিফিল্ডের দাবি, ওই সময় কিম নমের ব্যাগে ১ লক্ষ ২০ হাজার মার্কিন ডলার ছিল। চরবৃত্তির জন্য মার্কিন সরকার তাঁকে ওই টাকা দিয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা। যদিও কারও কারও মতে, ক্যাসিনো ব্যবসা ছিল কিম নমের। সেই টাকাই নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি।
সিআইএ-র তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে কূটনীতিবিদদের কেউ কেউ দাবি করেছেন, বরাবর কিম জং উনের সমালোচক ছিলেন কিম নম। জীবনের বেশির ভাগ সময়টাই দেশের বাইরে কেটেছে তাঁর। তাই উত্তর কোরিয়ার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত খুঁটিনাটি তাঁর পক্ষে জানা সম্ভব নয়। অন্য দিকে, পরমাণু অস্ত্র সংবরণ নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং উত্তর কোরিয়ার মধ্যে যখন কথাবার্তা জারি, সেইসময় কিম নমের সঙ্গে সিআইএ যোগের এই খবর দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেকে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ভিয়েতনামের হ্যানয়-তে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে একদফা বৈঠক হয় কিম জং উনের। কিন্তু সেখানে কোনও সমাধানে আসতে পারেননি দুই রাষ্ট্রনেতা। তার আগে গতবছর জুন মাসেও একদফা বৈঠক হয় তাঁদের মধ্যে। সেখানে ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু প্রকল্প একেবারে বিসর্জন দিতে রাজি হননি কিম জং উন।
আরও পড়ুন: অভিনন্দন বর্তমানকে টেনে পাক টিভির বিজ্ঞাপন
২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে মুখে ভিএক্স সিন্থেটিক কেমিক্যাল ঘষে দিয়ে তাঁকে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ। কিম জং উনের মদতেই তাঁকে এ ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে সেইসময় অভিযোগ তোলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া। কিন্তু তা অস্বীকার করে পিয়ংইয়ং। কিম নমকে হত্যার অভিযোগে ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামের নাগরিক দুই মহিলাকেও গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু এ বছর ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন তাঁরা।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy