দক্ষিণ গাজ়ার বৃহত্তম হাসপাতালে হামলা চালাল ইজ়রায়েল। রবিবার রাতে ইজ়রায়েলের হামলার কারণে নাসের হাসপাতালে আগুন ধরে যায়। তাতে প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের এক শীর্ষ নেতার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে ইজ়রায়েল ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ)। গাজ়ায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রককে উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, যুদ্ধে জখম বহু মানুষের চিকিৎসা চলছিল নাসের হাসপাতালে। সেই সময়ে হামলা চালায় ইজ়রায়েলি বাহিনী। হাসপাতালের শল্যচিকিৎসা বিভাগের উপর বোমা পড়ে। সেখানে আগুন ধরে যায়। তাতে বহু রোগী নতুন করে জখম হন। এক জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।
পরে এই হামলার কথা স্বীকার করে সমাজমাধ্যমে আইডিএফ জানিয়েছে, রবিবার রাতের হামলায় হামাসের এক গুরুত্বপূর্ণ নেতার মৃত্যু হয়েছে। এর আগে অন্যত্র ইজ়রায়েলের হামলায় জখম হয়েছিলেন তিনি। নাসের হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছিল। সেখান থেকেই ইজ়রায়েল-বিরোধী পরিকল্পনাও তিনি চালাচ্ছিলেন বলে অভিযোগ। তাঁকে মারতেই হাসপাতালে বোমা ফেলা হয়েছিল, মেনে নিয়েছে ইজ়রায়েলি সেনা।
আরও পড়ুন:
আইডিএফের বক্তব্য, তাদের হামলায় আশপাশের তেমন কোনও ক্ষতি যাতে না-হয়, যতটা সম্ভব তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে এই হামলার দায়ও হামাসের উপরেই চাপিয়েছে তারা। অভিযোগ, ইচ্ছাকৃত ভাবেই হাসপাতালগুলিকে নিজেদের আশ্রয়স্থল বানিয়েছেন হামাস জঙ্গিরা। এ ভাবে তাঁরা সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে খেলছেন।
রবিবারের হামলায় হামাসের কোন নেতা নিহত হয়েছেন, তাঁর নাম আইডিএফ প্রকাশ করেনি। বিবিসি-সহ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে দাবি, ইজ়রায়েলের হামলায় গাজ়ার হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে হামাস নেতা ইসমাইল বারহুমের। তিনি হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর অন্যতম সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া, সংগঠনের অর্থনৈতিক দিকটিও তিনিই সামলাতেন। কিছু দিন আগে আকাশপথে ইজ়রায়েলের এক হামলায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন তিনি।
২০২৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ইজ়রায়েল এবং হামাসের যুদ্ধ শুরু হয়েছে। প্রায় ১৮ মাসের এই যুদ্ধে গাজ়া ভূখণ্ডে মৃত প্যালেস্টাইনিদের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে দাবি হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের। গত জানুয়ারি থেকে সাময়িক যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেই চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ইজ়রায়েলি সেনা নতুন করে হামলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ। তাতেও নিহতের সংখ্যা কয়েকশো। ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, সকল পণবন্দিকে মুক্ত না-করা পর্যন্ত এবং হামাসের সম্পূর্ণ বিনাশ না-দেখা পর্যন্ত তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন। আমেরিকার সঙ্গে আলোচনা করেই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছেন বলে জানান নেতানিয়াহু।