Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
Muhammad Yunus

রাজাকার খুঁজে বার করার ভার পেলেন তাঁদেরই আইনজীবী

গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পরে যুদ্ধাপরাধ আদালতের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।শনিবার রাতে সেই আদালতের চিফ প্রসিকিউটর নিযুক্ত করা হয়েছেসুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীমোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে।

মুহাম্মদ ইউনূস।

মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৫:৫৯
Share: Save:

হত্যা-গণহত্যায় অভিযুক্ত রাজাকারদের কৌঁসুলির হাতেই এ বার রাজাকারদের খুঁজে বার করে বিচারের ভার দিল মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। জামায়াতে ইসলামীর প্রভাব ইউনূস সরকারের উপরে কতটা, এই ঘটনায় ফের তা সামনে এল।

একাত্তরে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে জনপ্রিয় দাবি ছিল, স্বাধীনতার বিরোধিতা করা জামায়াতে ইসলামীর যে সব নেতা সেই সময়ে রাজাকার, আল বদর, আল শামস নামে সংগঠন গড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের গণহত্যা ও নির্যাতন চালাত, তাদের বিচারের ব্যবস্থা করা। এ নিয়ে বারে বারে সাংস্কৃতিক ও গণআন্দোলন হয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৯-এক্ষমতায় আসার পরে শেখ হাসিনা এই কাজের জন্য আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত গঠন করেন। এক ঝাঁক রাজাকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচারের পরে দণ্ড কার্যকরকরে সরকার। এই রাজাকারের অধিকাংশই জামায়াতের নেতা ছিলেন। বিএনপির এক শীর্ষ নেতা এবং আওয়ামী লীগের এক নেতারও রাজাকার হিসাবে বিচার হয়েছে যুদ্ধাপরাধ আদালতে। চিফ প্রসিকিউটরদের নেতৃত্বে অন্যান্য প্রসিকিউটররা এ জন্য খুবই পরিশ্রম করে প্রমাণ সংগ্রহ করছিলেন, যাতে অপরাধের শাস্তির হাত থেকে কেউ রক্ষা পেতে না পারে ন।

গণঅভ্যুত্থানে হাসিনা সরকারের পতনের পরে যুদ্ধাপরাধ আদালতের ভবিষ্যৎ নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।শনিবার রাতে সেই আদালতের চিফ প্রসিকিউটর নিযুক্ত করা হয়েছেসুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীমোহাম্মদ তাজুল ইসলামকে। তাজুল যে শুধু জামায়াত ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত তাই নয়, যে সমস্ত রাজাকারকে এ পর্যন্ত এই আদালতে বিচার করা হয়েছে, প্রায় সকলেরই আইনজীবী ছিলেন তিনি। শুনানির পরে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথাও বলতেন তাজুলই। নির্বাচন কমিশন জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করার পরে এই দলের কিছু নেতা এবি (আমার বাংলাদেশ) পার্টি নামেএকটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। তাজুল ছিলেন এই দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। চিফ প্রসিকিউটর হওয়ার পরে তিনি এই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। তাঁর নিয়োগে যুদ্ধাপরাধ আদালত নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টের অনেক আইনজীবীর বক্তব্য— রাজাকারদের অন্যতম প্রধান আইনজীবীকেই রাজাকার খুঁজে বার করার দায়িত্ব দিলেন ইউনূস সরকার! এর চেয়ে হাস্যকরকী হতে পারে?

শনিবার রাতে রাজশাহিতে প্রতিবন্ধী এক যুবক আবদুল্লা আল মাসুদকে পিটিয়ে মারা হয়েছে। মাসুদ রাজশাহি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র লীগের প্রাক্তন নেতা ছিলেন। ২০১৪-য় জামায়াতে ইসলামীর শাখা ইসলামী ছাত্র শিবিরের কর্মীরা খুনের উদ্দেশ্যে মাসুদকে প্রচণ্ড মারধর করে হাত ও পায়ের ধমনী কেটে দেয়। তাঁরএকটি পায়ের পাতাও বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। কোনও ক্রমে প্রাণে বাঁচলেও নিদারুণ অর্থসঙ্কটে ছিলেন নিম্নবিত্ত পরিবারের মাসুদ। প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখার পরে শেখ হাসিনার নির্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি চাকরি দেওয়া হয় মাসুদকে। তিন দিন আগে মাসুদের একটি মেয়ে হয়েছে। শনিবার তাঁকেখুনের জন্যও ছাত্র শিবিরকেই দায়ী করছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। মাসুদকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। সাবেক শাসক দলের কর্মী হওয়ার ‘অপরাধে’ মাসুদের এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

কোটা-বিরোধী আন্দোলনের মঞ্চ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ দিন জাতীয় নাগরিক কমিটিনামে নতুন একটি সংগঠনেরঘোষণা করেছে। এই সংগঠন রাজনৈতিক দল কি না, সেটি স্পষ্ট ভাবে বলতে পারেননি নতুননেতারা। দিন কয়েক আগেরাজনৈতিক দল গঠন করা হবে বলে জানিয়েছিলেন কোটা-বিরোধী আন্দোলনের নেতারা।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy