রাষ্ট্রপুঞ্জ। ছবি রয়টার্স।
আকাশপথে ইউক্রেনের রাজধানী কিভের নানা প্রান্তে মস্কো হামলা চালাতে শুরু করার পরে বিবৃতি দিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছিল। তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়া-বিরোধী প্রস্তাবে ভোট দিল নয়াদিল্লি। প্রায় একই সঙ্গে আজ অস্ট্রেলিয়ায় সফররত বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “যে ভাবে নিরীহ মানুষের প্রাণ নেওয়া হচ্ছে এবং পরিকাঠামোগুলিকে নিশানা করা হচ্ছে, তা বিশ্বের কোনও প্রান্তই মেনে নেবে না।”
কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, পরিস্থিতি ক্রমশ এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে যে, রাষ্ট্রপুঞ্জে অন্ধের মতো রাশিয়ার প্রতি আনুগত্যের বার্তা বার বার দিয়ে যাওয়াটা তুল্যমূল্য বিচারে ভারতের পক্ষে প্রবল বিড়ম্বনার। রাশিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে ভারসাম্যের কূটনীতি অবশ্যই বহাল রাখা হচ্ছে। গত কালই রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে জয়শঙ্কর বলেছিলেন, আমেরিকা এবং পশ্চিমের দেশগুলি যখন ভারতকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল, সেই বিপদের দিনে মস্কোই পাশে ছিল নয়াদিল্লির। সূত্রের মতে, রাশিয়ার প্রতি বন্ধুত্বের ইতিহাস বর্ণনা করে তাদেরই বিরুদ্ধে অবশেষে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভোট দেওয়াটাও এই ভারসাম্যের কূটনীতির মধ্যেই পড়ে। যেহেতু ভারত গত ছ’মাস ধরে মস্কোর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে, ফলে তাদেরও বর্তমান ভূ-কৌশলগত পরিস্থিতিতে দর কষাকষির ক্ষমতা অনেকটাই বেড়েছে।
তবে সস্তায় রাশিয়া থেকে অশোধিত বিপুল পরিমাণ তেল আমদানি করার পাশাপাশি হিংসা বন্ধের প্রশ্নেও ধারাবাহিক ভাবে একই কথা বলে আসছে মোদী সরকার। সেটি হল, অবিলম্বে কূটনীতি এবং আলোচনার রাস্তায় ফিরতে হবে। প্রয়োজনে সব রকম মধ্যস্থতা করতে রাজি আছে ভারত সরকার। সম্প্রতি সমরখন্দে ভারত-রাশিয়া শীর্ষ বৈঠকেও সে দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখের উপরে একই কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলকে অবৈধ ভাবে রাশিয়ায় সংযুক্তির নিন্দা প্রস্তাবের খসড়া রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রস্তুত করা হয়েছিল গত রাতে। রাশিয়া সেই প্রস্তাবে ভোটাভুটির জন্য গোপন ব্যালটের দাবি জানায়। রাশিয়ার সেই দাবি প্রত্যাখ্যান করে গোপন ব্যালটের বিরুদ্ধেই ভোট দিয়েছে ভারত। সঙ্গে একশোটিরও বেশি দেশ। ১৯৩ সদস্যের রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ পরিষদে আলবেনিয়া ওই নিন্দা প্রস্তাবটি এনেছিল। সেই প্রস্তাবে ইউক্রেনের ডনেৎস্ক, খেরসন, লুহানস্ক এবং জ়াপোরিজিয়া অঞ্চল রাশিয়ার দখল করা এবং সেখানে অবৈধ ভাবে গণভোট করানোর নিন্দা ও বিরোধিতা ছিল। রাশিয়া আলবেনিয়ার প্রস্তাব গ্রহণের সিদ্ধান্তটির পুনর্বিবেচনার আবেদন করে। শুধুমাত্র ১৩টি দেশ রাশিয়ার পক্ষে ছিল। ১০৭টি দেশ রাশিয়ার বিপক্ষে। ৩৯টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। হার অবশ্যম্ভাবী জেনেই এখানে রাশিয়া ও চিন ভোট দেয়নি বলে কূটনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা। রাষ্ট্রপুঞ্জে রাশিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি ভ্যাসিলি নেবেনজিয়া এই ভোটাভুটির ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানান। তাঁর অভিযোগ, নিরাপত্তা পরিষদে জালিয়াতি হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy