প্রতীকী ছবি।
১৫ জুন রাতে ভারত-চিন সেনার মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষ কেন হয়েছিল? যখন ভারত-চিন সেনা পর্যায়ের বৈঠকে আলোচনা চলছিল, তার মধ্যে গালওয়ান উপত্যকায় কেন হঠাৎ মারমুখী হয়ে উঠল দু’পক্ষ। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে মার্কিন গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন এক বিস্ফোরক তথ্য। চিনের সেনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র জেনারেল পর্যায়ের এক আধিকারিক ভারতীয় বাহিনীর উপর আক্রমণের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে আমেরিকার একটি গোয়েন্দা পর্যবেক্ষণ রিপোর্টের সূত্রে খবর মিলেছে। ভারতকে ‘শিক্ষা’ দিতেই হামলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকা-সহ ওই এলাকায় ভারত-চিন সীমান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে পিএলএ-র ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড। তার মাথায় রয়েছেন জেনারেল ঝাও জোংকি। এ ছাড়া আরও কয়েকজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা আধিকারিকও ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। শি চিনফিং প্রশাসনই তাঁদের নিয়োগ করে। মার্কিন ওই গোয়েন্দা রিপোর্টে বলা হয়েছে, এই সেনা আধিকারিকরা মিলেই ভারতীয় সেনার উপর আক্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং নীচু স্তরের বাহিনীকে সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন।
কিন্তু প্রশ্ন হল প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং কি সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতেন? মার্কিন গোয়েন্দাদের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিষয়টি স্পষ্ট নয়। তবে চিনের বিভিন্ন সামরিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে ওয়াকিবহাল কূটনৈতিক শিবিরের ব্যাখ্যা, চিনফিংয়ের অজান্তে সেনাবাহিনী স্বতন্ত্র ভাবে কোনও সিদ্ধান্ত নেবে, এমনটা হওয়া কার্যত সম্ভব নয়। বরং চিনা প্রেসিডেন্টের সবুজ সঙ্কেত ছিল।
আরও পড়ুন: সেনা পিছোতে রাজি চিন, কোর কমান্ডার বৈঠকে ‘পারস্পরিক ঐকমত্য’
মে মাসের গোড়ার দিকে গালওয়ান উপত্যকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় সেনা মোতায়েন শুরু করে চিনা বাহিনী। পাল্টা সেনা ও রসদ মজুত করে ভারতও। ফলে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। কিন্তু তার আগে থেকেই আমেরিকা-সহ একাধিক দেশের উপর অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল চিনা বাহিনী। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম ‘ইউএস নিউজ’-এ খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, জেনারেল ঝাও জোংকি মনে করেন, আমেরিকা ও তাঁর সহযোগী ভারত-সহ নানা দেশ তাঁদের শোষণ করে। ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লির এই ‘দাদাগিরি’ তাঁরা সহ্য করবেন না। নয়াদিল্লিকে ‘উচিত শিক্ষা’ দেবেন এমন মনোভাবও প্রকাশ পেয়ছিল জোংকির হাবেভাবে।
আরও পড়ুন: ‘নিহত কত, তাঁদের দেহ কোথায়?’ দেশে নাগরিকদের তোপের মুখে চিন
যদিও আন্তর্জাতিক মহলের মতে, উল্টে বেজিং নিজেই ‘উচিত শিক্ষা’ পেয়ছে। গালওয়ান সংঘর্ষে ভারতের এক কর্নেল-সহ ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু সংঘর্ষের এক সপ্তাহ পরেও তাদের পক্ষের কত জন হতাহত হয়েছে, তা সরকারি ভাবে জানায়নি বেজিং। শুধুমাত্র কমান্ডার পদমর্যাদার এক অফিসারের মৃত্যুর কথা স্বীকার করা হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় সেনা সূত্র উদ্ধৃত করে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছে, চিনা বাহিনীর অন্তত ৪৩ জনের মৃ্ত্যু হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলও মনে করছে, হামলা করতে এসে ভারতের চেয়ে লাল ফৌজেরই বেশি ক্ষতি হয়েছে। পাশাপাশি বাণিজ্য, কূটনীতি-সব দিক দিয়েই পিছিয়ে পড়েছে চিনা ড্রাগনরা। এক দিকে চিনা পণ্য বর্জনের ডাক উঠেছে ভারতে, আবার আন্তর্জাতিক মহলেও চাপের মুখে পড়েছে বেজিং।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy