ব্রুক শিল্ডস। ছবি: সংগৃহীত।
অল্প বয়স। সদ্য কলেজ পাশ করেছেন তিনি। হলিউডে কাজও করছেন। তাঁর অভিনীত ‘প্রিটি বেবি’ বা বিজ্ঞাপনী ছবি হইচই ফেলে দিয়েছে বহু আগেই। খ্যাতি চুড়োয় বসে থাকা হলিউড অভিনেত্রী এ সময়ে তাঁর পরিচিত এক ব্যক্তির হাতে ধর্ষিত হন। বহু বছর আগের সেই রাতের কথা এত দিন গোপন রেখেছিলেন তিনি। সম্প্রতি তাঁকে নিয়ে তৈরি হওয়া এক তথ্যচিত্রে ঘটনার কথা প্রকাশ করলেন ব্রুক শিল্ডস।
তথ্যচিত্রটির নাম ‘প্রিটি বেবি: ব্রুক শিল্ডস’। শুক্রবার সানডান্স চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার হয়েছে ছবির। সেই ধর্ষকের নাম প্রকাশ করেননি প্রাক্তন সুপারমডেল ব্রুক। তবে জানিয়েছেন, তিনি লোকটিকে চিনতেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ভেবেছিলেন, নতুন ছবিতে তাঁকে নেওয়ার কথা ভাবছেন এবং সেই সংক্রান্ত কাজ নিয়েই মুখোমুখি বসে কথা বলবেন। ব্রুককে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর হোটেলে যান। বলেছিলেন, কাজ হয়ে গেলে ব্রুকের জন্য ট্যাক্সি ডেকে দেবেন। কিন্তু হোটেলের রুমে গিয়ে তিনি বাথরুমে ঢুকে যান। তার পর নগ্ন হয়ে এসে অত্যাচার শুরু করেন।
ব্রুক শিল্ডস এখন ৫৭-র প্রৌঢ়া। বহু বছর আগের সে দিনের সেই কথা বলতে গিয়ে বলেন, ‘‘ভয় লাগছিল আমি শ্বাসরোধ হয়েই মরে যাব।’’ আরও বলেন, ‘‘আমি লড়তে পারিনি ওর সঙ্গে। আমি লড়িনি। আমি ভয়ে আড়ষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আমার একটা ‘না’-ই যথেষ্ট হবে। তার পর মনে হয়েছিল, আমাকে বেঁচে থাকতে হবে। কোনও মতে ওখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’’
ওই ঘটনার পরে ব্রুক তাঁর বন্ধু ও নিরাপত্তা রক্ষী গেভিন ডি বেকার-কে ফোন করে সবটা জানিয়েছিলেন। তিনিই প্রথম বলেছিলেন, ‘‘এটা ধর্ষণ।’’ অভিনেত্রী জানান, সে সময়ে তিনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না, তাঁর সঙ্গে এটা হয়েছে। এই তথ্যচিত্রের আগে পর্যন্ত ব্রুক কোনও দিন জনসমক্ষে আনেননি এই ঘটনার কথা।
সাম্প্রতিক কালে ‘#মিটু’ আন্দোলনের প্রতিধ্বনি শুনতে পাওয়া গিয়েছে গোটা বিশ্বে। কর্মক্ষেত্রে যৌন হেনস্থার কথা প্রকাশ করেছেন হাজারো মহিলা। বাদ পড়েনি হলিউডও। ব্রুক শিল্ডসের জীবন-কাহিনি একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পাবে শীঘ্রই। সেখানে এ বারে সরব ‘ব্লু লেগুন’-এর অভিনেত্রী।
ব্রুকের জীবন চিরকালই বহুচর্চিত ও বহু-বিতর্কিত। আশির দশকে তাঁর সাহসী অভিনয়, নুড মডেলিং হইচই ফেলে দিয়েছিল। খুব অল্প বয়সে অভিনয় ও মডেলিং শুরু করেছিলেন ব্রুক। মাত্র ১০ বছর বয়সে তাঁর নুড ফোটোশুট চমকে দিয়েছিল দুনিয়াকে। ১১ বছর বয়সে অভিনয় করেছিলেন ‘প্রিটি বেবি’ ছবিতে। তাতে তিনি ছিলেন এক শিশু-যৌনকর্মীর ভূমিকায়। কিশোরী ব্রুকের সাক্ষাৎকারগুলি পর্যন্ত ছিলযৌনতায় ভরা। তাঁর থেকে বয়সে বহু বড় পুরুষ সঞ্চালক কোনও দ্বিধা না রেখে প্রশ্ন করে গিয়েছেন ‘ব্লু লেগুন’ কিংবা ‘এন্ডলেস লাভ’ ছবির চরিত্র নিয়ে। জবাব দিতে হয়েছে ব্রুককে।
এক বার স্কিনটাইট জিন্সের বিজ্ঞাপন নিয়ে হইচই পড়ে যায়। তাতে উন্মুক্ত পোশাকে ব্রুকের সংলাপ ছিল, ‘‘ডু ইউ নো হোয়াট কামস বিটউইন মি অ্যান্ড মাই কেলভিনস? নাথিং।’’ বিজ্ঞাপনটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।
কিশোর বয়সে এত খ্যাতি পাওয়ার পরে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকস্তরের পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন ব্রুক। গ্র্যাজুয়েশনের পরে ছবিতে আর কাজ পাচ্ছিলেন না। সেই সময়ে ওই ধর্ষকের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছিল তাঁর।
সানডান্স চলচ্চিত্র উৎসবে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে তথ্যচিত্রটি। তাতে দেখা গিয়েছে ব্রুককে ঘিরে মিডিয়ার উন্মাদনা, তাঁর মায়ের মদে আসক্তি, টেনিস তারকা আন্দ্রে আগাসির সঙ্গে বিয়ে। ব্রুক বলেন, ‘‘এই ইন্ডাস্ট্রি তোমাকে থামিয়ে দিতে চাইবে। কিন্তু আমি কোনও দিন ফুরোতে চাইনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy