প্রতীকী ছবি।
কুমিল্লায় অশান্তি ছড়ানোয় প্রধান অভিযুক্ত যুবকের নাম দু’দিন আগেই ঘোষণা করেছিল পুলিশ। তার ছবিও সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে কক্সবাজার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ইকবাল হোসেন নামে বছর ৩২-এর ওই যুবককে। পুলিশ জানিয়েছে, কক্সবাজার সৈকতে ইতস্তত ঘুরে বেড়ানোর সময়ে কাল রাতে তিন পর্যটক তাকে চিহ্নিত করে পুলিশে খবর দেন এর পরে পুলিশ গিয়ে তাকে আটক করে কুমিল্লা পুলিশের কাছে ছবি পাঠায়। পুলিশ সেই ছবি তার মা ও ভাইকে দেখানোর পরে তারা জানায়, এই যুবকই ইকবাল। এর পরে কুমিল্লা থেকে পুলিশ কক্সবাজারে গিয়ে তাকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে।
বুধবারই কুমিল্লার পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ ঘোষণা করেছিলেন, রাতের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তাঁরা মণ্ডপে প্রবেশ করা যুবকটিকে চিহ্নিত করেছেন। তার নাম ইকবাল হোসেন। ইকবালের মা ও ভাইও তাকে চিহ্নিত করে। কিন্তু সে মোবাইল ব্যবহার না করায় ইকবালের গতিবিধির বিষয়ে অন্ধকারে ছিল পুলিশ। আন্দাজে কয়েক জায়গায় তল্লাশি চালিয়েও লাভ না হওয়ায় তার ছবি প্রকাশ করে পুলিশ, যা দেখে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাকে চিনে ফেলে ধরিয়ে দেন পর্যটক তিন যুবক। পুলিশের দাবি, মাদকাসক্তির ফলে ইকবালের মস্তিষ্ক বিকৃতি হয়েছে। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্ত অবশ্য দাবি করেছেন, এটা কোনও মাদকাসক্তের কাজ নয়। হতে পারে পরিকল্পনাকারীরা তাকে ব্যবহার করেছে।
বাংলাদেশের পুজা উদ্যাপন পরিষদও কুমিল্লার ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে আঙুল তুলেছে। তাদের বক্তব্য, সে দিন রাতে রহস্যময় ভাবে এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যায়। তার পরেই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ কয়েক জনকে মণ্ডপের ভিডিয়ো তুলতে দেয়। পরে সেই ভিডিয়োই দেশ জুড়ে উত্তেজনা ছড়ায়। পরিষদের দাবি, পুলিশের এই আচরণের কোনও ব্যাখ্যা নেই। এমন একটি সুপরিকল্পিত চক্রান্তের খবর কেন পুলিশ ও গোয়েন্দারা জানত না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরও। এ দিন ঢাকায় সম্প্রীতি সমাবেশ করে জাতীয় পার্টি। দলের কো-চেয়ারম্যান ঢাকার সাংসদ আবু হোসেন বাবলা বলেন, “হাজার বছর ধরে এই বাংলায় সব ধর্মের মানুষ পাশাপাশি থেকেছে। সেই সম্প্রীতি নষ্ট করার চক্রান্ত সবাই মিলে ঠেকাতে হবে।” সাম্প্রতিক অশান্তির আগে-পরে পুলিশ ও গোয়েন্দাদের নিষ্ক্রিয়তার কারণ খুঁজে বের করার দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৪৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। এঁদের মধ্যে অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল ও রাশেদা কে চৌধুরী, আইনজীবী আমির-উল ইসলাম, এম হাফিজউদ্দিন খান ও আকবর আলি খানের মতো ব্যক্তিরা রয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক অশান্তি স্বাধীনতার পরিপন্থী। চট্টগ্রামে তদন্তের পরে হামলার ছবি ও ভিডিয়ো থেকে শনাক্ত করে ১০ জনকে পুলিশ আজ গ্রেফতার করে। বয়স কম হওয়ায় তিন জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বাকি ৭ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এরা একটি সংগঠনের সদস্য।
এ দিন শাহবাগে বিক্ষোভ দেখায় বেশ কয়েকটি সামাজিক ও ধর্মীয় সংগঠন। সেখানেও সাম্প্রতিক অশান্তির পরিকল্পনাকারী ও দুর্বৃত্তদের শাস্তির দাবি জানানো হয়। শনিবার দেশ জুড়ে সকাল-সন্ধে অবস্থান বিক্ষোভ ও অনশনের ডাক দিয়েছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। বেশ কিছু রাজনৈতিক দল ও সংগঠন এই আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy