ছবি রয়টার্স।
সুনামিতে ক্ষতিগ্রস্ত ফুকুশিমা পারমাণবিক কেন্দ্র থেকে ১০ লক্ষ টন তেজস্ক্রিয় জল সরাসরি প্রশান্ত মহাসাগরে ছাড়ার পরিকল্পনায় সায় দিল জাপান। যা ঘিরে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। কেন্দ্রটির অপারেটর ‘টোকিয়ো ইলেকট্রিক পাওয়ার’ ও জাপান সরকার জানিয়েছে, ওই জল পরিশুদ্ধ করে তেজস্ক্রিয়তার মাত্রা বিপজ্জনক স্তরের নীচে নামিয়ে তবেই সমুদ্রে ছাড়া হবে। কিন্তু স্থানীয় মৎস্যজীবী সম্প্রদায় তো বটেই চিন ও দক্ষিণ কোরিয়া জাপানের এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে। টোকিয়ো জানিয়েছে, পারমাণবিক জ্বালানি শীতল করার জন্য ব্যবহৃত এই জল সমুদ্রে মেশানোর কাজ শুরু হতে এখনও দু’বছর। এবং তা শেষ হতে হতে কয়েক দশক লেগে যাবে বলে মনে করছে জাপান।
২০১১ সালের ভূমিকম্প ও সুনামিতে হাইড্রোজ়েন বিস্ফোরণ হয়ে ফুকুশিমার তিনটি পারমাণবিক চুল্লি ধ্বংস হয়ে যায়। অতিরিক্ত তাপের ফলে চুল্লির ভিতরে চাপ সৃষ্টি হওয়ায় অভ্যন্তরভাগ গলে যায় ও শীতলীকরণ প্রক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়। এই চুল্লিগুলিকে ফের ঠান্ডা করতে ১০ লক্ষ টন জল ব্যবহার করা হয়। চুল্লির তেজস্ক্রিয় বর্জ্য মিশ্রিত সেই জল থেকে বর্তমানে শোধন প্রক্রিয়ায় তেজস্ক্রিয় উপাদানগুলি বাদ দেওয়ার কাজ চলছে। কিন্তু ট্রিটিয়াম-সহ আরও কয়েকটি ক্ষতিকর পদার্থ সেই জল থেকে সম্পূর্ণ বাদ দেওয়ার মতো প্রযুক্তি তাদের হাতে নেই বলে জানিয়েছে টোকিয়ো ইলেকট্রিক পাওয়ার’ সংস্থাটি। এ দিকে, সংস্থাটি এ-ও জানিয়েছে, এই জল জমিয়ে রাখার মতো জায়গা বা ট্যাঙ্কের অভাব দেখা যাচ্ছে এ বার। অলিম্পিকের ৫০০ টি সুইমিং পুল ভরে যেতে পারে, এই পরিমাণ জল ইতিমধ্যেই এক হাজার ট্যাঙ্কে ধরে রাখা হয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণে যুক্ত একাধিক সংগঠন প্রথম থেকেই জাপানের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে আসছে। দেশের মৎস্যজীবীদেরও আশঙ্কা, এর ফলে জাপান থেকে মাছ আমদানি করতে চাইবে না বাকি দেশগুলি। ২০১১ সালের পরে এমনিতেও জাপানের উত্তর-পূর্ব উপকূল থেকে সামুদ্রিক খাদ্যের আমদানি নিষিদ্ধ করেছে বেশ কিছু দেশ। টোকিয়োর সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে পড়শি দেশগুলিও। জাপানকে ‘দায়িত্ববানের’ মতো কাজ করার আর্জি জানিয়েছে চিন। চিনের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘আন্তর্জাতিক স্তরে জনস্বার্থ রক্ষার্থে এবং চিনের মানুষের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য বেজিং গভীর আশঙ্কায়।’’ যদিও জাপানের যুক্তি, যে বর্জ্য জল সাগরে মিশবে তাতে তেজস্ক্রিয় উপাদানের পরিমাণ বিপজ্জনক মাত্রার থেকে কম। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থাও জাপানের পাশে দাঁড়িয়ে জানিয়েছে, এটা নতুন কিছু না। বিশ্বের অন্যান্য কারখানা থেকে যে ভাবে বর্জ্য জল নির্গত হয়, এ ক্ষেত্রেও বিষয়টি সে রকমই। বিজ্ঞানীদের একাংশও জানিয়েছেন, যে তেজস্ক্রিয় পদার্থগুলি জলে মিশে রয়েছে তা খুব বেশি পরিমাণে থাকলে তবেই মানবদেহের পক্ষে ক্ষতিকর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy