যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজ়ার ছবি। ছবি: রয়টার্স।
ইজ়রায়েল হামাস সংঘাতের আবহে ‘শান্তির বার্তা’ দিল ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার। হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি জানিয়েছে ইজ়রায়েলের মন্ত্রিসভা। তবে মুক্তি দিতে হবে হামাসের হাতে বন্দি ইজ়রায়েলিদের। হামাসের হাতে পণবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজ়ায় হামলা বন্ধের কথা জানিয়েছে ইজ়রায়েল। বুধবার সরকারি বিবৃতিতে এই কথা জানিয়েছে নেতানিয়াহুর সরকার। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে ‘সারা রাতের বৈঠকের’ পর নেতানিয়াহু তার মন্ত্রিসভাকে বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত কঠিন হলেও এটি একটি সঠিক সিদ্ধান্ত।’’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “ইজ়রায়েলি সরকার সমস্ত পণবন্দিদের দেশে ফিরিয়ে আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বুধবার রাতে সরকার যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়েছে। যার বিনিময়ে মহিলা এবং শিশু-সহ কমপক্ষে ৫০ জন পণবন্দিকে চার দিনের মধ্যে মুক্তি দিতে হবে। এই চার দিন যুদ্ধ বন্ধ থাকবে।’’
ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ও একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামাসের হাতে পণবন্দি ইজ়রায়েলিদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নেতানিয়াহু। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “আমি মন্ত্রিসভার সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে পণবন্দি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করেছি। তাদের দুর্দশার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনেছি। কেউ কেউ কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনেকের কাছে বিষয়টি দুঃস্বপ্নের মতো।’’ তার পরেই নাকি যুদ্ধবিরতি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেন নেতানিয়াহু। যদিও এই ‘চুক্তি’ নিয়ে বিরোধিতা করছে নেতানিয়াহুর জোট সরকারের শরিক জিয়োনিস্ট পার্টি। এই সিদ্ধান্ত ইজ়রায়েলের নিরাপত্তার পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেছে নেতানিয়াহুর অতি দক্ষিণপন্থী জোট শরিক।
ইজ়রায়েল অনুমোদিত ‘মানবিক যুদ্ধবিরতি’ কে স্বাগত জানিয়েছে হামাসও। তবে হামাসের হাতে পণবন্দিদের বিনিময়ে ইজ়রায়েলের হাতে বন্দি প্যালেস্টাইনিদের মুক্তির কথা জানিয়েছে তারা। হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এই চুক্তি প্রতিরোধের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে তৈরি। আমাদের লক্ষ্য আমাদের জনগণের সেবা করা এবং আগ্রাসনের মুখে তাদের অবিচল রাখা।” উল্লেখযোগ্য যে, ইজ়রায়েলের বিবৃতিতে প্যালেস্টাইনি বন্দিদের মুক্তি নিয়ে বা গাজ়ায় অতিরিক্ত জ্বালানি এবং সাহায্য প্রবেশের বিষয়ে বিশদে কিছু লেখা নেই।
এর আগে মনে করা হচ্ছিল কাতারের মধ্যস্থতাতেই দু’পক্ষ সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হতে চলেছে। প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরেই আটক শতাধিক ইজ়রায়েলি সামরিক এবং অসামরিক নাগরিকের মুক্তির জন্য কাতার সরকার ‘সমান্তরাল কূটনৈতিক তৎপরতা’ শুরু করেছিল। হামাসের তরফে পণবন্দিদের মুক্তির বিনিময়ে গাজ়ায় ইজ়রায়েলি হামলা বন্ধের শর্তও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু তা খারিজ করে দিয়েছিলেন। এখনও পর্যন্ত গাজ়ায় ইজ়রায়েলি সেনার হামলায় প্রায় ১৪ হাজার সাধারণ প্যালেস্টাইনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে প্রায় সাড়ে পাঁচহাজার শিশু। শেষ পর্যন্ত আমেরিকা-সহ পশ্চিমী দুনিয়ার চাপের মুখে ইজ়রায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিল বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহলের একাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy