Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
অ্যাসাঞ্জ-বোমা

আইএস-হিলারি, ডলার এসেছে একই সূত্র থেকে

ভোটের মুখেই ফের হানা হিলারি শিবিরে। এক লাইন প্রশ্নের জবাবে শুধু ‘হ্যাঁ’ বলেই বোমা ফাটালেন উইকিলিক্স-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:০২
Share: Save:

ভোটের মুখেই ফের হানা হিলারি শিবিরে। এক লাইন প্রশ্নের জবাবে শুধু ‘হ্যাঁ’ বলেই বোমা ফাটালেন উইকিলিক্স-প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। প্রশ্নকর্তা, অস্ট্রেলীয় বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সাংবাদিক ও তথ্যচিত্র নির্মাতা জন পিলগার। প্রশ্নটা ছিল— ‘‘আপনি কি তা হলে মনে করেন, আইএস আর ক্লিন্টন ফাউন্ডেশনে অর্থ একই জায়গা থেকে এসেছে?’’ এফবিআই-এর ঢের আগেই থেকেই হিলারির ই-মেল সার্ভার গুলে খেয়েছেন অ্যাসাঞ্জ। আর সেই সূত্রেই তিনি দাবি করে বসলেন, ‘‘হ্যাঁ, অর্থের জোগান এসেছে সৌদি আরব, কাতার, মরক্কো, বাহরাইন থেকেই।’’

পশ্চিম এশিয়ার এই দেশগুলি যে আইএস ও অন্যান্য সুন্নি জঙ্গি গোষ্ঠীকে চোরাগোপ্তা অর্থ ও যুদ্ধের রসদ দিয়ে আসছে, হিলারি নিজেই তা জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বিশেষ পরামর্শদাতা জন পডেস্টাকে। আর তা নিয়ে সৌদি ও কাতারকে ‘চাপ’ দেওয়ার প্রস্তাবও রেখেছিলেন তৎকালীন বিদেশসচিব। ২০১৪-র সেই ই-মেল গত মাসে ফাঁস করেছিল উইকিলিক্স। হিলারির বিরুদ্ধে মুখ খুলতে গিয়ে ফের সেই ‘পুরনো কাসুন্দিই’ ঘাঁটলেন অ্যাসাঞ্জ। আর দুইয়ে-দুইয়ে-চার করে বললেন, পশ্চিম এশিয়া থেকে অর্থ গিয়েছে ‘ক্লিন্টন ফাউন্ডেশনেও’। যা এ বার ব্যাপক ভাবে কাজে লেগেছে হিলারির প্রচারে। বিদেশসচিব থাকাকালীন হিলারি জমানাতেই আমেরিকা থেকে ৮০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থের অস্ত্র কিনেছে সৌদি আরব। হিলারির ই-মেলেই তার একাধিক বার উল্লেখ রয়েছে বলে দাবি করেছে উইকিলিক্স। পরে ঘুরপথে সেই অস্ত্র জঙ্গি ডেরায় গিয়েছে বলে মত অ্যাসাঞ্জের।

কী ভাবে মেলালেন এই সমীকরণ? অ্যাসাঞ্জের দাবি, এখনও পর্যন্ত হিলারির যে সব ই-মেল ফাঁস হয়েছে, তার মধ্যে এটিই সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ঘটনাচক্রে, সেই ই-মেল প্রাপক জন পডেস্টাই এখন হিলারির ক্যাম্পেন-ম্যানেজার। উইকিলিক্স-সহ একাধিক সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ, ১৯৯৭ সাল থেকে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিন্টনের দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ১০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলারের সাহায্য দিয়েছে সৌদি আরব। সরকারি কোষাগার থেকেই। সূত্রের খবর, গত মাসে বিল ক্লিন্টনের জন্মদিনেও কাতার সরকারের তরফে ফাউন্ডেশনে ১০ লক্ষ ডলার অনুদান এসেছে। প্রশাসনিক পদে থাকার সময় হিলারিও প্রত্যেক মিটিংয়ের জন্য সৌদি ও কাতার থেকে আলাদা আলাদা ভাবে অর্থ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

আইএসের মদতদাতা জেনেও এ সব দেশ থেকে অর্থ নেওয়া হয়েছে কেন, ভোটের আগে ক্লিন্টন ফাউন্ডেশনের বিরুদ্ধে সেই প্রশ্নটাই তুলে দিলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। হিলারি শিবিরে ধেয়ে আসা এই হঠাৎ ধামাকায় দ্বিগুণ উৎসাহে ফুটছেন রিপাবলিকান পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থকেরা। যদিও অ্যাসাঞ্জ মনে করছেন, জিতবেন হিলারিই। কারণ, কোনও ভাবেই জিততে দেওয়া হবে না ট্রাম্পকে। সাংবাদিক জন পিলগারকে তিনি বলেন, ‘‘পরিস্থিতির সবটাই তো ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। প্রাতিষ্ঠানিকতা বলতে যা বোঝায়, ট্রাম্পের ঝুলি সে দিক থেকে একেবারেই শূন্য। বরং গোয়েন্দা সংস্থা, ব্যাঙ্ক, বিদেশি তহবিল থেকে শুরু করে অস্ত্র ব্যবসায়ীরা, এমনকী সংবাদমাধ্যম— সবাই হিলারির পক্ষে।’’

মার্কিন প্রশাসনের লাখো গোপন নথি ফাঁস করে দেওয়া ওয়েবসাইট উইকিলিক্সের প্রতিষ্ঠাতা ২০১২ থেকেই লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তও চলছে আমেরিকায়। সাংবাদিক জন পিলগার সম্প্রতি সেই দূতাবাসেই কথা বলেন অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে। সেই সাক্ষাৎকার আজই বিশ্ব জুড়ে সম্প্রচারিত হওয়ার কথা রাশিয়ার একটি টিভি চ্যানেলে। হিলারি শিবিরের অবশ্য দাবি, এর সবটাই রাশিয়ার চক্রান্ত। পশ্চিম এশিয়া থেকে পাওয়া অনুদান হিলারির নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করা হয়নি বলেও দাবি করেন তাঁরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Julian Assange Clinton ISIS
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy