—ছবি পিটিআই।
দখলে রাখা ভারতীয় ভূখণ্ড গিলগিট-বালটিস্তানকে নতুন প্রদেশের মর্যাদা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত পাকিস্তান সরকার নিয়েছে, তার পিছনে যে দেশের প্রবল প্রতাপশালী সেনাবাহিনী এবং ‘অভিভাবক’ চিন রয়েছে, তা স্পষ্ট। ইতিমধ্যেই পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই এলাকা নিজেদের সংবিধান-সম্মত ভূখণ্ড বলে জানিয়ে সেখানকার চরিত্র বদলের যে কোনও চেষ্টার প্রতিবাদ করেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। তবে তাতে কান না-দিয়েই ইমরান সরকার এগিয়ে চলেছে। সরকারের গিলগিট-বালটিস্তান বিষয়ক মন্ত্রী আলি আহমেদ গন্দাপুর ফের জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই এই অঞ্চল সফর করে সেখানকার রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। নির্বাচনের মাধ্যমে গিলগিট-বালটিস্তানে একটি প্রাদেশিক সরকার প্রতিষ্ঠার কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে সরকার।
তবে এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের পিছনে যে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রয়েছে, তা স্পষ্ট হয়েছে সম্প্রতি দেশের হাতে গোনা কিছু রাজনৈতিক নেতাকে নৈশভোজে ডেকে সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার কিছু পরামর্শ দানে। পাকিস্তানে ইমরান খান সরকার আদতে সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবহ হিসেবে পরিচিত। কিন্তু এই সরকারকে দিয়ে কিছু করালেও সেনাবাহিনী তাদের কৃতিত্ব নিতে ছাড়ে না। এ ক্ষেত্রেও বাহিনীর সদর দফতরে বিভিন্ন দলের নেতাদের ভোজসভায় ডেকে জেনারেল বাজওয়া সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা গিলগিট-বালটিস্তানকে পাকিস্তানের পঞ্চম প্রদেশ হিসেবে দেখতে চান। এর ফলে সেখানে রাজনৈতিক স্থিতাবস্থা আসবে। রাজনৈতিক বিষয়ে সেনাদের ফের প্রকাশ্য হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের কন্যা মরিয়ম নওয়াজ। বিরোধিতা করেছেন আরও কিছু দল। কিন্তু সেনারা নাছোড়।
স্বাধীনতার পরে গিলগিট-বালটিস্তানে দখল কায়েম ইস্তকই সেখানে জনবিন্যাসের পরিবর্তন ঘটানোর কর্মসূচি নিয়ে চলেছে পাকিস্তান। আদি বাসিন্দা জনজাতিদের বাস্তুচ্যুত করে সুন্নি পাখতুনদের সেখানে বসানোর চেষ্টা করে গিয়েছে সব সরকার। এর ফলে এই এলাকায় শিয়া-সুন্নি সংঘাত তীব্র হয়েছে। আদি বাসিন্দারা জমি রক্ষার আন্দোলন চালিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
গিলগিট-বালটিস্তানকে এত দিন সৎ ছেলে হিসেবেই গণ্য করে এসেছে পাকিস্তান। কিন্তু সেনা বাহিনী ও তার বশংবদ সরকার হঠাৎ কেন সেই এলাকাকে প্রদেশের মর্যাদা দিতে উঠে পড়ে লেগেছে? কারণ এই অঞ্চলে বিক্ষোভ-আন্দোলন, রাজনৈতিক অস্থিরতা একেবারেই চাইছে না চিন। পাক অধিকৃত কাশ্মীরের এই এলাকায় বেশ কিছু খনি পরিচালনা করে চিনা সংস্থাগুলি। তার চেয়েও বড় কথা— স্থলপথে দু’দেশের এক মাত্র যোগাযোগকারী কারাকোরাম সড়ক এই এলাকা দিয়েই গিয়েছে। চিন পরিচালিত পাকিস্তানের গদর বন্দর থেকে সড়ক পথে চিনে পণ্য নিয়ে যেতে হবে এই সড়ক দিয়ে। তাই এই আয়োজন। ভারতের প্রতিবাদও গায়ে মাখছে না তাই ইমরান সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy