Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Sunita Williams Reminds Kalpana Chawla

কল্পনা চাওলার ভয়াবহ স্মৃতি এখনও টাটকা, সুনীতাদের নিয়ে তাই ঝুঁকি নিতে নারাজ নাসা

১৮ বছর আগে, ২০০৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, পৃথিবীতে ফেরার সময় বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল ‘কলম্বিয়া’ মহাকাশযান। মৃত্যু হয়েছিল আরও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী কল্পনা চাওলা ও তাঁর ছয় সঙ্গীর।

(বাঁ দিকে) সুনীতা উইলিয়ামস। কল্পনা চাওলা (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) সুনীতা উইলিয়ামস। কল্পনা চাওলা (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০২৪ ১৪:০৯
Share: Save:

দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে আটকে রয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী সুনীতা উইলিয়ামস। সঙ্গী সহকর্মী বুচ উইলমোর। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই নভশ্চরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে। তবু নাসার সিদ্ধান্ত, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মহাকাশেই থাকতে হবে সুনীতাদের।

কেন এই সিদ্ধান্ত? কেন দ্রুত ফেরানোর ঝুঁকি নিতে চাইছে না নাসা? সুনীতাদের অবস্থা কি ফেরাচ্ছে ২০০৩ সালের স্মৃতি? পৃথিবীতে ফেরার পথে বিস্ফোরণে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছিল মহাকাশযান ‘কলম্বিয়া’। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল আরও এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মহাকাশচারী কল্পনা চাওলা ও তাঁর ছয় সঙ্গীর।

১৮ বছর আগে, ২০০৩ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পৃথিবীতে ফেরার সময় বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে সংঘর্ষে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল ‘কলম্বিয়া’ মহাকাশযান। তারও ১৭ বছর আগে, ১৯৮৬ সালে ভেঙে পড়েছিল নাসার মহাকাশযান ‘চ্যালেঞ্জার’। ‘চ্যালেঞ্জার’ ভেঙে পড়ার পর মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে ‘কলম্বিয়া’র দুর্ঘটনাই ছিল দ্বিতীয় বৃহত্তম। এই দুর্ঘটনার পর টানা দু’বছর সব রকমের মহাকাশ অভিযান বন্ধ রেখেছিল নাসা।

সুনীতাদের আটকে পড়া মনে করাচ্ছে সেই দুর্ঘটনার স্মৃতি। তাই এত বাড়তি সতর্কতা। অন্তত এমনটাই জানাচ্ছেন নাসার প্রধান বিল নেলসন। বিল ওই দু’টি মহাকাশযান দুর্ঘটনার তদন্তকারী দলেও ছিলেন। তাঁর তত্ত্বাবধানেই আগের ভুলগুলি থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার আর ঝুঁকি নিচ্ছে না নাসা। ইঞ্জিনিয়ারেরা সুনীতাদের বোয়িং স্টারলাইনার মহাকাশযানের যান্ত্রিক ত্রুটি সমাধানের জন্য দিনরাত কাজ করছেন বটে, তবে সুনীতাদের ফেরাতে বোয়িং-এর পরিবর্তে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে স্পেস এক্স মহাকাশযানের।

বিল বলছেন, ‘‘কলম্বিয়া দুর্ঘটনার সময় নাসার সংস্কৃতি অন্য রকম ছিল। জুনিয়র ফ্লাইট ইঞ্জিনিয়ারেরা ঝুঁকির বিষয়ে আগে থাকতে সতর্ক করলেও কেউ সে কথা কানে তোলেনি। সে বার এড়ানো যায়নি দুর্ঘটনা। কিন্তু একই ঝুঁকির কথা মাথায় রেখে যখন বোয়িংয়ের যান্ত্রিক ত্রুটি নিয়ে সাবধান করছিলেন ইঞ্জিনিয়ারেরা, তখন সকলেই একযোগে সিদ্ধান্ত নেন, দেরি হলেও ২০২৫-এই ফেরানো হবে সুনীতাদের।’’

মহাকাশযান বোয়িং সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার ক্যাপসুলে চড়ে গত ৫ জুন মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার ওই দুই নভশ্চর পাড়ি দিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনের উদ্দেশে। কথা ছিল, দিন কয়েক পরেই ফিরবেন সুনীতারা। কিন্তু মহাকাশযানটিতে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। সব মিলিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে সুনীতাদের ফেরা।

ইতিমধ্যেই ইলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের সঙ্গে যৌথ ভাবে নতুন একটি মহাকাশযান মহাকাশ স্টেশনে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। মিশনটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ক্রু-৯’। সেপ্টেম্বরে মহাকাশযানটি দুই বিজ্ঞানীকে নিয়ে রওনা দেবে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের উদ্দেশে। ফিরতি পথে সুনীতাদের নিয়ে ফেরার কথা। নাসা জানাচ্ছে, সব ঠিকঠাক চললে ফেব্রুয়ারি মাসে ফিরবেন সুনীতারা।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE