ইজ়রায়েলি হানার মধ্যেই ফের সহায়সম্বলহীন ভাবে আশ্রয়ের খোঁজে যাত্রা শুরু করেছেন অসংখ্য প্যালেস্টাইনি। —ফাইল চিত্র।
‘এক মৃত্যু থেকে আর এক মৃত্যুর দিকে ক্রমশ এগিয়ে চলেছি আমরা।’— কবিতা নয়, গাজ়ার খান ইউনিসের বাসিন্দা জ়াকি মহম্মদের ভয়ার্ত উক্তি। খান ইউনিস ছেড়ে দশম বারের মতো বেরিয়ে পড়তে হয়েছে তাঁকে সপরিবার, আশ্রয়ের খোঁজে। তার কারণ, আল তাবাইন স্কুলে হামাস সদস্য মারার অছিলায় বিধ্বংসী হামলা করার পরেই ইজ়রায়েলি বাহিনী নির্দেশ দিয়েছে, খালি করতে হবে খান ইউনিসের চৌহদ্দি। রাতের অন্ধকারে, ইজ়রায়েলি হানার মধ্যেই ফের সহায়সম্বলহীন ভাবে আশ্রয়ের খোঁজে যাত্রা শুরু করেছেন অসংখ্য প্যালেস্টাইনি।
শনিবারই এক্স হ্যান্ডলে এবং ফোনে মেসেজের মাধ্যমে খবর ছড়িয়ে দেয় ইজ়রায়েল— খান ইউনিস এখন বিপজ্জনক যুদ্ধক্ষেত্র। দ্রুত সেখানকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে হবে। প্যালেস্টাইনিদের প্রশ্ন, নিরাপত্তা কোথায়? সংঘাত শুরুর পর থেকে প্যালেস্টাইনিদের আশ্রয়স্থলেই যেন বার বার নিশানা করেছে ইজ়রায়েলি বাহিনী। ঠিক যেমন গাজ়া সিটির আল তাবাইন স্কুলের হামলার ঘটনা। শনিবারই ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত অন্তত ১০০ জন। নিহতদের মধ্যে ১১ জন শিশু ও ছ’জন মহিলা। ওই স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় ৩৫০টি পরিবার।
ইজ়রায়েলের দাবি, সংখ্যাটি ফুলিয়েফাঁপিয়ে বলা হচ্ছে। গোপন করা হচ্ছে ১৯ জন হামাস সদস্যের মৃত্যুর কথাও। ওই স্কুলটি হামাসের ঘাঁটি ছিল।
শনিবারের হামলার পরেই তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছে ইজ়রায়েল। মুখ খুলেছেন আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তাঁর কথায়, দশ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে অসংখ্য সাধারণ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এ মেনে নেওয়া যায় না। মানবাধিকার কর্মীদের মত, তীব্র নিন্দা করলেও ইজ়রায়েলকে অস্ত্র সরবরাহে কোনও খামতি রাখেনি আমেরিকা। প্রতিবাদে মুখর ইরান, মিশর। কাতারের বিদেশ মন্ত্রক এক্সে প্রতিবাদ জানিয়েছে। একই সুর সৌদি আরব, লেবানন ও তুরস্কেরও। জার্মানির দাবি, এই হত্যালীলা গ্রহণযোগ্য নয়।
রাষ্ট্রপুঞ্জের প্যালেস্টাইনি শরণার্থীদের জন্য তৈরি সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজ়ারিনি সমালোচনা করে বলেছেন, গত কয়েক দিনে প্রায় ৭৫ হাজার জন আশ্রয়চ্যুত হয়েছেন দক্ষিণ গাজ়ায়। তাঁর কথায়, ‘অসহনীয়, ভয়াবহ এই হত্যালীলা যেন ক্রমশ স্বাভাবিক হয়ে উঠছে, এ মেনে নেওয়া উচিত নয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy