—প্রতীকী ছবি।
‘গাজ়াকে মুক্ত করো, প্যালেস্টাইনিদের মুক্তি দাও’। ইজ়রায়েল-বিরোধী স্লোগানে উত্তপ্ত আমেরিকা। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে প্রিন্সটন, নিউ ইয়র্কের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটি— আন্দোলনে নেমেছেন পড়ুয়ারা। ক্ষোভের আঁচ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে কলেজগুলোতে। বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন অধ্যাপকেরাও। পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে চলে আসে পুলিশের বড় বাহিনী। চলল বেপরোয়া লাঠিচার্জ। মাটিতে ফেলে পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হল বিক্ষোভরত পড়ুয়া-অধ্যাপকদের। বহু ক্যাম্পাস থেকে গ্রেফতার করা হল কয়েকশো পড়ুয়াকে। ইজ়রায়েল-বিরোধী বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির দুই ভারতীয় পড়ুয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে আজ। তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
কাল সকালে প্রিন্সটন চত্বরে তাঁবু খাটিয়েছিলেন বিক্ষোভকারী পড়ুয়ারা। সেখান থেকেই পরে তামিলনাড়ুর বাসিন্দা অচিন্ত্যা শিবলিঙ্গন এবং হাসান সইদকে গ্রেফতার করা হয়। অচিন্ত্যা ‘পাবলিক অ্যাফেয়ার্স ইন ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’ নিয়ে স্নাতকোত্তরের পড়াশোনা করছেন। হাসান পিএইচডি স্কলার। দুই পড়ুয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অনুপ্রবেশের’ অভিযোগ আনা হয়েছে। তাঁদের ক্যাম্পাসে ঢোকার উপরেও নিষেধাজ্ঞা
জারি হয়েছে। প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র জেনিফার মোরিল বলেন,
‘‘বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে তাঁবু খাটিয়ে নিয়ম ভেঙেছে ওরা।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক মুখপাত্র মাইকেল হচকিস অবশ্য জানিয়েছেন, গ্রেফতার হওয়া কোনও পড়ুয়াকেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হবে না। ছাত্রাবাসেও থাকতে দেওয়া হবে। মোরিল বলেন, ‘‘বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের বারবার সতর্ক করা হয়েছিল। ওঁরা শোনেননি। আইন-শৃঙ্খলাভঙ্গের জন্য এখন ওঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’’
সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিয়ো ছড়িয়েছে। আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটির একটি ভিডিয়ো ঘিরে প্রবল উত্তেজনা ছড়িয়েছে। ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন পড়ুয়া-শিক্ষক-শিক্ষিকারা। আচমকাই পড়ুয়াদের গ্রেফতার করা শুরু করে পুলিশ। এক পড়ুয়াকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরে তারা। এ সময়ে এক অধ্যাপিকা প্রতিবাদ করতেই তাঁর উপরেও ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ। ক্যারোলিন ফোলিন নামে ওই মহিলা চিৎকার করতে থাকেন, ‘‘আমি অধ্যাপিকা।’’ কেউ শোনেনি। মাটিতে ফেলে ক্যারোলিনকে চেপে ধরে দুই-তিন জন পুরুষ পুলিশ অফিসার। তার পর পিছমোড়া করে হাতকড়া পরানো হয়। আটলান্টার ইমোরি ইউনিভার্সিটি থেকে আজ ২৮ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের একাংশের অভিযোগ, তাদের লক্ষ্য করে জিনিস ছুড়েছিল পড়ুয়ারা। পড়ুয়াদের ছত্রভঙ্গ করতে নাকি কোনও রাসায়নিক ছড়ায় পুলিশ। রবার বুলেট ছোড়ার কথাও শোনা যায়। আটলান্টা পুলিশ তা অস্বীকার করেছে। নোয়েল ম্যাকাফি নামে এক ছাত্রী দাবি করেন, ‘‘শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ চলছিল। হঠাৎ পুলিশ চলে আসে। এক মিনিটের মধ্যে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে।’’
ইজ়রায়েল-বিরোধী বিক্ষোভের জেরে লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিভার্সিটি অব সাদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া তাদের গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠান বাতিল করে দিয়েছে আজ। আশপাশের বিভিন্ন কলেজে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি থেকে ৩৩ জন বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পড়ুয়াদের ক্যাম্পাস থেকে বার করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই পুলিশে খবর দেন। কিছুটা ভিন্ন ছবি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের। গত সপ্তাহ থেকেই সেখানে ইজ়রায়েল-বিরোধী বিক্ষোভ চলছে। পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছেন কর্তৃপক্ষ। সর্বত্রই বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের মূল দাবি, আমেরিকান প্রেসিডেন্ট গাজ়ার যুদ্ধে অর্থ ঢেলে যাচ্ছেন। অবিলম্বে তা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে গাজ়ায় নৃশংস হামলা থেকে বিরত করতে হবে ইজ়রায়েলকে। সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy