Advertisement
১২ জানুয়ারি ২০২৫
Russia Ukraine War

Russia-Ukraine war: পড়ুয়াদের দেশে ফেরাতে আরও সক্রিয় হোক কেন্দ্র

রাশিয়া আগে জানিয়েছিল, অসামরিক কোনও ব্যক্তির তারা ক্ষতি করবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেনা ছাড়াও সাধারণ মানুষের জীবনহানি হচ্ছে।

ফাইল চিত্র। সত্যম গঙ্গোপাধ্যায় (ইনসেটে)।

ফাইল চিত্র। সত্যম গঙ্গোপাধ্যায় (ইনসেটে)।

সত্যম গঙ্গোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২২ ০৫:৩০
Share: Save:

হাওড়ার ছেলে আমি। পনেরো বছর আগে সুমিতে ডাক্তারি পড়তে এসেছিলাম। সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটির ছাত্র ছিলাম আমি। ডাক্তারি পড়ে এখানেই থেকে গিয়েছি। কারণ এখানে মানুষজনকে বড় ভাল লেগে গিয়েছিল। এ দেশেই এখান বসবাস, কাজকর্ম।

আমার মতো বহু ভারতীয় বছরের পর বছর ইউক্রেনে ডাক্তারি পড়তে আসে। এদের মধ্যে অনেকেই সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়। রাশিয়া ইউক্রেনকে আক্রমণ করার পরে সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটির বিদেশি ছাত্ররা খুবই আতঙ্কিত। যার মধ্যে রয়েছে বহু ভারতীয় ছাত্রছাত্রী। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশ থেকে আসা পড়ুয়াদের মধ্যে যে আতঙ্ক, তা আমি বেশ বুঝতে পারছি।

দেশ ছেড়ে এত দূরে এসে বছরের পর বছর থেকে গিয়ে পড়াশোনা করা। তার সঙ্গে এ দেশের চূড়ান্ত ঠান্ডা আবহাওয়ায় মানিয়ে নেওয়া। স্থানীয় ভাষা না-বোঝা। এই পরিস্থিতির মধ্যে যদি যুদ্ধ এসে পড়ে, তা হলেএই অল্পবয়সি ছেলেমেয়েরা যে ভয় পাবে, সেটা খুবই স্বাভাবিক। টুইটারে ওঁদের অনেকেই উদ্ধারের আর্তি জানাচ্ছেন। এই আর্তিও খুবই স্বাভাবিক।

রুশ সেনারা সুমি শহরে ঢুকলেও গত পরশু তাদের ইউক্রেন বাহিনী এখান থেকে সরিয়ে দিতে পেরেছে। কিন্তু শহরে ঢোকার পথগুলোতে যুদ্ধ চলছে। অল্পবয়সি পড়ুয়ারা বিদেশে পড়তে এসে এই যুদ্ধের পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে স্বাভাবিক ভাবেই ভীষণ আতঙ্কিত। ডাক্তারি পড়তে এসে তো আর এমন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি কোনও ছাত্রছাত্রী হতে চায় না। অথবা এমন পরিস্থিতির মধ্যে পড়বে আগে থেকে, তা ভাবতেও পারে না। ছাত্রছাত্রীরা এখন দিনের পর দিন বাঙ্কারের মধ্যে থাকছেন।
তাঁদের টাকা, খাবারের অভাব হচ্ছে। টাকার অভাবের কারণ, এটিএমগুলোয় কোনও টাকা নেই। সব শেষ হয়ে গিয়েছে।

এই সব ছাত্রছাত্রীদের দেশে ফেরার পথও দুর্গম এবং বিপজ্জনক। সুমি ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব দিকে। এ দিকেই রাশিয়ার সীমান্ত। রাশিয়া এ দিক থেকেই আক্রমণ শানাচ্ছে। বিদেশি ছাত্রদের দেশে ফেরানোর কাজটা চলছে মূলত ইউক্রেনের পশ্চিম সীমান্ত দিয়ে। সেখান থেকে সীমান্ত পেরিয়ে হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড অথবা রোমানিয়ায় গিয়ে দেশে ফেরার উড়ান ধরছেন পড়ুয়ারা।

ইউক্রেনের উত্তর-পূর্ব দিকের সুমি থেকে পশ্চিম সীমান্তে যেতে হলে পুরো ইউক্রেনের উপর দিয়ে যেতে হবে। এই দূরত্বটা হাজার কিলোমিটারেরও বেশি। এই পথেই যুদ্ধ চলছে। অনেক শহরেই ঢুকে গিয়েছে রাশিয়ার সৈন্যবাহিনী। তাই পশ্চিম সীমান্ত অবধি পৌঁছনোটাই এখন সুমিতে থাকা ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে খুব মুশকিলের হয়ে পড়েছে।

টুইটারে এই সব ছাত্রছাত্রীদের অনেকেই আবেদন করছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যেন ভারত সরকার কথা বলে। মানবিকতার স্বার্থে যাতে পূর্ব দিক থেকে রাশিয়া হয়ে ভারতে ছাত্রছাত্রীদের দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করা যায়।

রাশিয়া আগে জানিয়েছিল, অসামরিক কোনও ব্যক্তির তারা ক্ষতি করবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সেনা ছাড়াও সাধারণ মানুষের জীবনহানি হচ্ছে। আজ এক জন ভারতীয় ছাত্রও নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকারের আরও বেশি করে সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। সব রকম ভাবে চেষ্টা চালিয়ে ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন শহর থেকে দ্রুত দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা অবিলম্বে করুক ভারত সরকার।

অনুলিখন: মধুমিতা দত্ত

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy