Advertisement
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Russia Ukraine War

লড়াই থামাতে মধ্যস্থতাতেও রাজি ভারত

বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে ‘অবিলম্বে হিংসা বন্ধের’ ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, ‘সংঘর্ষ বন্ধের জন্য যে কোনও রকমের উদ্যোগে শামিল হতে প্রস্তুত ভারত’।

জখম এক মহিলার শুশ্রূষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিভে।

জখম এক মহিলার শুশ্রূষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। কিভে। ছবি রয়টার্স।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০২২ ০৬:২৯
Share: Save:

শুক্রবারই রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের মঞ্চে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোটাভুটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে ভারত। তার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আকাশপথে ইউক্রেনের রাজধানী কিভ-সহ নানা প্রান্তে ধারাবাহিক হামলা চালাতে শুরু করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। আজ গোটা বিষয়টি নিয়ে ‘গভীর উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে ‘অবিলম্বে হিংসা বন্ধের’ ডাক দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, ‘সংঘর্ষ বন্ধের জন্য যে কোনও রকমের উদ্যোগে শামিল হতে প্রস্তুত ভারত’।

কূটনৈতিক শিবিরের মতে, গত ফেব্রুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে যে ভারসাম্যের নীতি নরেন্দ্র মোদী সরকার নিয়ে চলেছে, আজকের এই বিবৃতি তার থেকে ভিন্ন নয়। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সমরখন্দে এসসিও সম্মেলনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখোমুখি বসে বলেছেন, এই সময় যুদ্ধের নয়। খাদ্য এবং জ্বালানি নিরাপত্তার। তাঁর এই বক্তব্য প্রশংসিত হয়েছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমে। আবার একই সঙ্গে রাশিয়া থেকে অশোধিত তেল আমদানি চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে জি-৫ গোষ্ঠীর রক্তচক্ষু সত্ত্বেও।

শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশন একটি খসড়া প্রস্তাবের উপরে ভোটাভুটি করে। প্রস্তাবটি ছিল রাশিয়ার মানবাধিকার সংক্রান্ত রেকর্ড খতিয়ে দেখতে এক জন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ সংক্রান্ত। কূটনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, ভারত এই ভোটাভুটিতে যোগ গিয়ে মস্কোর বিরাগভাজন হতে চায়নি। তাই ভোট থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। অথচ ওই একই দিনে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আফগানিস্তানের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তদন্তের পক্ষেই ভোট দিয়েছে ভারত।

আজ কিভে হামলার পরে বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বলেছেন, “ইউক্রেনে সংঘাত বাড়ার বিষয়টি নিয়ে ভারত গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন। সেখানকার পরিকাঠামোগুলিকে নিশানা করা হচ্ছে এবং নাগরিকদের মৃত্যু ঘটছে। আমরা আবারও বলছি হিংসা বাড়লে তা কারও স্বার্থই সিদ্ধ করবে না। আমরা অবিলম্বে সংঘাত বন্ধের এবং দ্রুত কূটনীতি ও সংলাপের রাস্তায় ফেরার আহ্বান জানাচ্ছি। এই লক্ষ্যে সব রকম উদ্যোগে শামিল হতে প্রস্তুত আমরা।” বাগচী আরও বলেন, “এই সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ধারাবাহিক ভাবে আমাদের অবস্থান জানিয়ে যাচ্ছি। সেটি হল, সমস্ত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগোলিক অখণ্ডতার নীতি, রাষ্ট্রপুঞ্জের সনদ এবং আন্তর্জাতিক আইনের মান্যতার উপরে গোটা বিশ্ব ব্যবস্থা দাঁড়িয়ে রয়েছে।”

ইউক্রেনে রুশ আক্রমণের তীব্রতা বাড়ার পরেই আজ সেখানে বসবাসকারী সমস্ত ভারতীয়দের জন্য অ্যাডভাইজ়রি জারি করেছে ভারত। সেখানে বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজন না-হলে ইউক্রেনের মধ্যে যাতায়াত যেন সকলে এড়িয়ে চলেন। এই মুহূর্তে ইউক্রেন না-যাওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের তরফে যে নিরাপত্তাবিধি জারি করা হয়েছে, তা যেন সকলে মেনে চলেন সেই বার্তাও দেওয়া হয়।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গত সপ্তাহেই প্রধানমন্ত্রী মোদী ফোনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের পরমাণু চুল্লিগুলির নিরাপত্তা নিয়েও জ়েলেনস্কির কাছে তখন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘পরমাণু কেন্দ্রগুলি বিপন্ন হলে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের উপর সুদূরপ্রসারী এবং ক্ষতিকারক প্রভাব পড়তে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Russia Ukraine War India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE