প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন ভারতীয় হাই কমিশনার নভদীপ সিংহ সুরি তাঁর গৃহসহায়িকাকে ১ লক্ষ ২৬ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৭২ লক্ষ টাকা) ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য— এই মর্মে অস্ট্রেলিয়ার আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তা খারিজ করে দিল ভারত। আজ তাঁর সাপ্তাহিক সাংবাদিক সম্মেলনে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেন, ‘‘ভারতে নিযুক্ত হওয়া কোনও কর্মীর অভিযোগ শোনার এক্তিয়ার অস্ট্রেলিয়ার কোনও আদালতের নেই। যদি সেই ব্যক্তির কোনও অভিযোগ থাকে, তা হলে তা ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।’’
ঘটনার সূত্রপাত ২০১৫ সালে। ক্যানবেরায় তৎকালীন ভারতীয় হাই কমিশনার সুরির বাড়িতে গৃহসহায়িকা ছিলেন সীমা শেরগিল। নিয়ম মোতাবেক, তিনি সুরির ব্যক্তিগত কর্মী নন, ছিলেন ভারতীয় সরকারের কর্মী। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে মিশরেও সুরি পরিবারের গৃহসহায়িকা ছিলেন তিনি। সুরি অস্ট্রেলিয়া বদলি হয়ে যাওয়ার পরে তাঁদের সঙ্গে ভারতীয় কূটনৈতিক পাসপোর্ট ও কূটনৈতিক ভিসা নিয়ে অস্ট্রেলিয়ায় যান সীমা।
এই ধরনের নিয়োগের ক্ষেত্রে কর্মীকে ‘কাজের মেয়াদ শেষ হলে দেশে ফিরতে হবে’ এই মর্মে চুক্তিতে সই করতে হয়। বিদেশ মন্ত্রকের দাবি, সেই চুক্তিপত্রে সই করেননি সীমা। তার পরে ২০১৬-র মে মাসে তিনি হঠাৎ চাকরি ছেড়ে ‘নিখোঁজ’ হয়ে যান। তখন অস্ট্রেলিয়ান কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিতও করেছিল দিল্লি। সাংবাদিক বৈঠকে অরিন্দম জানান, দিল্লি অস্ট্রেলীয় প্রশাসনের কাছে একাধিক বার সীমাকে দেশে ফেরত পাঠানোর অনুরোধ জানায়। কিন্তু সে দেশের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্য করা হয়নি।
২০২১-এ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব পান সীমা এবং সুরির বিরুদ্ধে যথাযথ পারিশ্রমিক না দেওয়ার জন্য মামলা করেন। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার আদালত রায় দিয়েছে, সীমাকে সপ্তাহের প্রতিদিন সাড়ে ১৭ ঘণ্টা করে কাজ করাতেন সুরি ও তাঁর স্ত্রী এবং তাঁদের কুকুরকে হাঁটাতে নিয়ে যাওয়া ছাড়া সীমাকে বাইরে বেরোতে দিতেন না। প্রথমে দৈনিক ৭.৮০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৪১৬ টাকা) ও পরে ৯ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (৪৮০ টাকা) হারে ১৩ মাসে ৩৪০০ অস্ট্রেলিয়ান ডলার (১ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা) পারিশ্রমিক দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। আদালতের মতে, যা কখনওই সীমার পরিশ্রমের মূল্য হতে পারে না। অস্ট্রেলিয়ার আদালত সুরিকে তাই নির্দেশ দিয়েছে, ৬০ দিনের মধ্যে তাঁকে ক্ষতিপূরণ হিসাবে ১ লক্ষ ২৬ হাজার অস্ট্রেলিয়ান ডলার এবং যথাযথ সুদ দিতে হবে।
আজ অরিন্দম দাবি করেছেন, সীমার আচরণ এবং এই মামলা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত। অস্ট্রেলিয়ার নাগরিত্ব পাওয়ার জন্যই তিনি চুক্তিপত্রে সই না করে ওই ভাবে চাকরি ছেড়ে দেন এবং সুরির বিরুদ্ধে মামলা করেন। তাই অস্ট্রেলিয়ার এই আদালতের রায় কোনও ভাবেই মেনে নেবে না ভারত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy