Advertisement
E-Paper

হিজাব না-পরা মহিলাদের খুঁজতে ড্রোন ওড়াচ্ছে ইরান! পোশাকবিধি অমান্য করলে ধরা পড়বে অ্যাপে

ইরানে মহিলারা রাস্তাঘাটে হিজাব পরছেন কি না, তা নজর রাখতে ড্রোন ব্যবহার করছে সে দেশের প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন মূল সড়কেও চলছে নজরদারি। তৈরি করা হয়েছে বিশেষ একটি অ্যাপও।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ২২:১৪
ইরানের রাজধানী তেহরানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গত বছর অন্তর্বাস পরে প্রতিবাদ করেন আহু দারইয়াই।

ইরানের রাজধানী তেহরানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গত বছর অন্তর্বাস পরে প্রতিবাদ করেন আহু দারইয়াই। —ফাইল চিত্র।

কোন মহিলা হিজাব পরছেন না, তার উপর নজর রাখতে এ বার ড্রোন ব্যবহার করছে ইরান। তৈরি করেছে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও (অ্যাপ)। ইরান সরকারের সহায়তায় তৈরি ওই অ্যাপটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাজ়ের’। কোনও মহিলা হিজাব না-পরে ঘুরছেন কি না, তা ওই অ্যাপের মাধ্যমে পুলিশকে জানাতে পারবেন সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জের এক রিপোর্টে এমনটাই জানানো হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধিরা অনুমান করছেন, ইরান পোশাকবিধির উপর নজর রাখার জন্য বৈদ্যুতিন নজরদারি যন্ত্রের সাহায্য নিচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হল ড্রোনের ব্যবহার। রাস্তাঘাটে মহিলাদের উপর নজর রাখতে এই ড্রোনগুলি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তেহরানের আমিরকবির বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ পথে এক বিশেষ ধরনের সফ্‌টওয়্যার বসানো হয়েছে। সফ্‌টওয়্যারটি মুখ শনাক্তকরণের জন্য। তবে এপি জানিয়েছে, কেউ হিজাব না-পরে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করছেন কি না, তা-ও ওই সফ্‌টওয়্যারের মাধ্যমে ধরা হচ্ছে। ইরানের মূল সড়কগুলির ধারে বিভিন্ন জায়গায় নজরদারি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সেগুলিও মূলত পোশাকবিধির উপর নজরদারির জন্যও বসানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুসন্ধানকারী দল জানিয়েছে, ইরান পুলিশ ‘নাজ়ের’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনও চালু করেছে। রাস্তাঘাটে, গাড়ি, বাসে বা অন্য কোনও প্রকাশ্য জায়গায় কোনও মহিলাকে হিজাব ছাড়া ঘুরতে দেখলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো যাবে। অ্যাম্বুলেন্সেও হিজাব ছাড়া কাউকে দেখা গেলে ওই অ্যাপের মাধ্যমে অভিযোগ জানানো যাবে। কবে, কোন সময়ে, কোথাও ওই মহিলাকে হিজাব ছাড়া দেখা গিয়েছে, তা-ও পুলিশকে জানানো যাবে ওই অ্যাপের মাধ্যমে। কোনও গাড়িতে হিজাবহীন অবস্থায় দেখা গেলে, সেই গাড়ির নম্বরও পুলিশকে জানানো যাবে।

ইরানে মহিলাদের পোশাকের ক্ষেত্রে কড়া ফতোয়া রয়েছে। সে দেশে মহিলাদের আবশ্যিক ভাবে মাথা ঢেকে রাখতে হয় হিজাব পরে। রাস্তায় বার হলে সব সময় ঢিলেঢালা পোশাক পরার নিয়ম। ইরানের প্রাক্তন ধর্মগুরু আয়াতোল্লা খোমেইনির পর বর্তমান ধর্মগুরু আয়াতোল্লা আলি খামেনেইও এই ফতোয়া জারি রেখেছেন। তা ভাঙলে কড়া শাস্তির বিধানও রয়েছে সে দেশে। ২০২২ সালে ইরানি তরুণী মাহসা আমিনিকেও হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ তুলে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের নীতিপুলিশ। ২৪ ঘণ্টা যেতে না যেতেই পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। মাহসার মৃত্যুর পর গোটা ইরানে যখন প্রতিবাদের ঝড় বয়ে গিয়েছিল।

সম্প্রতি এই পোশাক-ফতোয়ার প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসলামিক আজ়াদ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া আহু দারইয়াই প্রকাশ্যে অন্তর্বাস পরে হেঁটেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে গিয়েছিল ইরানের পুলিশ। পরে প্রশাসন থেকে জানানো হয়, তরুণী মানসিক ভাবে সুস্থ নন। একাধিক সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, তাঁকে এক মানসিক রোগের চিকিৎসাকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই মানিসক রোগের চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে দারইয়াই ছাড়া পেয়েছেন কি না, তা পরবর্তীতে প্রকাশ্যে আসেনি।

Iran
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy