Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Abortion Vote

Abortion Rights: গর্ভপাতের অধিকার মেয়েদের হাতেই, পথ দেখাচ্ছে ক্যানসাস

মাস দু’য়েক পরে স্বস্তির আভাস। সুপ্রিম কোর্টের বিতর্কিত গর্ভপাত-রায়ের বিরুদ্ধে ভোট দিল ক্যানসাস।

হিলারা গর্ভধারণের পরে ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করানোর সুযোগ পাবেন।

হিলারা গর্ভধারণের পরে ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করানোর সুযোগ পাবেন। প্রতীকী ছবি

মহুয়া সেন মুখোপাধ্যায়
বস্টন শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০২২ ০৫:৪৩
Share: Save:

মাস দু’য়েক পরে স্বস্তির আভাস। সুপ্রিম কোর্টের বিতর্কিত গর্ভপাত-রায়ের বিরুদ্ধে ভোট দিল ক্যানসাস। এই প্রদেশের মহিলারা গর্ভধারণের পরে ২০ সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভপাত করানোর সুযোগ পাবেন।

এ বছর ২৪ জুন আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট প্রায় ৫০ বছরের পুরনো রো ভার্সেস ওয়েড মামলার রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে জানিয়েছিল, এ বার থেকে দেশের সব প্রদেশ নিজেরাই আইন এনে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করতে পারবে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের পরে এক দিকে যেমন অ্যালাবামা, টেক্সাসের মতো বেশ কয়েকটি প্রদেশ কড়া গর্ভপাত বিরোধী আইন আনতে উঠেপড়ে লেগেছে, তেমনই আবার ক্যানসাস, মন্টানার মতো কয়েকটি প্রদেশ ভোটের মাধ্যমে বাসিন্দাদের কাছ থেকে জেনে নিতে চাইছে, গর্ভপাত বিষয়ে তাঁদের কী মতামত।

সুপ্রিম কোর্টের কোনও সিদ্ধান্ত নিয়ে যদি নাগরিকদের মধ্যে মতবিরোধ থাকে, তা হলে আমেরিকার ২৬টি প্রদেশে তা নিয়ে ভোটাভুটি করা যায়। সেই প্রদেশে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ বিষয়টির পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দিয়ে, সেটিকে আইনে পরিণত করতে পারেন অথবা তা বেআইনি ঘোষণা করতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাত সংক্রান্ত রায় দেওয়ার পরে ক্যানসাসে তা ব্যালট প্রশ্ন হিসাবে সাধারণ ভোটদাতাদের সামনে তুলে ধরা হয়েছিল। অর্থাৎ, তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, এই প্রদেশে গর্ভপাত আইনি থাকবে, না বেআইনি বলে ঘোষিত হবে।

রিপাবলিকান পার্টির সমর্থক ক্যানসাস একটি রক্ষণশীল প্রদেশ বলেই পরিচিত। ২০২০-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প এই ক্যানসাসে জো বাইডেনের থেকে ১৫ শতাংশ বেশি ভোট পেয়েছিলেন। ফলে গর্ভপাতের বৈধতার মতো একটি বিতর্কিত বিষয় নিয়ে এখানকার মানুষ ভোট দিতে বিশেষ আগ্রহী হবেন, তা আশা করেননি নারী অধিকার ও মানবাধিকার কর্মীরা।

কিন্তু ঘটে গেল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা। রেকর্ড সংখ্যক ভোটারেরা ভোট দিলেন। এবং ভোট দিলেন সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে। কী ভাবে সম্ভব হল এটা? জানা যাচ্ছে, গর্ভপাতকে বৈধতা দিতে নিরন্তর কাজ করে যাচ্ছেন যে সব সমাজকর্মী, তাঁরা ক্যানসাসে একেবারে তৃণমূল স্তর থেকে প্রচার শুরু করেছিলেন। দরজায় দরজায় কড়া নেড়ে বা ফোন করে সাধারণ মানুষকে তাঁরা বোঝানোর চেষ্টা করেছেন যে, মহিলাদের স্বাস্থ্যরক্ষাকে রাজনীতির থেকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাঁরা প্রচারে বলেছিলেন, গর্ভপাত নিষিদ্ধ হয়ে গেলে,অসুস্থ মা, অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে বা কোনও ধর্ষিতা— এঁদের প্রাণের ও মানের কোনও দাম থাকবে না। ভোটের ফল প্রকাশ হওয়ার পরে দেখা যাচ্ছে, সেই প্রচারে কাজ হয়েছে। প্রচুর মানুষ, বিশেষত মহিলারা, সচেতন ভাবে ভোট দিয়েছেন। প্রত্যন্ত জায়গাতেও প্রচুর ভোট পড়েছে। এবং ৫৯ শতাংশ ভোটদাতা রায় দিয়েছেন যে, ক্যানসাসে গর্ভপাত করানো যাবে গর্ভধারণের পরে ২০ সপ্তাহ (বা শেষ মাসিকের পরে ২২ সপ্তাহ) পর্যন্ত। ক্যানসাসের এই ‘অবিশ্বাস্য’ রায়ের পরে প্রেসিডেন্ট বাইডেন মন্তব্য করেন, ‘‘আমেরিকান মহিলাদের ক্ষমতা যে কতটা, সুপ্রিম কোর্ট তা আন্দাজ করতে পারেনি।’’ আর ক্যানসাসের গভর্নর লরা কেলির কথায়, ‘‘ক্যানসাস আজ মানুষের অধিকারের জন্য রুখে দাঁড়িয়েছে। যা মহিলাদের সার্বিক সুস্থতা ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের ক্ষতি করবে, সেই আইনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করলাম।”

এই লড়াই কোন দিকে যাবে তা সময়ই বলে দেবে। নভেম্বরে সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে ভোট হবে মন্টানা ও কেন্টাকিতে। ক্যালিফর্নিয়া আবার আরও এক ধাপ এগিয়ে, সেখানকার নাগরিকদের অধিকার আরও সুরক্ষিত করতে আরও সবিস্তার প্রস্তাব নিয়ে আসছে, যাতে গর্ভপাত ও জন্মনিয়ন্ত্রণের সম্পূর্ণ অধিকার থাকবে মায়েরই। একই ধরনের আইন আনতে চায় ভেরমন্ট-ও। সুপ্রিম কোর্ট গর্ভপাতের মতো জন্ম নিয়ন্ত্রণের অধিকারকেও নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারে, এই আশঙ্কা অনেক প্রদেশেরই। তাই তারা নিজেদের নাগরিকদের অধিকার রক্ষা করতে আগেভাগেই ভোট করাতে চায়।

গভীর আঁধারেও যেমন সম্পূর্ণ আকস্মিকভাবে জ্বলে ওঠে কারও হাতের মশাল, যার আলোয় আবার পথ চলা শুরু হয়, তেমন ভাবেই আশার আলো জ্বালালেন ক্যানসাসের মানুষ। এ বার প্রত্যাশা, সেই আলোয়, কিছুটা হলেও, দূর হবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের অন্ধকার।

অন্য বিষয়গুলি:

Abortion Vote
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy