বাঁ দিকে হাসান নাসরাল্লা, ডান দিকে নঈম কাশেম। — ফাইল চিত্র।
হাসান নাসরাল্লা নিহত হলেও ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবে হিজ়বুল্লা। সোমবার এই ঘোষণা করলেন লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীর অন্যতম শীর্ষনেতা নঈম কাশেম। সেই সঙ্গে লেবাননে জুড়ে ইজ়রায়েলের ধারাবাহিক হামলার মধ্যেই প্রথম বার প্রকাশ্যে এসে তিনি বললেন, ‘‘আমরা পদ্ধতি মেনেই নতুন নেতা নির্বাচন করব।’’
রবিবার পশ্চিম এশিয়ার কয়েকটি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, ইজ়রায়েলি হানায় হিজ়বুল্লার শীর্ষ নেতা হাসান নাসরাল্লা নিহত হওয়ার পরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন তুতোভাই হাশেম সাফি আল দিন। কিন্তু এখনও তাঁকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। হিজ়বুল্লার কর্মসমিতির প্রধান হিসাবে হাশেম সংগঠনের তরফে রাজনৈতিক বিষয়গুলি দেখতেন তিনি। গত তিন দশক ধরে শিক্ষা, অর্থনীতি-সহ সংগঠনের অসামরিক কার্যকলাপও দেখাশোনা করেছেন হাশেম।
অন্য দিকে, নাসরাল্লা জমানায় হিজ়বুল্লার উপপ্রধান পদে থাকা কাশেম সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানগুলির পরিকল্পনার পাশাপাশি ধর্মীয় কার্যকলাপগুলি পরিচালনা করতেন। গত ২৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বেইরুটের দক্ষিণে দাহিয়া এলাকায় হিজ়বুল্লার সদর দফতরে ইজ়রায়েলি বিমানহানায় নিহত হন নাসরাল্লা। প্রকাশিত খবরে দাবি, মাটির ১০০ ফুটেরও বেশি গভীরে কংক্রিটের বাঙ্কারে ছিলেন তিনি। কিন্তু ইজ়রায়েলি বায়ুসেনার জোড়া বাঙ্কার বাস্টার বোমা, জিবিইউ-২৮ এবং জিবিইউ-৭২-এর আঘাতে ভেঙে পড়ে সেই ভূগর্ভস্থ বাঙ্কার।
নাসরাল্লার থেকে চার বছরের ছোট হাশেমের বয়স এখন ৬৪ বছর। তাঁদের চেহারাতেও মিল রয়েছে। তরুণ বয়সে একই সঙ্গে দু’জনে হিজ়বুল্লায় যোগ দিয়েছিলেন। দু’জনেই তার পরে ইরানে একসঙ্গে ধর্মশিক্ষা নিতে যান। ১৯৯২-এ আকাশপথে ইজ়রায়েলি হানায় হিজ়বুল্লার শীর্ষ নেতা আব্বাস আল মুসাভি নিহত হওয়ার পরে তাঁর জায়গা নিতে নাসরাল্লাকে লেবাননে নিয়ে আসা হয়েছিল। তার দু’বছর পরে হাশেমকেও বেইরুটে ফিরিয়ে আনা হয় নাসরাল্লার উত্তরসূরি মনোনীত করে।
২০১৭ সালে আমেরিকা হাশেমকে জঙ্গি ঘোষণা করে। একই বছরে সৌদি আরব তাঁকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল। আমেরিকার হামলায় নিহত ইরানের সেনাকর্তা কাশেম সোলেমানির মেয়ের শ্বশুর হওয়ায় সেই দেশের সঙ্গেও ভাল সম্পর্ক রয়েছে হাশেমের। অন্য দিকে, নাসারাল্লার ডেপুটি কাশেম একদা লেবাননে ছাত্র আন্দোলনের নেতা ছিলেন। ১৯৯১ সালে হিজ়বুল্লায় যোগ দিয়েছিলেন তিনি। নাসরাল্লার মৃত্যুর পরে সংগঠনের কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। সোমবার তাঁর বক্তৃতার পরে হিজ়বুল্লার পরবর্তী নেতা নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হল বলে মনে করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy